হিক্কা বন্ধের সহজ উপায়
হিক্কা বন্ধের সহজ উপায় - ছবি সংগৃহীত
তাড়াতাড়ি খাওয়ার সময় পেটের মধ্যে কিছু বাতাস চলে গেলে হিক্কা হতে পারে। অতিরিক্ত মসলা বা চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে এটা হতে পারে। অনেক বেশি কোমল পানীয় খেলে পেটে গ্যাস হয়ে এটা হতে পারে। ভয় বা উত্তেজনার সময় এ রকম হতে পারে। তখন ফ্রেনিক নার্ভ উত্তেজিত হয়ে ডায়াফ্রাম সঙ্কুচিত হতে পারে। এ ছাড়া কিছু কিছু রোগের কারণেও এটা হতে পারে। যেমন : স্ট্রোক, ব্রেন টিউমার, কিডনি ফেইলিউর, লিভারের রোগ, নিউমোনিয়া ইত্যাদি কারণে হতে পারে। এ ছাড়া কারো কারো ক্ষেত্রে কিছু ঘুমের ওষুধ খেলে এই সমস্যা হতে পারে। আবার কিছু কিছু বমির ওষুধ খাওয়ার পর এই সমস্যা হতে পারে।
হিক্কা বিরক্তিকর হলেও এটা মারাত্মক কোনো সমস্যা নয়। কোনোভাবে যদি শরীরে কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ানো যায় তাহলে মুক্তি মিলতে পারে। এ জন্য কিছুক্ষণ শ্বাস বন্ধ করে রাখতে পারেন। অথবা একটি ছিদ্রহীন ঠোঙ্গা বা কাগজের ব্যাগে মুখ আটকে দম ছাড়ুন। আবার ওটা থেকে দম নিন। খেয়াল রাখতে হবে ঠোঙ্গার ভেতর যেন বাইরের বাতাস না ঢুকে।
এ ছাড়া বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করেও থামানো যায় হিক্কা। যেমন : এক গ্লাস বরফকুচি ঠাণ্ডা পানি খেতে পারেন। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিও খেতে পারেন। তবে ঠাণ্ডা পানি এ ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে। জিহ্বা সামনের দিকে টেনে ধরে রাখতে পারেন। আমরা স্বাভাবিকভাবে কোনো হিক্কা ওঠা ব্যক্তিকে অন্যমনস্ক বা ঘাবড়ানোর জন্য ভয় দেখাই। এতেও কিন্তু বন্ধ হতে পারে হিক্কা। এ ছাড়া জিহ্বার নিচে আধা চা চামচ চিনি দিয়ে রাখতে পারেন। যতক্ষণ পর্যন্ত চিনি না গলে ততক্ষণ পর্যন্ত রাখতে হবে। এভাবে কয়েকবার দিতে পারেন। আঙুল দিয়ে জিহ্বার পেছনে শক্ত তালুতে হালকা স্পর্শ করতে হবে। হালকা স্পর্শ করলে এটা কমে যাবে।
যদি হিক্কা এরপরও না কমে তবে ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হতে পারে। ক্লোরপ্রমাজিন, বেকলোফেন, হ্যালোপেরিডল, মেটাক্লোরাপ্রোমাইড ইত্যাদি ওষুধ চিকিৎসকরা দিয়ে থাকেন। এরপরও হিক্কা বন্ধ না হলে বা যদি ৩ ঘণ্টার ভেতর না কমে অথবা এর সাথে বমি, রক্ত বমি, জ্বর, পেটব্যথা এ ধরনের সমস্যা হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এ ছাড়া কিডনির রোগীর যদি এ ধরনের সমস্যা হয়, হেঁচকির সাথে শ্বাসকষ্ট থাকে, তবে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
চোখ থাকুক চোখের আলোয়
ডা: সুরাইয়া সেহেলী
খাবার হোক দৃষ্টিবান্ধব : চোখের কাজ সুচারুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন চোখের পুষ্টি। ভিটামিন এ, সি ও ই এবং কপার ও জিঙ্ক চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। রোদের আলট্রাভায়োলেট রশ্মি চোখের সবচেয়ে সংবেদনশীল মেকুলাকে বয়স বাড়ার সাথে সাথে ধ্বংস করে। তাই বৃদ্ধ বয়সে চোখের জ্যোতি কমে যায়। মেকুলার ধ্বংস প্রতিরোধ করে এন্টি-অক্সিডেন্ট। সবুজ শাকসবজি, কুমড়া, গাজর, মিষ্টিআলু, ডিমের কুসুমে প্রচুর এন্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। বয়স হলেই চোখে ছানি পড়ে। ছানিপড়া রোধ করে সালফার, সিস্টিন ও লেসিথিন সমৃদ্ধ খাবার। এগুলো পাবেন রসুন-পেঁয়াজে। জাম, আঙ্গুর, ছোট মাছ ও কড মাছ চোখের জন্য উপকারী। প্রচুর পানি পান করুন।
প্রতিদিন চোখের ব্যায়াম : প্রতিদিন সকালে, ঘুমানোর আগে বা চোখ অবসাদগ্রস্ত হলে চোখের ব্যায়াম করুন। যারা একটানা চোখ ব্যবহার করেন যেমন কম্পিউটারে লেখা, ছবি আঁকা, বেশি সময় ধরে পড়া তারা ব্যায়াম বাদ দেবেন না। প্রথমে হাত ভালো করে ধুয়ে নিন। দুই হাতের তালু ঘষে তাপ উৎপন্ন হলে চোখে ৫ সেকেন্ডের জন্য গরম তালু লাগান। এভাবে ৫-১০ বার। চোখ ঘড়ির কাঁটার দিকে ১০ বার ঘোরান। এবার ঘোরান ঘড়ির কাঁটার উল্টো দিকে। হাত দূরত্বে কলম নিয়ে এর মাথায় তাকান। ধীরে ধীরে কলমটি ২৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে নিয়ে আসুন। আবার দূরে নিয়ে যান। এভাবে ১০-১৫ বার। একটানা কম্পিউটারের স্ক্রিনে না তাকিয়ে আধা ঘণ্টা পর ৩০ সেকেন্ডের জন্য অন্য দিকে তাকিয়ে থাকুন। মিনিট তিনেকের জন্য চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিন।
চোখের জন্য ক্ষতিকর কাজ বাদ দিন : অনেকক্ষণ ধরে চোখ ডললে, ফ্লুরোসেন্ট বাতিতে তাকালে, বেশিক্ষণ কম্পিউটার স্ক্রিনে কাজ করলে, কম আলোতে পড়লে চোখের ওপর চাপ পড়ে। হ্রাস পায় দৃষ্টিশক্তি। এ অভ্যাসগুলো যতটা পারা যায় পরিহার করুন। ধূমপান করলে চোখের প্রেসার বাড়ে। ধূমপান একেবারে বাদ দিন। অন্য কেউ ধূমপান করলে সরে আসুন। রোদের আলট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা পেতে রোদে গেলে সানগ্লাস ব্যবহার করুন।
বিশ্রাম দিন চোখকে : ঘুমের সময় চোখ পুরোপুরি বিশ্রাম পায়। এ সময় চোখ ক্ষতি হাত থেকে রক্ষা পেতে কাজ করে। রাতে আট ঘণ্টা ঘুমান। দিনের বেলা কমপক্ষে এক ঘণ্টা চোখকে বিশ্রাম দিন। প্রতি ৫০ মিনিট কাজ করার পর চোখকে ১০ মিনিট বিশ্রাম দিন। চোখ বেশি ক্লান্ত হলে বিছানায় শুয়ে মিনিট দশেকের জন্য চোখ বুজে থাকুন।