ট্রাম্প কি যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন?

জি. মুনীর | Oct 18, 2020 06:21 pm
ট্রাম্প

ট্রাম্প - ছবি সংগৃহীত

 

২০২০ সালের ডলার মূল্যে ওবামা
প্রশাসন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-উত্তর তার আট বছরের শাসনামলে সামরিক ব্যয় রেকর্ড পরিমাণে ৫ দশমিক ৬৭ ট্রিলিয়ন ডলারে সীমিত রাখেন। সেখানে ট্রাম্প তার রাশিয়া ও চীনের সাথে স্নায়ুযুদ্ধকে ব্যবহার করেছেন সামরিক ব্যয় আরো বাড়িয়ে তোলাকে যৌক্তিক প্রতিপন্ন করতে। এ ছাড়া তিনি এগিয়ে নিয়ে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রের আধুনিকায়নে ওবামার ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনাকেও। এ দিকে বিশ্ব এখন দ্বিগুণ বিপদের মধ্যে আছে পারমাণবিক যুদ্ধ আবহাওয়া সঙ্কটের আশঙ্কায়। গত জানুয়ারিতে আণবিক বিজ্ঞানীদের বুলেটিন মতে, ডোমসডের সময়ও এগিয়ে আসছে খুবই দ্রুত।

একসময় ট্রাম্প ন্যাটোকেও গালমন্দ করে এটিকে ‘অবসলিট’ তথা অচল বলে অভিহিত করেছেন। আসলে এটি ছিল ন্যাটোর প্রতি ট্রাম্পের এক ধরনের চোখ রাঙানি, যাতে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ায়। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল তা না করায় প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ট্রাম্প জার্মানি থেকে হাজার হাজার সৈন্য প্রত্যাহার করে সাড়ে পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েন করেন পোল্যান্ডে; যাতে রাশিয়াবিরোধী প্রতিরোধ আরো জোরদার হয়। এ ছাড়া ট্রাম্প আদেশ দেন দক্ষিণ চীন সাগরে উসকানিমূলক মার্কিন নৌবাহিনীর প্রহরা অব্যাহতভাবে বাড়িয়ে তুলতে। সেই সাথে জাপান, গুয়াম, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় মোতায়েন করা হয় ২৩ হাজার মার্কিন সেনা। ২০১৯ সালে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হয় আরো এক হাজার ৪০০ মার্কিন সেনা। সোমালিয়ায় ও পশ্চিম আফ্রিকায় জোরদার করা হয় ড্রোন হামলা।

এর পরও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না বলেই মনে হয়। ট্রাম্পের যুদ্ধবাদী ভুল সামরিক নীতি আমেরিকা ও তার নিজের জন্য ভালো কিছু বহন করছে না। এ দিকে ৩ নভেম্বরের নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ততই ট্রাম্প ও তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেওর জন্য হতাশার পাল্লা ভারী হচ্ছে। বিষয়টি নির্বাচনে নিশ্চিতভাবে ভোটারদের বিবেচনার বিষয় হয়ে উঠছে। গণমাধ্যমে খবর হচ্ছে : আসন্ন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

আমেরিকান ভোটারদের সামনে এখন প্রশ্ন : ট্রাম্পকে নির্বাচিত করে বিশ্বের অন্তহীন যুদ্ধগুলো কি অব্যাহতভাবে চলতে দেবে, বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে আরোপিত মানবতাবিরোধী অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রক্রিয়াকে কি অব্যাহত রাখা হবে, কিংবা আমেরিকার ব্রিঙ্কম্যানশিপ কি চালু রাখা হবে, স্নায়ুযুদ্ধের বিভাজনকে কি ফিরিয়ে আনা হবে, ট্রাম্পের ভুল নীতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে একটি গর্বিত জাতি করে তোলার পরিবর্তে কি পরিণত করা হবে একটি মিলিটারি-ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স? না এর পরিবর্তে বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের ভোট দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে আনবে বিদেশে সেনা মোতায়েনের নীতি থেকে এবং অন্তহীন যুদ্ধগুলোর অবসান ঘটানোর সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে এবং সেই সাথে উত্তর কোরিয়াসহ অন্যান্য দেশের সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে জিইয়ে রাখতে?

আমেরিকান ভোটারদের কাছে এটি স্পষ্ট : ট্রাম্পের লেগাছি হচ্ছে অব্যাহত আগ্রাসন ও অন্তহীন যুদ্ধগুলোকে অন্তহীন রাখা। তবে বিবেকবান আমেরিকান ভোটারদের উপলব্ধি হচ্ছে : ট্রাম্পের বিদেশনীতির একটাই দিক হচ্ছে আমেরিকা সাম্রাজ্যকে অস্তমিত হওয়ার দিকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us