কোমর ব্যথার চিকিৎসা

অধ্যাপক ডা: হারাধন দেব নাথ | Oct 27, 2020 06:08 pm
কোমর ব্যথার চিকিৎসা

কোমর ব্যথার চিকিৎসা - ছবি সংগৃহীত

 

প্রতিটি মানুষই তার জীবনের কোনো কোনো সময় কোমর ব্যথায় ভোগে থাকেন। কোমর ব্যথা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- মাসকিউলোস্ক্যলেটাল ব্যথা, ফাইব্রোমাইএলজিয়া, অসটিওআর্থ্রাটিস, স্পন্ডাইলো ডিসকাইটিস, পটস ডিজিজ, স্পন্ডাইলোসিস, এনকাইলোজিং স্পন্ডাইলাইটিস।

কোমর ব্যথার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো প্রলাপসড লাম্বার ইন্টার ভার্টিব্রাল ডিস্ক বা পিএলআইডি। এই রোগে কোমরের নরম ডিস্ক যা দু’টি কশেরুকার মধ্যে থাকে তা বের হয়ে বাইরে চলে আসে। ডিস্কের বাইরের দিকে এনুলাস ফাইব্রোসাস নামে শক্ত আবরণ থাকে, যা আঘাতে বা ক্ষয় হয়ে ছিঁড়ে গিয়ে ভেতরের নরম জেলির মতো অংশ যা নিউক্লিয়াস পাল্পোসাস নামে পরিচিত, বাইরে বের হয়ে আসে। সেই বের হওয়া অংশ নার্ভের রুটকে চাপ দেয়। যার ফলে কোমরে প্রচণ্ড ব্যথা হয় এবং সেই ব্যথা পায়ে রেডিয়েশন হয়। এটাকে সায়াটিক পেইন বলে। কমন PLID পিএলআইডি হয় L4/5 স্পেসে। তা ছাড়া L5/S1 ও হয়ে থাকে।

রোগীর লক্ষণ হলো, কোমর ব্যথা যা কোমরের পেছন দিয়ে ঊরুর পিছন দিয়ে, কাফ মাসেলের পেছন দিয়ে পায়ের বুড়ো আঙুল বা ছোট আঙুলে চলে আসে। কাশি দিলে বা কোথ দিয়ে প্রস্রাব পায়খানা করা সামনের দিকে ঝুঁকে নামাজ পড়লে বা কোনো জিনিস তুলতে গেলে এই ব্যথা বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় ডিক্সপ্রসাপস বেশি হলে, প্রস্রাব, পায়খানা, সেক্সে র নার্ভ ড্যামেজড হয়ে যায়, বা রোগীর পা প্যারালাইসিস হয়। এ অবস্থাকে বলে ক্যানডেন ইকুইন সিনড্রোম হলে তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপারেশন করতে হয়। নতুবা রোগের উন্নতি হয় না।

কোমর ব্যথার শতকরা ৯০ ভাগ, বেড রেস্ট, মেডিসিন, কোমরের ব্যয়াম এবং লাইফ স্টাইল মডিফিকেশন, যেমন- শক্ত বিছানায় ঘুমানো, নুয়ে কাজ, ভারী কাজ না করা কোমরের ব্যয়াম, পাতলা বালিশে ঘুমানো ইত্যাদিতে ভালো হয়। ১০ শতাংশ রোগীর পিএলআইডির জন্য অপারেশন করতে হয়। কোমর যেহেতু সেনসেটিভ জায়গা, সে জন্য কোমরের অপারেশন ছোট সেন্টার বা ইনফেকটেড অপারেশন থিয়েটার না করাই ভালো। উন্নতমানের অপারেশন থিয়েটার এ মাইক্রোসকোপের সাহায্য নিউরোসার্জন দ্বারা মাইক্রোসার্জারি করলে কোমর ব্যথা প্রায় সব ক্ষেত্রে ভালো হয়। উন্নতমানের মাইক্রোসার্জারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ, ঢাকা মেডিক্যালসহ অনেক প্রইভেট সেন্টারই হচ্ছে।
লেখক : অধ্যাপক, নিউরো সার্জারি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়

dr.haradhan@yahoo.com


জরুরি চিকিৎসা : কেটে গেলে

প্রতিদিন বিভিন্ন কাজ করতে হয়। এতে মাঝে মধ্যেই দেখা দেয় জরুরি অবস্থা। কাটাছেঁড়া তেমনি একটি অবস্থা। কেটে গেলে রক্তপাত হতে থাকে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অনেকেই। মাথা ঠাণ্ডা রাখুন পরিস্থিতি সামাল দিন।

কেটে রক্তপাত হতে থাকলে পরিষ্কার কাপড় বা গজ-ব্যান্ডেজ দিয়ে প্রেসার দিন। কাপড় বা গজ ব্যান্ডেজ না পেলে হাত দিয়ে চেপে ধরুন। তবে হাত, কাপড় বা ব্যান্ডেজ অবশ্যই পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুুমুক্ত হতে হবে। না হলে কাটাস্থানে ইনফেকশন হতে পারে।

তরলের ধর্ম উঁচু স্থান থেকে নিচু স্থানে ধাবিত হওয়া। তাই হাতে কাটলে হাত উঁচু করে ধরুন। আপনাআপনি রক্তপড়া বন্ধ হবে।

রক্তপাত হলে অনেকেই সাথে সাথে পানির ট্যাপের নিচে রক্ত ধুয়ে ফেলেন। আবার অনেকে বিষাক্ত মনে করে রক্ত চেপে ফেলে দেন। এতে করে রক্তক্ষরণ বেশিক্ষণ ধরে চলতে থাকে। রক্তপাত বন্ধ হওয়ার জন্য রক্তের মধ্যেই রক্ততঞ্চন ফ্যাক্টর থাকে। ধুয়ে ফেললে তা কমে যায়। রক্তপাত বন্ধ করার জন্য রক্তের উপাদানগুলো মিলে জমাট রক্ত তৈরি করে। এ জমাট রক্ত চেপে ফেলে দিলে আবার শুরু হবে রক্তপাত।
গ্রামে অনেকে কাটা স্থানে মাকড়সার জাল, গোবর, হাঁড়ির কালি, টুথপেস্ট লেপে দেন। এটা ইনফেকশন ডেকে আনা ছাড়া আর কিছুই নয়।

কাটাস্থান অল্প হলে অ্যান্টিবায়োটিক মলম লাগাতে পারেন। বেশি কেটে গেলে বা রক্তপাত ১০ মিনিটের মধ্যে বন্ধ না হলে হাসপাতালে নিতে ভুলবেন না। কাটাস্থানে সেলাই দিতে হতে পারে। প্রয়োজন হলে চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরামর্শ দেবেন।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us