যে কারণে ফরাসি নেতারা ইসলামের বিরোধিতা করছেন
ফরাসি প্রেসিডেন্ট - ছবি সংগৃহীত
ফ্রান্সের ব্যঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন ‘শার্লি এবদো’ দীর্ঘদিন যাবত বিশ্বের প্রতিটি মুসলমানের কলিজার টুকরাসম ব্যক্তিত্ব মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:কে নিয়ে উসকানিমূলক ছবি প্রকাশ করে আসছে। এর মধ্যে গত বেশ কয়েকদিন ধরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ইসলাম ধর্মকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করছেন এবং ফ্রান্সের মুসলিম সমাজ সম্পর্কে মারমুখী হয়ে উঠছে। এমন সময় প্যারিস থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরের এক উপশহরে একজন মাধ্যমিক স্কুলশিক্ষক শ্রেণীকক্ষে মহানবী সা:কে ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করার পরিপ্রেক্ষিতে একজন মুসলমান কিশোর কর্তৃক নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ মুসলমানদের ঘায়েল করার এক ‘মহা অস্ত্র’ হাতে পেয়ে যান। ক্ষ্যাপাটে প্রেসিডেন্ট এখন সাধারণ মুসলমানদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বর্ণবাদী পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন এবং বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলমানের ধর্ম ‘ইসলাম’কে তার প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন। বিশ্লেষকদের মতে, তিনি তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার সুযোগ হিসেবে পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে চাচ্ছেন।
‘আধুনিক সন্ত্রাসের সূতিকাগার’ ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরে মুসলমানদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য উঠেপড়ে লেগে রয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সেই সবচেয়ে বেশি মুসলমানের বসবাস। জনসংখ্যার ৫ শতাংশ মুসলমান এবং মোট সংখ্যা প্রায় ৬৫ লাখ। একসময় ফ্রান্স আফ্রিকার ২৪টি দেশে উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই সব দেশ থেকে ঔপনিবেশিক সরকারের প্রয়োজনে ফ্রান্সে মুসলমানদের আগমন ঘটে। তাদের উপনিবেশ কায়েম রাখার জন্য একসময় তারা সেসব দেশে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। ১৯৬১ সালে আলজেরিয়ায় ফ্রান্স বাহিনী স্বাধীনতাকামীদের দমনের জন্য মুসলিম নিধনযজ্ঞ চালিয়ে অকাতরে ১৫ লাখ মুসলমানকে হত্যা করে।
আমেরিকায় ‘৯/১১’ হামলার পর বিশ্ব ভূ-রাজনীতি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরিবর্তনের সাথে সাথে ফ্রান্সও বিচলিত হয়ে উঠে এবং ক্রমবর্ধমান ধর্ম হওয়ায় ইসলামকে তারা ফ্রান্সের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে নির্ধারণ করে। তারা ফ্রান্সের জনগণকে ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য তাদের মিডিয়া এবং রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করতে শুরু করে। এভাবে তারা ধীরে ধীরে ফ্রান্সের মুসলিম সম্প্রদায়কে একঘরে ও কোণঠাসা করে তুলতে সক্ষম হয়। ফলে ফ্রান্সের মুসলমানরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ নিজ দেশে একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত হয়েছে। ২০০৩ সালে সরকারি অফিস আদালতে কর্মরত মুসলিম মহিলাদের জন্য এবং ২০০৪ সালে স্কুলের ছাত্রীদের জন্য মাথায় স্কার্ফ পরা নিষিদ্ধ এবং ২০১০ সালে জনসমক্ষে মুসলিম মহিলাদের মুখ ঢেকে বোরকা পরা নিষিদ্ধ করা হয়। একই সাথে রাজনৈতিক ময়দান এবং মিডিয়া উভয়ই ইসলামবিদ্বেষী জনমত তৈরির প্রপাগান্ডা চালাতে থাকে।
ফলে ফ্রান্সে মসজিদ ও নামাজখানাগুলো ‘hate-crim’ বা বিদ্বেষমূলক আক্রমণের শিকার হতে থাকে। ইতোমধ্যে ২০০৬ সালে ‘শার্লি এবদো’ ম্যাগাজিন মুসলমানদের প্রিয় রাসূল সা:-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে। ২০১১ সালে তারা ওই ব্যঙ্গচিত্র পুনরায় ছাপালে বিক্ষুব্ধ পক্ষ ‘শার্লি এবদো’ অফিসে হামলা চালায়। এরপর ২০১৩ সালে তারা ওইসব কার্টুন নিয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে। পরিণতিতে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে একদল বন্দুকধারী ওই পত্রিকা অফিসে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে ১২ জনকে হত্যা করে। গত সেপ্টেম্বরে ফ্রান্স সরকার ওই হামলার বিচার কার্যক্রম শুরু করলে ‘শার্লি এবদো’ ওইসব হীন ব্যঙ্গচিত্র পুনরায় ছাপায় ‘বাকস্বাধীনতা’র নামে।
ফ্রান্সে উগ্র ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের উপদ্রব শুরু হয় ২০০০ সালের শুরুর দিকে। মূলত অদৃশ্য একটি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দাঁড় করিয়ে জনতুষ্টির মাধ্যমে জনসমর্থন আদায়ের কৌশল হিসেবেই এই উগ্র ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের ব্যবহার চলতে থাকে। ফলে ২০১৭ সালে এই ম্যাখোঁ মধ্যপন্থী হিসেবে ক্ষমতায় এলেও পরে তিনি নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে কট্টর ইসলামবিরোধী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।
গত ২ অক্টোবর তিনি ‘ইসলামী চরমপন্থা’র বিরুদ্ধে ফ্রান্সের ‘সেক্যুলার’ মূল্যবোধ (!) রক্ষার পরিকল্পনা প্রকাশ করার প্রাক্কালে বলেন, ‘ইসলাম এমন একটি ধর্ম, যেটি বর্তমানে বিশ্বের সব দেশে সঙ্কটে রয়েছে। এটি কেবল আমরা আমাদের দেশে দেখছি- এমনটি নয়।’ তিনি আগামী ডিসেম্বর নাগাদ একটি কঠোর আইন প্রণয়নের ঘোষণা দেন যার মাধ্যমে মসজিদ এবং মুসলমানদের মসজিদভিত্তিক সংগঠনগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আনবেন। ইমামদের বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করাবেন এবং স্কুল ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মীয় কোনো চিহ্ন স্কার্ফ ও বোরকা বহন না করার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নেবেন বলে জানান।
প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর এই স্বপ্রণোদিত মারমুখী অবস্থার মাঝেই তার হাতে আরো একটি ‘সুবর্ণ সুযোগ’ এসে হাজির হয় তার ইসলামবিদ্বেষী অবস্থান সুসংহত করার জন্য। তা হলো, কিছুদিন আগে প্যারিস থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে কেনফ্ল্যান্স-সেইন্ট শহরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪৭ বছর বয়সী একজন ইতিহাস শিক্ষক ছাত্রদেরকে বাকস্বাধীনতা পাঠদান করার সময় ‘শার্লি এবদো’ কর্তৃক প্রকাশিত মহানবী সা:-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করেন। এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ১৮ বছর বয়সী আবদুল্লাখ অনজোরোভ নামের চেচেন বংশোদ্ভূত জনৈক কিশোর গত ১৬ অক্টোবর ওই শিক্ষককে গলা কেটে হত্যা করে। প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূর থেকে আসা ওই হত্যাকারীকে পরে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে।
ওই হত্যাকাণ্ডকে ম্যাখোঁ ‘ইসলামী সন্ত্রাসীদের’ আঘাত বলে আখ্যায়িত এবং নিহত শিক্ষক প্যাটিকে মরণোত্তর সম্মাননা পদকে ভূষিত করেন। আর ফ্রান্সের মুসলমানদের ‘প্রজাতন্ত্রের শত্রু’ বলে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘আমাদের দেশে ইসলামিস্টরা শান্তিতে ঘুমাতে পারবে না’। (www.firstpost.com : 25.10.202। সেই সাথে ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় মন্টোপলিস ও তুলু শহরের দু’টি সরকারি ভবনে পুলিশি পাহারায় ওই সমস্ত জঘন্য কার্টুনসম্বলিত পোস্টার ঝুলিয়ে দেয়া হয় ২১ অক্টোবর। ওই শিক্ষক খুনের সাথে ফ্রান্সের মুসলিম সমাজের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ওই কিশোর নিজ দায়িত্বে একাই ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। সে মহানবী সা:-এর অবমাননায় দুঃখ এবং হতাশায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে। এই একজনের কাজের জন্য পুরো সম্প্রদায় সন্ত্রাসী হয়ে যেতে পারে না। তাহলে তো গত বছর নিউজিল্যান্ডে মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ৫০ জন মুসলমানকে হত্যাকারী ব্রেন্টন হ্যারিস ট্যারান্টের দায় পুরো খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে নিতে হবে।
কিন্তু তখন তো খ্রিষ্টানদেরকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ বলা হয়নি। সেই ট্যারেন্ট ছিল ‘বিচ্ছিন্ন নেকড়ে’। আর এই আবদুল্লাখ হলো ‘মুসলিম সন্ত্রাসী’! আসলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর এই ইসলামবিদ্বেষী তৎপরতা তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের প্রতিফলন। তিনি তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখার জন্যই এই হীন ইসলামবিদ্বেষী পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করছেন। আর মাত্র ১৮ মাস পরই ফ্রান্সে নির্বাচন। ফ্রান্সের ‘লে জার্নাল ডিউ ডিমান্স’-এ প্রকাশিত গত ৪ অক্টোবর সম্পন্ন একটি সার্ভেতে দেখা যায়, ম্যাখোঁ পেয়েছেন ২৩-২৬ শতাংশ ভোট আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী ও কট্টর ইসলামবিরোধী মেরি লি পেন পেয়েছেন ২৪-২৭ শতাংশ ভোট (www.bloomberg.com) : 01.10.2020) গত সেপ্টেম্বরে ‘IPSOS’ নির্বাচনী মতামতে দেখা যায়, ৭৮ শতাংশ লোক মনে করে- ফ্রান্স অধপতনের দিকে যাচ্ছে (www.trtworld.com)। ম্যাখোঁ করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। তার ভুল নীতির কারণে ফ্রান্সের অর্থনীতিতে মন্দার প্রভাব পড়েছে, ফলে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধির সম্মুখীন হয়েছে ফ্রান্স। অন্যদিকে সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে নাগরিকরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। সব মিলিয়ে ম্যাখোঁ ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে অজনপ্রিয় প্রেসিডেন্টে পরিণত হয়েছেন।
এ জন্যই তিনি জনগণের মনোযোগহরণকারী পদক্ষেপ হিসেবে মুসলিম ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করাতে চাচ্ছেন। তা ছাড়া তার প্রতিদ্বন্দ্বী ‘ন্যাশনাল র্যালি’ পার্টির নেত্রী ও সাম্প্রদায়িক লেখিকা মেরি লি পেন এবং রিনাড ক্যামাসের মতো লোকদের প্রভাবকে প্রতিরোধ করার জন্য ইসলামবিদ্বেষী বটিকা অত্যন্ত জরুরি। এই লেখকদের ‘মহা প্রতিস্থাপন’ তত্ত্ব নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্টন ট্যারেন্টকে ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হত্যাকাণ্ডে উৎসাহ জুগিয়েছিল। অর্থাৎ ফ্রান্সে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী নেতাদের মাঝে ‘মুসলিমবিদ্বেষী’ একটি প্রতিযোগিতা চলমান রয়েছে। কারণ, ‘ইসলামবিদ্বেষী’ প্রচারণা ও সংস্কৃতি সেখানে এমন পর্যায়ে পৌঁছানো হয়েছে যে, এই ঘৃণাকে নাগরিকদের মাঝে একটা গর্বের বিষয়ে পরিণত করা হয়েছে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো হয় ‘নোংরা মুসলিম’, ‘সব মুসলমানই সন্ত্রাসী’ ইত্যাদি আওড়ানোর মাধ্যমে। অথচ ম্যাখোঁর এই শাসনামলেই বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছে। কিন্তু বর্তমানের এমন ধরনের তৎপরতা আগে কখনো নজরে আসেনি। ফ্রান্সের ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফল সায়েন্টিফিক রিসার্চের’ সমাজবিজ্ঞানী ল্যারা মুচ্চেলি বিবিসি কে বলেন, ম্যাখোঁ চাইছেন জনগণ যেন মনে না করে, তিনি ডানপন্থা বা কট্টরপন্থীদের চেয়ে এক পা হলেও পিছিয়ে। তার প্রধান লক্ষ্য ২০২২ সালের নির্বাচনে জেতা। তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মেরি লি পেন যেভাবে ইসলামকে ফ্রান্সের জাতীয় সত্তার জন্য হুমকি হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, বহু মানুষ তা বিশ্বাস করছে (নয়া দিগন্ত : ২৮ অক্টোবর, ২০২০)।
তাছাড়া বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিশ্ব ভূ-রাজনৈতিক ও নিরাপত্তার বর্তমান পরিস্থিতিতে পশ্চিমা বিশ্বের কোথাও কোনো সন্ত্রাসী হামলার সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ‘আইএস’ স্তিমিত হয়ে আছে, ‘আল কায়েদা’ মৃতপ্রায়। এমন অবস্থায় নতুন কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উত্থান দরকার অথবা ‘আইএস’ ও ‘আল কায়েদার’ পুনরুত্থান প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এর সহজ প্রক্রিয়া হলো মুসলমানদের উসকে দেয়া। ফ্রান্সের এই ইসলামবিদ্বেষী তৎপরতা বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলিমকে আহত করেছে। মুসলমানরা তাদের নবী সা:কে নিজেদের প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসে ও শ্রদ্ধা করে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো ইসলামের সঠিক স্পিরিটের চেয়েও বেশি আবেগতাড়িত হতে পারে। কাজেই কোথাও হয়তো কেউ তার আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে ফেলতে পারে। অথবা কোনো পথভ্রষ্ট গোষ্ঠী এই আহত আবেগকে বিপথে পরিচালিত করার প্রয়াস পেতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংগঠন ইতোমধ্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। লেবাননের হিজবুল্লাহ প্রতিবাদ জানিয়েছে। ইরাকের ‘রাবা আল্লাহ’ নামে একটি দল বিশ্বের ‘যেকোনো জায়গা’য় প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানা যায়।
ফ্রান্সের বর্তমান ইসলামবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়কে আহত করেছে। এই কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে তাদের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য। সেই সাথে নতুন করে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উত্থানের নীলনকশা আঁকছে মুসলমানদের সন্ত্রাসী হিসেবে কলঙ্কিত করার মওকা পাওয়ার জন্য। এ ব্যাপারে মুসলিমদের সজাগ থাকতে হবে। সব ধরনের সঙ্ঘাত ও সহিংসতা এড়িয়ে চলে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্ষোভ প্রকাশ এবং ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের মাধ্যমে প্রতিবাদ করতে হবে। আর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হলো, প্রাণের রাসূল সা:কে তারা ব্যঙ্গ করেছে সেই রাসূল সা:-এর বাণীকে সমুন্নত রাখা, কুরআনের ব্যাপক জ্ঞানার্জন ও প্রচারে আত্মনিয়োগ করা। সেটাই হবে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ।
লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক
E-mail : maksud2648@yahoo.com