র-প্রধানের বৈঠক করে বিপাকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী
নেপালের প্রধানমন্ত্রী - ছবি : সংগৃহীত
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি কূটনৈতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর প্রধান সামন্ত কুমার গোয়েলের সাথে বৈঠকের জন্য তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতারাও তার সমালোচনা করছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় বালুওয়াটারে প্রধানমন্ত্রী ওলির সাথে তার বাসভবনে সাক্ষাত করেন গোয়েল।
অবশ্য দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের সাথে বৈঠকসহ, ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিসহ, ভারতীয় গোয়েন্দাপ্রধানের নেপাল সফর যথাযথভাবে হয়নি।
ক্ষমতাসীন এনসিপির নেতা ভীম রাওয়াল বলেন, কূটনৈতিক রীতিনীতি মেনে র-প্রধান গোয়েল ও প্রধানমন্ত্রী ওলির মধ্যকার বৈঠকটি হয়নি। আর তা নেপালের জাতীয় স্বার্থও পূরণ করেনি।
তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে পরামর্শ ছাড়াই অস্বচ্ছভাবে বৈঠকটি হয়েছে। এটি আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র দুর্বল করতে ভূমিকা রাখতে পারে।
এনসিপির পররাষ্ট্র বিভাগের উপপ্রধান বিষ্ণু রিজাল বলেন, কূটনীতির সাথে সম্পর্কিত বিষয়াদিতে রাজনীতিবিদদের উচিত হবে না বাড়াবাড়ি কিছু করা।
তিনি বলেন, কূটনীতি সামাল দেয়া উচিত কূটনীতিবিদদের, রাজনীতিবিদদের নয়।
তিনি বলেন, র-প্রধানের সফর নিয়ে বর্তমান বিভ্রান্তি সৃষ্টির কারণ হলো রাজনীতিবিদদের কূটনীতিতে হস্তক্ষেপ করা।
নেপালি কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা গগন থাপা এক টুইটে বলেন, এই বৈঠক জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টি করেছে।
থাপা টুইটে বলেন, এই বৈঠক কেবল আমাদের কূটনৈতিক রীতিনীতির লঙ্ঘনই নয়, সেইসাথে আমাদের জাতীয় স্বার্থের প্রতি হুমকিও। এর তদন্ত হওয়া উচিত।
নেপালের সাবেক তিন প্রধানমন্ত্রী- প্রচন্ড পুস্প কমল দহল প্রচন্ড, ক্ষমতাসীন এনসিপির মাধব কুমার নেপাল ও নেপালি কংগ্রেসের শের বাহাদুর দিউবা- র-প্রধানের সাথে তাদের বৈঠক হয়েছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা অস্বীকার করেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের সচিবালয় ও ক্ষমতাসীন এনসিপির সিনিয়র নেতারা র-প্রধানের সাথে তাদের বৈঠক নিয়ে স্থানীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত মিথ্যা, কল্পিত ও বিভ্রান্তিকর খবরে বিপথগামী না হওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
দিউবার সচিবালয় স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, গোয়েলের সাথে দিউবার বৈঠক হয়নি।
ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল এম এন নারাভানের নেপাল সফরের আগ দিয়ে গোয়েল এই সফর করলেন। ভারতীয় সেনাপ্রধান নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নেপাল যাবেন।
গত ৮ মে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং লিপুলেখের সাথে উত্তরাখন্ডের ধরচুলাকে সংযোগকারী ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সংযোগ সড়ক উদ্বোধনের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি হয়।
নেপাল ওই ভূখণ্ড তার দাবি করে ওই উদ্বোধনের নিন্দা করে। কয়েক দিন পর নেপাল নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে। তাতে লিপুলেখ, কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরাকে নেপালের বলে দেখানো হয়। ভারত ২০১৯ সালে যে মানচিত্র প্রকাশ করেছিল, তাতে এসব এলাকা তাদের বলে দেখানো হয়েছিল।
নেপাল ওই মানচিত্র প্রকাশের পর ভারত তাকে একতরফা কাজ হিসেবে অভিহিত করেছিল।
জুনে নেপালি পার্লামেন্ট মানচিত্রটি অনুমোদন করে।
প্রধানমন্ত্রী ওলি জোর দিয়ে বলেছিলেন যে লিপুলেখ, কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরা তার দেশের। তিনি ভারত থেকে এসব ভূখণ্ড কেড়ে নেয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেছিলেন।
সূত্র : পিটিআই