মালাবার মহড়ায় এবার অস্ট্রেলিয়াও
মালাবার মহড়ায় এবার অস্ট্রেলিয়াও - ছবি : সংগৃহীত
চীনের সাথে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যেই নয়া দিল্লি সোমবার ঘোষণা করেছে যে আগামী মাসে ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রকে তিন জাতি মালাবার সামরিক মহড়ায় অস্ট্রেলিয়াও যোগ দিতে যাচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার অন্তর্ভুক্তির মানে হলো, তিন বছর আগে নতুন করে অবয়ব নেয়া তথাকথিত কোয়াডের সব দেশ মালাবার মহড়ায় অংশ নিতে যাচ্ছে।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, সামুদ্রিক নিরাপত্তায় অন্যান্য দেশের সাথে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী ভারত। আর অস্ট্রেলিয়ার সাথে বর্ধিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতার আলোকে মালাবার ২০২০-এ অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনী অংশ নিচ্ছে।
এতে আরো বলা হয় যে এই মহড়ার ফলে অংশগ্রহণকারী নৌবাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়বে। তারা সম্মিলিতভাবে অবাধ, উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক চায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থা চায়।
কোভিড-১৯-এর কারণে মহাড়াটি সাগরে সংস্পর্শহীনভাবে আয়োজন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নভেম্বরে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে মহড়াটি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়া আরো আগে থেকেই মালাবার নৌমহড়ায় যোগ দিতে আগ্রহী ছিল। কিন্তু চীন ক্ষুব্ধ হতে পারে মনে করে ভারত তাতে অনীহা প্রকাশ করে আসছিল। কিন্তু পূর্ব লাদাখে গত মে মাস থেকে চীনের সাথে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার প্রেক্ষাপটে সম্ভবত ভারত তার আগের নীতি পর্যালোচনা করতে আগ্রহী হয়।
ক্যানবেরা থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিন্ডা রেনল্ডস বলেছেন, মালাবার মহড়া হবে চার ইন্দো-প্যাসিফিক গণতান্ত্রিক দেশের মধ্যে গভীর আস্থা এবং অভিন্ন নিরাপত্তা স্বার্থে তাদের একসাথে কাজ করার প্রদর্শনী।
এতে বলা হয়, মালাবারের মতো উচ্চ মাত্রার সামরিক মহড়া অস্ট্রেলিয়ার সামুদ্রিক সক্ষমতা বাড়াবে, আমাদের অংশীদারদের সাথে পারস্পরিক নির্ভরতা সৃষ্টি করবে, উন্মুক্ত ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক সমর্থনের পথ সৃষ্টি করবে।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস পেইন বলেন, এটি একসাথে কাজ করার ও আমাদের অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা সমুন্নত রাখতে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সক্ষমতা বাড়াবে।
চলতি মাসের প্রথম দিকে কোয়াড পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে মালাবার মহড়ায় অস্ট্রেলিয়ার অংশগ্রহণের বিষয়টি ছিল।
কোয়াডের ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে চীন। চীনা স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি জোর দিয়ে বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র এই গ্রুপকে ইন্দো-প্যাসিফিক ন্যাটো হিসেবে গড়তে চায়।
২০০৭ সালের এপ্রিলে জাপানি উপকূলে হওয়া সম্প্রসারিত মালাবার মহড়ার অংশ ছিল অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুর। চীন এর তীব্র বিরোধিতা করায় অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুর তা থেকে সরে যায়। তারপর ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে মালাবার মহড়া অব্যাহত রাখে। ২০১৫ সালে তাতে যোগ দেয় জাপান।
ঘটনাক্রমে ভারত এখন কোয়াডভুক্ত চার দেশের সবার সাথে সামরিক লজিস্টিকস চুক্তিতে সই করেছে। শিনজো অ্যাবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার দায়িত্ব ত্যাগের ঠিক আগ দিয়ে শেষ দেশ হিসেবে চলতি মাসে জাপানের সাথেও তারা চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
সূত্র : দি ওয়্যার