আফগানিস্তানে সৈন্য : যুক্তরাষ্ট্রের ডিগবাজি!
ডোনাল্ড ট্রাম্প - ছবি : সংগৃহীত
ট্রাম্প প্রশাসন বুধবার আফগানিস্তানে মার্কিন সৈন্যদের ভবিষ্যত নিয়ে সাংঘর্ষিক বার্তা পাঠানো অব্যাহত রেখেছে।
ন্যাটোতে নিযুক্তি মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, দেশটিতে আরো সৈন্য হ্রাসের মতো অবস্থা এখনো সৃষ্টি হয়নি।অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আবারো বলেছেন, আগামী বসন্তের মধ্যে ব্যাপকভাবে সৈন্য হ্রাস নিয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরী করছে প্রশাসন।
আফগান বাহিনীর বিরুদ্ধে তালেবানের সহিংসতার মাত্রা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশের প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য প্রত্যাহার নিয়ে এই মন্তব্য এলো।
ভার্চুয়াল বৈঠকে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত কে বেইলি হাচিসন বলেন, আরো সৈন্য প্রত্যাহারের মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে কিনা তা দেখে আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। আশা করব, আমরা তেমন কিছু করতে পারব। তবে এখন ওই রকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি।
তিনি তালেবানের চলমান সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাদের চুক্তির চেতনার পরিপন্থী।
গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান একটি চুক্তিতে সই করে। তাতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যহারের কথা বলা হয়েছে। আর তালেবান আফগানিস্তানের মাটি সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে দেবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
হাচিসন বলেন, আমরা যুদ্ধবিরতির জন্য কিংবা সহিংসতা ব্যাপকভাবে হ্রাস করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। কিন্তু তা হচ্ছে না।
ট্রাম্প তার পুনর্নির্বাচন প্রচারণা জোরদার করার অংশ হিসেবে বিদেশ থেকে সৈন্য প্রত্যহারের কথা বলছেন। কিন্তু তার প্রশাসন থেকেই সাংঘর্ষিক বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। পেন্টাগন ও পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা বারবার জোর দিয়ে বলছেন, আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়টি শর্ত-নির্ভর।
ন্যাটো মহাসচিব জ্যাঁ স্টলটেনবার্গও বুধবার জোর দিয়ে বলেছেন, আফগানিস্তানে অবস্থানরত ১২ হাজার ন্যাটো সৈন্যের প্রত্যহারের বিষয়টি শর্ত-নির্ভর।
ন্যাটো প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের ভার্চুয়াল বৈটকের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আফগানিস্তানে আমাদের উপস্থিতি নিয়ে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি। আমাদের বাহিনীর ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের সমন্বয় অবশ্যই শর্তসাপেক্ষ বিষয়।
তিনি বলেন, শর্তগুলো বিবেচনা করতে হবে। এসবের মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সাথে তালেবানের সম্পর্ক ছিন্ন করা। এই সম্পর্কের কারণেই ৯/১১-এর পর আমরা আফগানিস্তানে গিয়েছিলাম। তিনি বলেন, সহিংসতাও কমাতে হবে। কারণ এটিই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পথ দেখাতে পারে।
তালেবান ও আফগান সরকারি কর্মকতৃারা গত মাসে কাতারের রাজধানী দোহায় বৈঠকে বসেছেন। কিন্তু তবুও আফগানিস্তানে সহিংসতা হ্রাস পায়নি।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়ান বুধবার প্রকাশিত পলিটিকোর সাথে সাক্ষাতকারে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার শর্তসাপেক্ষ বলে জানিয়েছেন। তবে তিনি এও জানিয়েছেন, আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম যে চলতি মাসের মধ্যে সাড়ে চার হাজার সৈন্য প্রত্যাহার করব। আর ২০২১ সালের প্রথম দিকের মধ্যে ২,৫০০ থেকে ২,৮০০ সৈন্য ফিরিয়ে আনব।
তিনি এর আগে ৫০ ভাগ সৈন্য প্রত্যহারের কথা বললেও জানিয়েছিলেন, তা শর্তসাপেক্ষ।
সূত্র : সিএনএন