শ্রীলঙ্কায় মার্কিন মিশন ব্যর্থ!
শ্রীলঙ্কায় মার্কিন মিশন ব্যর্থ! - ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেইও ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান থেকে কৌশলগত জোট কোয়াডের ব্যাপারে সমর্থন পেয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ সফরের সময় চীনবিরোধী বাগাড়ম্বড়তা আরো বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
শ্রীলঙ্কায় পম্পেইও বলেন, আমরা দেখছি যে খারাপ চুক্তি, ভূমি ও সাগরে সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন ও আইনহীনতা থেকে আমরা চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে লুণ্ঠনকারী হিসেবে দেখছি। তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও পূর্ণ সার্বভৌম শ্রীলঙ্কার সাথে অংশীদারিত্ব জোরদার করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
বেইজিংয়ের প্রতি পম্পেইও আক্রমণ শ্রীলঙ্কায় ভালোভাবে গৃহীত হয়নি। বন্দরসহ অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে দ্বীপদেশটিতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে চীন।
বিশেষজ্ঞরা শ্রীলঙ্কাকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন যে দেশটি চীনের ‘ঋণ ফাঁদ’ কূটনীতির মধ্যে পড়ে যেতে পারে। কারণ হাম্বানতোতা বন্দর নির্মাণের জন্য চীনের কাছ থেকে ১.৫ বিলিয়ন ঋণ নিয়ে বেশ সমস্যা পড়েছে দেশটি। ওই অর্থ ফেরত দেয়ার মতো পর্যাপ্ত রাজস্ব সৃষ্টি করতে না পারায় চীনের কাছেই বন্দরটি লিজ দিতে বাধ্য হয়েছে শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কায় চীনা দূতাবাস বেশ কয়েকটি টুইটের মাধ্যমে পম্পেইওর দাবির দৃঢ় জবাব দিয়েছে।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসাও চীন প্রশ্নে পম্পেইওর লুণ্ঠনকারী আখ্যার সমালোচনা করে বলেছেন, গৃহযুদ্ধ অবসানের পর থেকে উন্নয়ন সহায়তার জন্য বেইজিংয়ের কাছ থেকে উপকৃত হয়েছে কলম্বো।
অবশ্য মালদ্বীপ ভিন্ন কাহিনী বলেছে। সেখানে সফরকালে পম্পেইও মালেতে মার্কিন দূতাবাস খোলার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন ভারত মহাসাগরে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও মালদ্বীপের মধ্যে নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হওয়ার পর এই ঘোষণা দেয়া হলো।
চীনা সরকারের মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস জানায়, ওয়াশিংটন তার ভূরাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণে ব্যবহার করার মতো স্থান হিসেবে ছোট্ট দেশ মালদ্বীপকে পেয়েছে। চীনা বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে ট্যাবলয়েডটি আরো জানায়, মালদ্বীপে চীনা বিনিয়োগ ও সহযোগিতা না থাকলে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির দিকে তাকানোর গরজ পর্যন্ত অনুভব করত না, সেখানে দূতাবাস খোলা তো দূরের ব্যাপার।
এতে স্বীকার করা হয় যে মালদ্বীপ সরকার ভারত মহাসাগরে ভারতকে সমর্থন করেছে এবং ভারত চায়, চীনা উত্থান প্রতিরোধের জন্য এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে আসতে।
সূত্র : ইউরেশিয়ান টাইমস
শ্রীলঙ্কাকে ভয় দেখাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র!
এদিকে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কাকে যুক্তরাষ্ট্র ভয় দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে চীন। ওয়াশিংটন শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে বলেছে, ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রটির পক্ষে চীনের সাথে সম্পর্ক কঠিন, তবে প্রয়োজনীয়। এ নিয়ে পছন্দের বিষয়টি তাদেরই নির্ধারণ করতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও আসার আগে কলম্বোয় অবস্থিত চীনা দূতাবাস এমন মন্তব্য করে। মাইক পম্পেও এশিয়া সফরে রয়েছেন।
সোমবার চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের সুযোগে যুক্তরাষ্ট্র চীন ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার সম্পর্কে নাক গলাচ্ছে। তারা শ্রীলঙ্কাকে হয়রানি করছে।’