হোয়াইট হাউসের ভাগ্য গণনা
ট্রাম্প ও বাইডেন - ছবি : সংগৃহীত
ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের কথা। বিকেল গড়িয়ে প্রায় সন্ধ্যা। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে মোবাইলের চেনা রিংটোন। স্ক্রিনে +৯১... নম্বর, মায়ের। অসময়ে ফোনটা দেখেই নাতাশার ভ্রূ দু’টি একে অপরকে আলতো করে ছুঁয়ে ফেলেছিল। ফোন কানে দিতেই বয়ে এলো দুঃসংবাদ। আচমকাই মারা গিয়েছেন শ্বশুর। ব্যাংকের কনফারেন্সে স্বামী তখন অন্য শহরে। বাড়ি ফিরে একটা ব্যাগে টুকিটাকি সমস্ত কিছু গুছিয়ে চার বছরের ছেলেকে নিয়ে সোজা এয়ারপোর্ট। এর মধ্যেই বরকে খবর দেয়া, প্লেনের টিকিট কাটা...। সান ফ্রান্সিসকো থেকে মাঝরাতের ফ্লাইট। ফ্রাঙ্কফার্ট হয়ে দেশে। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। গোলমালের শুরু ফেরার সময়। সিলিকন ভ্যালির এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ম্যানেজার নাতাশার ছিল এইচ ১বি ভিসা। সামনেই রিনিউয়াল থাকায় নথিপত্রও সঙ্গে এনেছিলেন তিনি। কিন্তু করোনার গুঁতোয় বাতিল হয়ে যায় মার্চ মাসের অ্যাপয়েন্টমেন্ট। কিছুদিন পর আরও বড় ধাক্কা আসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের থেকে। ট্রাম্প জানান, এইচ ১বিসহ বেশ কয়েকটি ক্যাটিগরির বৈধ ভিসাধারীদের সবাইকে আমেরিকায় আসার অনুমতি দেয়া হবে না। তারপর থেকেই বাড়িতে রাতের পর রাত জেগে অফিসের কাজ সামলাতে হচ্ছে নাতাশাকে।
একই অবস্থা নরেন্দ্র সিংয়ের। পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসে দেশে আটকে পড়েছেন। এইচ ১বি ভিসায় ডালাসের এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় বেশ উঁচু পদেই চাকরি করেন নরেন্দ্র। কিন্তু ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে মহা সমস্যায় পড়েছেন তিনি। হাজার চেষ্টা করেও অনুমতি মিলছে না। কনস্যুলেট জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কিছু করা যাবে না। বাধ্য হয়ে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ই ভরসা নরেন্দ্রর। অবশ্য সবাই যে বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন, এমনটা নয়। যেমন তার স্ত্রী। এপ্রিল মাসেই চাকরি খোয়াতে হয়েছে এই সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে। নরেন্দ্রর কথায়, ভিসার মেয়াদ না বাড়ার আশঙ্কা সব সময়েই থাকে। তবে আমাদের ২০২২ সাল পর্যন্ত ভিসা আছে। ভেবেছিলাম, এর মধ্যে কিছু হবে না। অথচ এখন ওখানে যাওয়ার অনুমতিই মিলছে না।
শুধু নাতাশা বা নরেন্দ্র নয়—এই অবস্থার মধ্যে রয়েছেন প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ। যার মধ্যে কেউ পরিবারের কাছে ফিরতে পারছেন না। কাউকে আবার থাকতে হচ্ছে একাই। অধিকাংশই বিভিন্ন ক্যাটিগরির ভিসাধারী। বাকিরা গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। অথচ আমেরিকায় ঢোকার অনুমতি মিলছে না। ঠিক এটাই চেয়েছিলেন ট্রাম্প। যেকোনো মূল্যে অভিবাসন-জোয়ার রোখাই ছিল তার লক্ষ্য। করোনা পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে সেই কাজটাই সেরে ফেলেছেন তিনি। সাফ বক্তব্য গ্রেগ সিসকিন্দের। পেশায় অভিবাসন সংক্রান্ত আইনজীবী থাকেন মেমফিসে। তার মক্কেলদের মধ্যে সিংহভাগই ভারতীয়। দীর্ঘদিন ধরে সিলিকন ভ্যালির বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত। নয়া ভিসা নীতির জন্য সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। সঙ্গে জুড়েছে বি-১ ভিসা। অস্থায়ী বিজনেস ভিসাতেও রাশ টানছে সরকার। সব মিলিয়ে ট্রাম্পের উপর মহা ক্ষিপ্ত গ্রেগ। এই নির্বাচনে বাইডেন জিতলেই কি ছবিটা বদলে যাবে? জোর দিয়ে বলতে পারছেন না গ্রেগ। তাঁর কথায়, আমার বহু মক্কেল মনেপ্রাণে চাইছেন ট্রাম্প হেরে যাক। তাহলেই ‘অন-সাইটে’র দরজা ফের খুলে যাবে। কিন্তু বাইডেন এলেই যে ভিসা দেয়ার ঢল নামবে, তা নয়। মুখে না বললেও এখানে বাইডেনের হাতও বাঁধা। ট্রাম্পের মতো বাইডেনেরও ‘মেড ইন আমেরিকা’ পরিকল্পনা আছে। অভিবাসীদের বাড়বাড়ন্তে মার্কিনিদের কাজে টান পড়ুক, চান না ডেমোক্র্যাটরাও। বরং নির্বাচনের আগে ভিসা নিয়ে কড়াকড়ির লাভ পেতে পারে রিপাবলিকানরা। কারণ কে কী ভাবল, তাতে ট্রাম্পের বিশেষ কিছু যায়-আসে না। তিনি তো শুধু আমেরিকাকেই ‘গ্রেট’ বানাতে চান। অন্যদের নিয়ে ভাবনার সময় কোথায় তার!
আসল ভাবনাটা অবশ্য নেপথ্যচারী... ভোটের ভাবনা। না হলে কি কেউ ইন্দো-আমেরিকানদের জন্য বিশেষ ডিজিটাল প্রচার চালায়! বিভিন্ন ভাষায় বিজ্ঞাপন তৈরি করে! আসলে ভিসা, গ্রিন কার্ড দেখিয়ে নয়— রিপাবলিকান প্রার্থী ভোট চাইছেন নমোকে দেখিয়ে। মোদির ও তার সুসম্পর্ক তুলে ধরে। টিম ট্রাম্প জানে, ‘আব কি বার, ট্রাম্প সরকার’ সত্যি করতে হলে এই অংশের ভোট পেতেই হবে। তবে তা সহজ নয়। গতবার হিলারির পক্ষে ছিল ভারতীয়দের বড় অংশ। এবার হিলারির জায়গায় বাইডেন। সঙ্গে কমলা হ্যারিস। ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এই ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে দিয়েই বাজিমাত করতে চাইছে ডেমোক্র্যাটরা। প্রচারে নেমে রং ছড়িয়েছেন কমলাও। সম্পর্কের শিকড় বেয়ে ছোঁয়ার চেষ্টা করেছেন ভারতের আবেগকে। ভোটারদের কাছে বার বার বলেছেন মায়ের কথা, তাকে ও বোনকে বড় করে তোলার কথা। পরিবার আজও তার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, বোঝানোর চেষ্টা করেছেন মার্কিন ভোটারদের।
ডেমোক্র্যাট মনোভাবাপন্ন ভারতীয়দের কাছে টানার দায়িত্বও তুলে নিয়েছেন নিজের কাঁধে। ফলও মিলছে হাতেনাতে। এক সমীক্ষায় ৭২ শতাংশ ইন্দো-আমেরিকান জানিয়েছেন, তাঁরা ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। রিপাবলিকান ট্রাম্প সেখানে পেয়েছেন মাত্র ২২ শতাংশ সমর্থন। ভারতীয়রা যে মুখ ফেরাচ্ছে, তা বুঝতে পারছেন ট্রাম্প নিজেও। তাই মাঝেমধ্যেই মেজাজ হারাচ্ছেন। বেফাঁস মন্তব্য করছেন। কখনো করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্য গোপন করার অভিযোগ তুলে চীনের সঙ্গে সমালোচনা করছেন ভারতের। কখনো আবার পরিবেশ-বায়ু দূষণ নিয়ে কাঠগড়ায় তুলছেন মিত্র রাষ্ট্রকে। ফের ক্ষতে প্রলেপ দিতে টেনে আনছেন মোদির কথা। দাবি করছেন, যাই হোক না কেন, ভারতীয়রা তার পাশেই আছেন। থাকবেনও। ট্রাম্পের এই অস্থিরতার সুযোগটাই কাজে লাগাতে চাইছেন বাইডেন-হ্যারিস জুটি। জো’র কথায়, ‘প্রেসিডেন্ট ভারতকে নোংরা বলেছেন। বন্ধু সম্পর্কে কেউ এমন কথা বলে না। এভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিশ্বজনীন সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। কমলা হ্যরিস ও আমি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে গভীর মর্যাদা দিই। শ্রদ্ধাবোধকে আমরা আমেরিকার বিদেশনীতির কেন্দ্রে নিয়ে আসব।’
ভোটের প্রচার-প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবের তফাৎ বোঝে ভারতও। তাই নীরবে পানি মাপা চলছে। নয়াদিল্লির চিন্তা অনেক। হাতে হাত, মুখে হাসি হলেও ট্রাম্পের সঙ্গে বড়সড় কোনো চুক্তি করতে পারেননি মোদি। হাঁকডাক আর চটকদারিতে সেটুকু অবশ্য সফলভাবে ঢেকে দিয়েছেন নমো-ট্রাম্প। লাভ হয়েছে অল্প কিছু ক্ষেত্রে। লাদাখে চীনের সঙ্গে সংঘাতের সময় নয়াদিল্লির পাশেই দাঁড়িয়েছে ওয়াশিংটন। চীনের দাপট কমাতে জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে ‘দ্য কোয়াড’ নামে একটি অলিখিত জোট গড়ে তুলেছে ভারত এবং আমেরিকা। সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে বেশ কিছু দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের মৌখিক প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি ভরসা পাচ্ছেন না বহু কূটনীতিবিদ। তাদের মতে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে। মোদি-ট্রাম্পের ব্যক্তিগত রসায়নও দারুণ। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।
এবারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় এলেই কি বদল আসবে? খুব আশাবাদী হতে পারছেন না কূটনীতিকরা। তাদের ভাবাচ্ছে কাশ্মীর, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মতো ইস্যুতে বিডেন-হ্যারিসের অবস্থান। ভাবতে হচ্ছে চীন, পাকিস্তান নিয়েও। দুই ক্ষেত্রেই ট্রাম্প-বিডেনের অবস্থানে ঢের পার্থক্য। রিপাবলিকান প্রার্থী মারমুখী মেজাজের। ডেমোক্র্যাট মহাশয় আবার মেপে পা ফেলার পক্ষে। ভোটে যেই জিতুক, ভারত-মার্কিন সম্পর্ক ম্যাজিকের মতো খুব ভালো বা খুব খারাপ হবে না বলেই মনে করেন নীলম দেও। ১৯৭৫ ব্যাচের এই আইএফএস অফিসারের কথায়, আমেরিকায় রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট—দু’দলেরই ভারত নীতি প্রায় এক। এটা অবশ্য এই প্রথম নয়। ক্লিনটনের সময় থেকে সব আমেরিকান প্রেসিডেন্টই ভারত সফর করেছেন। ওবামা ভারতে এসেছেন দু্’বার। যে দলই ক্ষমতায় থাকুক, সেই দলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেই ভারত-মার্কিন সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। কারও সম্পর্কে আগে থেকে কোনো ধারণা করা উচিত নয়।
তবু ধারণার জন্ম হয়। কার্য-কারণ সম্পর্ক থেকে। না হলে খামোখা বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপর খাপ্পা হয়ে থাকবেন কেন প্রণীশ মেহতা। মুম্বইয়ের নামকরা হীরে ব্যবসায়ী। আমেরিকার ভোট নিয়ে তার বিশেষ মাথাব্যথা হওয়ার কারণ ছিল না। কিন্তু হলো। ওই ব্যবসার কারণেই। আমেরিকার বাজার তার কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। প্রচুর খদ্দের, অর্ডার, ডেলিভারি—এসব নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন মুম্বইকর প্রণীশ। কিন্তু বাদ সাধলেন ট্রাম্প। করের ঘা দিয়ে। গত বছর থেকে ‘জেনেরালাইসড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস’ (জিএসপি) থেকে ভারত ও তুরস্কের নাম বাদ দিয়েছে মার্কিন সরকার। ফলে হীরে, গয়না সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে আর কর ছাড় মিলছে না। ক্ষোভের শুরু এখান থেকেই। প্রণীশের কথায়, আমেরিকা সরকারের এই সিদ্ধান্তে আমরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ওই সময়ে প্রচুর অর্ডার নেয়া ছিল। কিছু ক্রেতার জন্য আমাদের দাম কমাতে হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে আবার হীরের মান কমেছে। বাইডেন জিতে জিএসপি ফের কার্যকর করলে তবে হাঁপ ছেড়ে বাঁচব।
বাইডেন জিতলে স্বস্তি পাবেন আমেরিকার বয়স্ক ভোটাররাও। বুড়ো বয়সেই যত্ত রোগজ্বালা। ডাক্তার, ওষুধে খরচ প্রচুর। ওবামা কেয়ার কিছুটা স্বস্তি দিয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্পের তা দু’চক্ষের বিষ। বদলে প্রত্যেক বয়স্ক নাগরিককে ২০০ ডলারের ‘ড্রাগ কার্ড’ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী। ভোট এসে গেলেও কার্ড হাতে পাননি, এই সংখ্যাটা নেহাতই কম নয়। ট্রাম্পের স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বয়স্ক নাগরিকরা ঝুঁকছেন বিডেন শিবিরের দিকে। জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন। ভোটের আগের এই ঘটনায় কৃষ্ণাঙ্গ ভোটাররাও বাইডেনমুখী। সেই ভোট ফিরে পেতে ৩০ লাখ চাকরি, কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য আর্থিক উন্নয়নের আশ্বাস দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
তবে এখনো পর্যন্ত তাকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে কোভিড-১৯। নিজে আক্রান্ত হয়েছেন। সঙ্গে বিদ্ধ হয়েছেন বিরোধী শিবিরের প্রশ্নবাণে। ট্রাম্প অবশ্য চীনকে ‘করোনার আঁতুড়ঘর’ বলে দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করেছেন। লাভ হয়নি। কোভিড মহামারী রুখতে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট কতটা ব্যর্থ, তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেদার প্রচার চালাচ্ছেটিম বিডেন। তারা জানেন, ভোটারদের মন ভোলাতে সোশ্যাল মিডিয়ার জুড়ি নেই। এ অবশ্য ট্রাম্পের থেকেই শেখা। ফেসবুকের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, দেখিয়েছিলেন তিনি। নেপথ্যে ছিল একটি অ্যাপ। নাম ‘দিস ইজ মাই ডিজিটাল লাইফ’। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আলেকজান্ডার কোগানের তৈরি এই অ্যাপের মাধ্যমে প্রায় ৫ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতে আসে ব্রিটিশ সংস্থা ‘কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা’র। সেই সমস্ত তথ্য ধরে ধরে ভোটারদের পছন্দ অনুযায়ী বিজ্ঞাপন তৈরি করে ট্রাম্পের ক্যাম্পেন টিম। ফল মিলেছিল ভোটবাক্সে। পর্দার আড়ালের খেলা এখন সামনে এসেছে। ফেসবুক-ট্যুইটার-ইনস্টাগ্রামে কোটি কোটি ডলার খরচে পিছপা হচ্ছে না ট্রাম্প বা বিডেন কেউই। যার বেশিরভাগ অংশই খরচ হচ্ছে স্যুইং স্টেটগুলির জন্য।
হোয়াইট হাউসে ঢোকার ছাড়পত্র থাকে স্যুইং স্টেটগুলোর হাতে। এখানেও ট্রাম্প-বিডেনের ব্যবধান ক্রমশ বাড়ছে। করোনা আতঙ্কে ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেটগুলিতে এবার পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেয়ার প্রবণতা অনেকটাই বেশি। টেক্সাস, নর্থ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া, উইসকনসিন, ফ্লোরিডা—সর্বত্রই একই চিত্র। এই ভোটের বড় অংশও বিডেনের দিকেই বলে জানিয়েছে একাধিক সমীক্ষক সংস্থা। তবে জনপ্রিয়তার অঙ্ক হাওয়ার মতো। সবসময় একদিকে বইতে থাকে না। দিক বদলায়। তা বিলক্ষণ জানেন ট্রাম্প। সেই জন্যই প্রচারের শেষ পর্বে ঘাঁটি সামলে ‘নড়বড়ে’ স্যুইং স্টেটগুলোকে নিজের দিকে টানার কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। করোনা ভয় ভুলে প্রতিটি জনসভায় উঠছে লাল ঝড়।
করোনার জন্য এবার সবকিছুই বেশ ফিকে। সংক্রমণ-আতঙ্ক জৌলুস কেড়ে নিয়েছিল ৪ জুলাইয়েরও। একমাত্র রঙিন—নির্বাচন। যা কিছু উৎসাহ, পুরোটাই ৩ নভেম্বর ঘিরে। মার্কিন নির্বাচন। গণতন্ত্রের এই উৎসবের মেজাজ এবারে ভিন্ন। এ যেন এক উত্তরাধুনিক ‘মুক্তিযুদ্ধ’।
কে জিতবেন? মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। উত্তরের অপেক্ষায় বসে নাতাশা, নরেন্দ্র, প্রণীশরা।
সূত্র : বর্তমান