পরাশক্তির ভরাডুবিতে মজা পাচ্ছে রাশিয়া!
পরাশক্তির ভরাডুবিতে মজা পাচ্ছে রাশিয়া! - ছবি সংগৃহীত
আমেরিকার নির্বাচনের ঘটনাবলীর উপর গভীরভাবে নজর রেখেছে রাশিয়ার গণমাধ্যম আর রাজনীতিবিদরা।
“পরাশক্তির ভরাডুবির এ দৃশ্য দেখাটা মোহনীয়!” মার্কিন নির্বাচন নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার এক সংসদ সদস্য।
রাশিয়ার ক্ষমতাসীন কিছু ব্যক্তি মনে করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, মামলা-মোকদ্দমা আর সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী বিশৃঙ্খলা থেকে লাভবান হতে পারে মস্কো। ভূ-রাজনীতিকে তারা শূন্য-ফলাফলের একটি খেলা মনে করেন যাতে প্রতিপক্ষ দুর্বল মানে হচ্ছে অন্যপক্ষ শক্তিশালী। তারা হিসাব করে, যুক্তরাষ্ট্রে ঐক্যবদ্ধ না থাকলে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে তারা বরং নিজেদের সমস্যা নিয়েই ব্যস্ত থাকবে।
তবে রাশিয়ার সবাই এ চিন্তা করে না। রাশিয়ার রাজনৈতিক ও কুটনৈতিক অঙ্গনে এমন অনেকে রয়েছেন, যারা মনে করে, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল আমেরিকার কাছ থেকে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। আর একজন দৃঢ় মার্কিন প্রেসিডেন্টই রাশিয়া ও মার্কিন সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে পারেন।
বিভ্রান্তিকর ফলাফল
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের লাইভ কাভারেজে প্রার্থীদের আসন পাওয়ার হিসাব যদি আপনি দেখে থাকেন তাহলে কিছুটা বিভ্রান্তই হবেন।
কারণ অনেক সংবাদ মাধ্যম ধরেই নিয়েছে যে অ্যারিজোনা(যেখানে অতিরিক্ত ১১টি ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট রয়েছে) এবং উইসকনসিনে(১০টি ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট রয়েছে) বাইডেনই জয় পাবেন।
বিবিসি মনে করে এই অনুমাণ ধরে নিয়ে হিসাব করলে তা কিছুটা অগ্রিম হয়ে যায়।
এ বছর তথ্য নেয়ার ক্ষেত্রে বিবিসি রয়টার্স, নির্বাচনী প্রতিষ্ঠান এডিসন রিসার্চ- যারা জনমত জরিপের তথ্য সংগ্রহে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কিছু নেটওয়ার্ক- যারা জাতীয় নির্বাচনী জরিপ নিয়ে কাজ করে, তাদের সহায়তা নিয়েছে।
উইসকনসিনে ৯৯% ভোট গণনা শেষেও দুই প্রার্থীই হাড্ডাহাড্ডি অবস্থানে রয়েছে।
অ্যারিজোনায় ৮৫% ভোট গণনা শেষ এবং সেখানে বাইডেন ৫১% ভোটে এগিয়ে রয়েছেন আর ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৮% ভোট।
এবারের নির্বাচনের মূল শব্দ মনে হচ্ছে 'ধৈর্য'। আপনি আমাদের সাথেই থাকুন এবং যেকোন আপডেট আসার সাথে সাথে আমরা আপনাকে জানাবো।
“স্থায়ী কালির মার্কার” বিতর্ক
“স্থায়ী কালির মার্কার” বা শার্পি ব্যবহার করে দেয়া ভোট বাতিল করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ ছিল তা ঠিক নয় উল্লেখ করে এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে অ্যারিজোনা রাজ্য কর্তৃপক্ষ।
স্থায়ী মার্কার বা শার্পি ব্যবহার করার এই প্রক্রিয়াকে উল্লেখ করা হয়েছে শার্পিগেট বলে।
টুইটারে এক পোস্টে রাজ্যের শীর্ষ নির্বাচনী কর্মকর্তা, সেক্রেটারি অব স্টেট কেটি হবস বলেন, শার্পি ব্যবহার করে দেয়া ভোট অবৈধ বলে ধরা হবে না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু পোস্টে অভিযোগ ছিল যে, অ্যারিজোনায় রিপাবলিকান ভোটারদের ভোট দেয়ার জন্য শার্পি দেয়া হয়েছিল যাতে ব্যালট “পড়ার অযোগ্য” হয়।
“নির্বাচনের কর্মীরা ভোটারদের কাছ থেকে কলম নিয়ে তার পরিবর্তে শার্পি ব্যবহার করতে বলেছিল। যেসব ভোট শার্পি দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছিল সেগুলো আর পড়া যাবে না,” ফেসবুকের এক পোস্টে বলা হয়।
ডেমোক্র্যাটরা বলছে, “শার্পিগেট” নামে পরিচিতি পাওয়া এই অভিযোগকে একটা ভুল তথ্যের প্রচারণার অংশ, যা জো বাইডেনের এগিয়ে থাকাকে ছোট করে দেখানোর জন্য করা হচ্ছে।
অ্যারিজোনায় ৮৫% ভোট গণনা করা হয়েছে যার মধ্যে ৭৯ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। শুধু ১৯৯৬ সাল ছাড়া ১৯৫২ সাল থেকে প্রতিবারই এই রাজ্যে জয় পেয়ে আসছে রিপাবলিকানরা।
সূত্র : বিবিসি