ভারত-জাপান-অস্ট্রেলিয়া-যুক্তরাষ্ট্র মহড়া : কী করবে চীন
ভারত-জাপান-অস্ট্রেলিয়া-যুক্তরাষ্ট্র মহড়া : কী করবে চীন! - ছবি : সংগৃহীত
চলতি বছরের মালাবার মহড়া শুরু হয়েছে মঙ্গলবার। চীন-ভারত সীমান্ত যুদ্ধ ছয় মাস ধরে অব্যাহত থাকা এবং মার্কিন নির্বাচনের মধ্যেই এই মহড়া শুরু হয়।
মহড়াটি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান যৌথভাবে করলেও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চীনকে কোণঠাসা করার এমন অসৎ উদ্দেশ্যপূর্ণ চেষ্টা আসলে ফাঁকা হুমকি। তাদের মতে, ভারতের অযৌক্তিক কর্মকাণ্ড বা যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে চীন তার অবস্থান থেকে সরবে না।
ভারতীয় নৌবাহিনীর আয়োজনে মালাবার মহড়া শুরু হয়েছে ১৯৯২ সালে। ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে যে কোয়াডভুক্ত জাপান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্টের অংশগ্রহণে চলতি বছরের মহড়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে ইন্দো-প্যাসিফিকে চীনা উপস্থিতি খর্ব করা।
ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়, মহড়ায় ভারতীয় রণতরীগুলোর সাথে মার্কিন নৌবাহিনী গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রোয়ার ইউএসএস জন এস ম্যাককেইন, অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীর দূরপাল্লার ফ্রিগেট এইচএমএএস বালারাট, জাপান সমুদ্র প্রতিরক্ষা বাহিনীর ডেস্ট্রোয়ার জেএস ওমানি অংশ নিচ্ছে।
ভারতের অনেক বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন, মালাবার মহড়া ২০২০ মনে হচ্ছে মামুল ধরনের মনে হচ্ছে। তারা চার দেশের আগের মহড়াগুলোতে যেসব অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করেছে, সেগুলো বিশ্লেষণ করে এমন মন্তব্য করেছেন।
ইনস্টিটিউট রিলেশন্স অব দি সাংহাই একাডেমি অব সোস্যাল সায়েন্সেসের রিসার্চ ফেলো হু ঝিইয়ং গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার অংশগ্রহণের ফলে চলতি বছরের মালাবার মহড়া গত বছরের চেয়ে বেড়েছে। কিন্তু একটি মামুলি সামরিক মহড়ায় ভীত হবে না চীন।
হু বলেন, চীন ও ভারতের মধ্যকার সামরিক সক্ষমতার মধ্যে ব্যবধান অনেক। জাপানি নেতার জন্য চীনকে আরো বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ও বৃহত্তর বাজারের জন্য অনুরোধ করা কঠিন নয়।
নতুন জাপানি প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদি সুগা সেপ্টেম্বরে বলেছেন, তিনি আশা করছেন, চীনের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে স্থিতিশীল সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন।
বাস্তবতা হলো, অস্ট্রেলিয়াকে ভারতের আমন্ত্রণ জানানোর অর্থ হলো, চীনের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উল্লেখ্য, হুওয়া, হংকং ও কোভিড-১৯ মহামারির মতো ইস্যুগুলোতে অস্ট্রেলিয়া পক্ষ নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের। অনেক অস্ট্রেলিয়ান বিশেষজ্ঞ বলছেন, চীন-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্ক ১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর এখনই সর্বনিম্ন অবস্থায় রয়েছে।
বিপর্যয়কর মহামারি ও অর্থনীতির মুখে মোদি সরকারের চীনকে টার্গেট করে শক্তি প্রদর্শনের আকাঙ্ক্ষা হলো প্রো-অ্যাক্টিভ এবং ৮ম রাউরেন্ডর কমান্ডার পর্যায়ের আলোচনায় কঠোর অবস্থান দেখানো।
হু বলেন, কোয়াড দেশগুলোকে নিয়ে নৌমহড়া আয়োজন করা মোদি সরকারের জন্য অবিক্ষণ ও অযৌক্তিক কাজ হয়েছে। তিনি বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেইওর সাম্প্রতিক চীনবিরোধী এশিয়া সফরেরও দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল জনপ্রিয় নয়।
অনেক ভারতীয় চীনের উন্নয়ন সম্ভাবনা (এবং এতে ভারতের স্বার্থ) এবং চীন-ভারত ভবিষ্যত সম্পর্ক উপেক্ষা করছেন। এতে ক্ষতি হচ্ছে ভারতের।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং উয়েনবিন মঙ্গলবারের প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, চীনা আশা করে সামরিক মহাড়া বিরোধিতার চেয়ে বরং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।
সূত্র : গ্লোবাল টাইমস