ভারতের টি-৭২ ট্যাঙ্ক সহজেই ধ্বংস করে দেবে চীনের চীনের ‘কামিকাজ ড্রোন’
ভারতের টি-৭২ ট্যাঙ্ক সহজেই ধ্বংস করে দেবে চীনের চীনের ‘কামিকাজ ড্রোন’ - ছবি সংগৃহীত
পূর্ব লাদাখের পার্বত্য ভূমিতে শীত জাঁকিয়ে নামতে শুরু করেছে। আর সেখানে সম্ভাব্য যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছে দুই প্রতিবেশী দেশ চীন ও ভারতের সেনারা। পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) হামলা প্রতিরোধের জন্য সেখানকার অনেক এলাকায় প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরি করেছে নয়াদিল্লী।
এখন পর্যন্ত যে অবস্থা তাতে, ভারতের আক্রমণ অভিযানের প্রথম সারিতে থাকছে ফ্রান্স থেকে সদ্য সংগ্রহ করা রাফাল জেট আর টি-৯০ বিশ্বমা ট্যাঙ্ক ও টি-৭২ ট্যাঙ্ক। এসব ট্যাঙ্ক অনেক দিন ধরেই ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার হৃৎপিণ্ড হিসেবে কাজ করছে।
লাদাখের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিপুল সংখ্যক ট্যাংক ও বিপিএম-২ পতাদিক সাঁজোয়া যান মোতায়েন করেছে ভারত। আর যুদ্ধ বেধে গেলে এসব ট্যাংক ও যান গুড়িয়ে দিয়ে ভারতের দিকে এগিয়ে আসার নিশ্চিত পরিকল্পনাও রয়েছে চীনের।
সম্প্রতি চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয় যে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং পিএলএ-কে নতুন ড্রোন ও নতুন পদাতিক ল্যান্সার পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছেন। এসব ল্যান্সার ভারতের সঙ্গে সীমান্তে ট্যাঙ্ক ও বাঙ্কার ধ্বংসের কাজে ব্যবহার করা হবে।
এমন সম্ভাবনা খুবই প্রবল যে চীনের সমরবিদরা ভারতের টি-৭২ ট্যাঙ্কগুলোকে দুর্বল জায়গা বিবেচনা করতে পারেন। এগুলোকে ধ্বংস করার জন্য এমএএম-এল ড্রোন ব্যবহার করতে পারেন তারা।
তুরস্কের অস্ত্র নির্মাতা ও প্রতিরক্ষা কোম্পানি রকেটসান এই এমএএম-এল ড্রোন তৈরি করেছে। সম্প্রতি এসব ড্রোন টি-৭২ ট্যাংক ধ্বংসের ক্ষেত্রে চমৎকার পারদর্শিতা দেখায়।
স্মার্ট মাইক্রো মিউনিশন এমএএম-এল ড্রোন এবং সেই সঙ্গে প্রাণঘাতি বেরাকতার টিবি২ ড্রোনগুলো ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান, পদাতিক ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কামান, গোলাবারুদের ডিপো ও লজিস্টিক উপাদান ধ্বংসের ক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা দেখায়।
তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়, এমএএম-এল ড্রোনগুলো টি-৭২-এর মতো ১০০টির বেশি মেইন ব্যাটল ট্যাঙ্ক (এমবিটি) ধ্বংস করেছে।
এতে বলা হয়, রকেটসানের এমএএম-এল সিরিয়া, লিবিয়া ও কারাবাখে ১০০-এর বেশি এমবিটি ধ্বংস করেছে। এমএএম-এল এর ধ্বংস করা শততম ট্যাঙ্কটি ছিলো আর্মেনিয়ান সেনাবাহিনীর একটি টি-৭২ এমবিটি। এমএএম-এল যে শতাধিক ট্যাঙ্ক ঘায়েল করে তার ৭০টিই আর্মেনিয়ান সেনাবাহিনীর।
এমএএম (মিনি আকিলি মুহিমাত) হলো একটি লেজার-গাইডেড স্মার্ট মিউনিশন সিস্টেম। এগুলো ড্রোন, লাইট অ্যাটাক এয়ারক্রাফট ও এয়ার-গ্রাউন্ড মিশনে ব্যবহারের জন্য তৈরি তৈরি করা হয়েছে। স্থির ও চলমান উভয় টার্গেটে অত্যন্ত নিখুঁত আঘাত হানতে পারে এগুলো।
তুরস্কের সঙ্গে চীনের কোন সামরিক চুক্তি নেই। তবে সামরিক বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাস্টার চীন এরই মধ্যে তার ড্রোনগুলোকে এমএএমের মতো ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী গোলায় সজ্জিত করেছে।
ইসরাইল, তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি নিজস্ব ড্রোন তৈরিতে ব্যাপকভাবে এগিয়ে থাকা চীনের এ ধরনের অস্ত্র তৈরির জন্য যথেষ্ট জনবল ও সম্পদ রয়েছে।
ভিয়েতনামের ওয়েবসাইট সোহা জানায় যে, ভারতের অধিকারে থাকা ট্যাঙ্কগুলো ঘায়েল করতে অপেক্ষার প্রহর গুনছে এমএএম-এল।
এতে বলা হয়, ছোট কাঠামোর বিরুদ্ধে ৫০০ মিটার থেকে ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরতে এমএএম-এল খুবই কার্যকর। এর স্থানচ্যুতির সম্ভাবনা ১ মিটারেরও কম।
রকেটসান এমএএম-এল-এর যে প্যারামিটার প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, এই মিসাইলের পেনিট্রেশন ক্ষমতা ৭০০ মিলিমিটার আরএইচএ (ইউনিফর্ম স্টিল আর্মার)। টি-৭২-এর বিভিন্ন ভেরিয়েন্ট ট্যাঙ্কের বর্ম ৪৫০ থেকে ৫৬০ মিলিমিটার আরএইচএ।
আর সে কারণেই সিরিয়া ও নাগোর্নো কারাবাখের যুদ্ধে টি-৭২ ট্যাঙ্কগুলো কোনো পাত্তাই পায়নি।
সূত্র : ইউরেশিয়ান টাইমস