এমন লড়াইয়ের কথা কল্পনা করেননি তারা!
এমন লড়াইয়ের কথা কল্পনা করেননি তারা! - ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন নির্বাচনের রাতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যেমনটা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, ফলাফলে তারই আভাস পাওয়া যাচ্ছে৷ অর্থাৎ বুধবার পর্যন্ত বলার উপায় নেই যে চূড়ান্তভাবে কে জয়ী হচ্ছেন৷ পেনসিলভেনিয়াসহ তিনটি রাজ্যের ফলাফল এখনও কোন দিকে যাবে নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই৷ ফলে অপেক্ষা দীর্ঘ হতে পারে৷ তবে দুই প্রার্থী তাদের সমর্থকদের ইতিবাচক আশ্বাস দিয়েছেন৷ জো বাইডেন বুধবার সকালে তার হোম টাউন ডেলাওয়ারে সমর্খদের উদ্দেশে কথা বলেন৷ সেখানে তিনি বলেন, প্রত্যেকটা ভোট গণনা হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় আছেন এবং এজন্য হয়ত অপেক্ষাটা দীর্ঘ হতে পারে৷
ফলাফল গণনা দীর্ঘ হওয়ার কারণ হলো৷ তিন পদ্ধতিতে ভোট নেয়া হয়েছে : ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দান, নির্বাচনের আগেই ভোট দেয়া এবং মেইলের মাধ্যমে ভোট৷ পুরো প্রক্রিয়াটি গণতান্ত্রিক৷ অথচ ডোনাল্ড ট্রাম্প এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে বলেছেন ‘ভোট জালিয়াতি’ হয়েছে৷ কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই বুধবার সকালে এ নিয়ে টুইট করেছেন তিনি৷ যদিও তার এই অবস্থানে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই৷
বুধবার সকালে দেয়া তার বক্তব্যে ট্রাম্প পেনসিলভেনিয়াসহ এমন সব রাজ্যে নিজের বিজয় ঘোষণা করেন, যেগুলোর সব ভোট গণনা হওয়া এখনো বাকি৷
যেসব ভোট এখনও গণনা বাকি, তার মধ্যে বেশিরভাগই পোস্টাল ভোট৷ বিশ্লেষকদের মতে, পোস্টাল ভোট বেশি দিয়েছেন ডেমোক্র্যাট সমর্থকরা৷ আর এ কারণেই ট্রাম্প চান না এই ভোটগুলো গণনা হোক৷ এ কারণেই ভোট গণনার প্রক্রিয়াকে জালিয়াতি বলে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প৷ এমনকি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা কিন্তু জো বাইডেনের জয়ের ব্যাপারে একেবারে নিশ্চিত৷ তবে এটা ঠিক এতটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এটা কল্পনাও করেননি তারা৷
ট্রাম্প এমন একজন প্রেসিডেন্ট যিনি মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিতে চান, যিনি অভিবাসী শিশুদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে আলাদা করতে চান, যিনি মার্কিন মহিলা কংগ্রেস সদস্যের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষী কথা বলেন, যিনি অভিশংসনের মুখোমুখি হয়েছেন, যার কারণে করোনায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে... তালিকাটা আরও দীর্ঘ৷ তবে দুঃখের বিষয় হলো এরপরও অনেক আমেরিকান ট্রাম্পকেই ভোট দিয়েছে৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে
বিদেশি হস্তক্ষেপের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সাইবার বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন যে ভোট গণনায় বিদেশি কোনো পক্ষ হস্তক্ষেপ করেছে, এমন কোনো প্রমাণ সরকারের কাছে নেই।
এক বিবৃতিতে ক্রিস্টোফার ক্রেবস তুলে ধরেন যে ‘কোনো বিদেশি পক্ষ আমেরিকানদের ভোট দেয়া থেকে বিরত রাখতে পেরেছে অথবা ভোটের গণনায় পরিবর্তন করতে পেরেছে, এমন কোনো প্রমাণ নেই।’
২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের বিপক্ষে নির্বাচনের ফল প্রভাবিত করার চেষ্টার পেছনে রাশিয়ার ভূমিকা ছিল বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
মি ক্রেবস বলেছেন, “ভোট গণনার প্রক্রিয়া চলাকালীন বা চূড়ান্ত ফলাফল আসার আগে বিদেশি কোনো পক্ষ যেন প্রভাব খাটাতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে নজরদারি অব্যাহত রাখবো আমরা।"
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শিবির এখন পর্যন্ত কারচুপির অভিযোগ করার পাশাপাশি একাধিক রাজ্যে ভোট গণনার ক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপ নিলেও এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
সূত্র : বিবিসি