র-প্রধান কেন নেপাল সফর করেছেন?
র-প্রধান কেন নেপাল সফর করেছেন? - ছবি : সংগৃহীত
ভারতীয় কয়েকটি সংবাদপত্র ও কৌশলগত বিশ্লেষণের কয়েকটি ইস্যু খবর প্রকাশ করেছে যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর প্রধান ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদলের নেতা হিসেবে ২১ অক্টোবর দুপুরে কাঠমান্ডু পৌঁছেন এবং একই তারিখে রাতে ফিরে আসেন।বলা হয়েছে, তিনি সবমিলিয়ে কাঠমান্ডুতে অবস্থান করেন ৯ ঘণ্টা।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর চিহ্ন থাকা একটি বিমানে করে তিনি কাঠমান্ডু অবতরণ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী ওলির সাথে একান্তে বৈঠক করেন তার বালুওয়াটার বাসভবনে। তিনি বিরোধী দলের নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাইয়ের সাথেও সাক্ষাত করেন। এছাড়া শীর্ষস্থানীয় তেরাইন নেতা মহন্ত ঠাকুরের সাথেও সাক্ষাত করেন।
যেটা উল্লেখ করার মতো বিষয় তা তিনি যাদের সাথে বৈঠক করেছেন, তারা নন, বরং যাদেরকে বাদ দিয়েছেন তারা। বাদের তালিকায় রয়েছেন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির কো-চেয়ারম্যান পুস্পকমল দহল তথা প্রচন্ড, অপর দুই নেতা মাধব নেপাল ও ঝালানাথ খানা, দহলের ঘনিষ্ঠ নারায়ন কাজি শ্রেষ্ঠ ও তেরাইনের অপর নেতা উপেন্দ্র যাদব।
প্রধানমন্ত্রীর অফিস বৈঠকের খবর নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উপদেষ্টা সূর্য থাপা বলেন, সৌজন্য সাক্ষাতে নেপাল-ভারত সম্পর্ক, সংলাপের মাধ্যমে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান করা, পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখা নিয়ে আলোচনা হয়।
সীমান্ত ইস্যু এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলির কিছু মন্তব্যের জের ধরে ভারত-নেপাল সম্পর্ক মারাত্মক অবনতি হওয়ার প্রেক্ষাপটে র-প্রধানের এই সফর অনুষ্ঠিত হলো।
নেপালে অবশ্য অভ্যন্তরীণ সমস্যাও আছে। তার দলের পক্ষ থেকেই অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল পার্লামেন্টে।
আবার ওলি তার সিনিয়র নেতাদের সাথে আলোচনা না করেই কূটনৈতিক পদ ও মন্ত্রিসভার সদস্য নিয়োগ করে যাচ্ছেন।
এমন এক পরিস্থিতিতে র-প্রধান প্রকাশ্যে নেপাল সফর করলেন। এবং সাথে করে বিপুলসংখ্যক লোক নিয়ে।
মিডিয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো গোয়েন্দাপ্রধানের সফরের খবর খুব কমই প্রকাশ করা হয়ে থাকে। অনেক ঘটনাতেই গোয়েন্দাপ্রধানেরা নীরবে আসেন, নীরবে প্রস্তান করেন বলেই জানা যায়। তাহলে কেন এই সফরটির কথা প্রকাশ করা হলো এবং বিশেষ করে ভারতীয় মিডিয়ায়?
মিডিয়ার এক খবরে বলা হয়, সফরটির উদ্দেশ্য ছিল চীনকে হুঁশিয়ারি দেয়া। তবে খবরটি প্রকাশ না করা হলেও চীনা মিডিয়া জানত। আর প্রধানমন্ত্রীসহ নেপালের চীনা বন্ধুরাও বিষয়টি গোপন রাখত না।
সফরটি স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।ইউএমএল গ্রুপের উভয় নেতা- মাধব নেপাল ও ঝালনাথ খানাল- বলেছেন, গোপনে হওয়া এই বৈঠকটি জাতীয় স্বার্থবিরোধী হয়েছে। সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ভীম বাহাদুর রাওয়ালও সফরের সমালোচনা করেছেন।
একসময় ভারতীয় এস্টাবলিশমেন্টের প্রিয়ভাজন দহল সবচেয়ে কঠিন মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, সফরটি ছিল অযথার্থ ও আপত্তিজনক।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী নারায়ন কাজি শ্রেষ্ঠ জানতে চেয়েছেন, সফরটি ব্যক্তিগত না সরকারি ছিল। আর সফরটি সরকারি হলে, তাতে এজেন্ডা থাকা দরকার।
আবার ওলি ভারতবিরোধী হিসেবে পরিচিত। এই প্রেক্ষাপটেও অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
সফরটি আরো বেশি পেশাগতভাবে করা যেত। আগের র-প্রধানেরা সেভাবেই করেছেন। আর তা কেবল নেপালে নয়, অন্যান্য প্রতিবেশী দেশেও করেছেন। দেশের নামগুলো প্রকাশ থেকে বিরত থাকা গেল।
সূত্র : শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ান