হঠাৎ মাংসপেশির টান : জরুরি চিকিৎসা
হঠাৎ মাংসপেশির টান : জরুরি চিকিৎসা - ছবি সংগৃহীত
খেলার মাঠে হঠাৎ করে পা ধরে ব্যথায় কঁকিয়ে ওঠার দৃশ্য প্রায়ই দেখা যায়। রাতে অনেকেরই ঘুম ভেঙে যায় পায়ের কোনো মাংসপেশিতে হঠাৎ টান লাগার জন্য। এ সময় মনে হয় মাংসপেশি বুঝি ছিড়েই গেল। মাংসপেশিতে হঠাৎ করে টান লাগার অসহ্যকর অভিজ্ঞতা হয়নি এমন লোক খুব কমই আছেন। মাংসপেশি সঙ্কোচন-প্রসারণের মাধ্যমে কাজ করে। সঙ্কোচনের পরপরই আবার প্রসারিত হয় বলে আমরা তেমন বুঝতে পারি না। কিন্তু এ সঙ্কোচন দীর্ঘ সময়ের জন্য হলে প্রচণ্ড ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একেই বলে মাসল ক্রাম বা মাংসপেশিতে টান।
হঠাৎ করে মাংসপেশিতে টান লেগে যেতে পারে। এটা শরীরের যেকোনো মাংসপেশিতে হতে পারে। তবে ঊরুর মাংসপেশি (হ্যামস্ট্রিং), পায়ের পেছনের দিকের মাংসপেশিতে (কাফ) টান লাগে বেশি। টান লেগে গেলে সাথে সাথে সঠিক ব্যবস্থা নিতে হয়। মাংসপেশিতে টান লাগার সঠিক কোনো কারণ জানা যায় না। তবে এর পেছনে বেশ কিছু বিষয় জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। ব্যায়ামের সময় মাংসপেশির সঠিক সমন্বয় না হলে, দীর্ঘ সময় ধরে ব্যায়াম করলে, ব্যায়ামের প্রথমদিনই অনেক বেশিক্ষণ ধরে ব্যায়াম করলে, সাঁতার কাটার পর বা সময়, পানিশূন্যতা যেমন খুব বেশি ঘাম, ডায়রিয়া বা খুব বমি হলে হঠাৎ করে মাংসপেশিতে টান পড়ে। একটি বা একগুচ্ছ মাংশপেশি অনৈচ্ছিক সঙ্কোচন হয়। এ ছাড়া স্নায়ুতে চাপ পড়লে, রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে ও খাবারে খনিজ লবণের পরিমাণ কম হলেও টান লাগতে পারে।
এ ছাড়া রক্তস্বল্পতা, কিডনির রোগ ও ডায়াবেটিসেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। হঠাৎ করে মাংসপেশিতে টান লাগলে প্রথমে যে মাংসপেশিতে টান লেগেছে তা প্রসারিত করুন। উরুর মাংসপেশিতে টান লাগলে সামনের অংশে হলে হাঁটু ভাঁজ করে উরু টান টান করে মালিশ করুন আর পেছেনে হলে হাঁটু না ভেঙে পা সোজা করে টান ধরা অংশে মালিশ করুন। কাফ মাসলে টান পড়লে হাঁটু সোজা করে পায়ে পাতা আস্তে আস্তে উপেরের দিকে তুলে মালিশ করুন। পায়ের পাতায় টান লাগলে পায়ের আঙ্গুল সোজা করে পাতার সামনের অংশের উপর ভর দিয়ে দাঁড়ান ও আস্তে আস্তে মালিম করুন। সঙ্কুচিত মাংসপেশিতে বরফ বা গরম ছ্যাঁক দিতে পারেন।
যদি বারবার এ সমস্যা দেখা দেয় বা রাতের ঘুম বা স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয় তবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। এটা প্রতিরোধে বেশ কিছু ব্যবস্থা আছে। ব্যায়াম, সাঁতার কাটার, খেলাধুলার আগে আগে হাল্কা ব্যায়াম করুন। যে মাংসপেশিতে টান লাগে সেগুলোর প্রসারণ করুন। প্রচুর পানি পান করুন। কঠোর পশ্রিমের কোনো কাজ করার সময় বেশি করে পানি পান করুন। কারণ কাজের সময় আপনার শরীরের পানি বের হয়ে আপনাকে পানিশূন্য করে ফেলে। ফলে মাংসপেশি সংবেদী হয়ে সঙ্কুচিত হয়। ফলে দেখা দেয় মাসল ক্রাম।
ফলমুল ও শাকসবজি বেশি করে খান। নিয়মিত ব্যায়াম করুন।