জারতন্ত্রের পতন এবং অক্টোবর বিপ্লব : একটি বিশ্লেষণ
জারতন্ত্রের পতন এবং অক্টোবর বিপ্লব - ছবি সংগৃহীত
এক শ’ বছর আগে ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় বলশেভিক পার্টির নেতা ভি আই লেনিনের নেতৃত্বে অক্টোবর বিপ্লব ঘটেছিল। রাশিয়ায় জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে ১৯১৭ সালের ২৫ অক্টোবরে সূচিত হয়েছিল বলে পৃথিবীর প্রথম সফল সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবটি ‘অক্টোবর বিপ্লব’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। নতুন গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী পড়ে ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর। তাই নভেম্বর বিপ্লব হিসেবেও তা পরিচিত। কাকতালীয়ভাবে রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব এবং বাংলাদেশে সৈনিক-জনতার অভ্যুত্থান ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বিভিন্ন যুগে মানবজাতির ওপর চেপে বসা শোষণ-বঞ্চনা-বৈষম্যের অবসানের লক্ষ্যে সমাজের নিপীড়িত শ্রেণী বিপ্লবী অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছে। রোমে অভিজাত শ্রেণীর দাস নিপীড়নের বিরুদ্ধে স্পার্টাকাসের বিদ্রোহ, ফ্রান্সে সর্বহারা শ্রেণীর প্যারি কমিউন ছাড়াও বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লাঞ্ছিত-বঞ্চিত শ্রেণী লড়াই-সংগ্রাম করেছে। কিন্তু লেনিনের নেতৃত্বে নভেম্বর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে প্রথমবারের মতো সর্বহারা শ্রেণীর সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পেট্রোগ্র্যাড (সেন্ট পিটার্সবার্গ) শহরে ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক পার্টির এই সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সূচনা করেছিল বিপ্লবী শ্রমিক-জনতা এবং সৈনিকরা। সৈনিকদের বেশির ভাগ ছিল রাশিয়ার গরিব কৃষক শ্রেণী থেকে আগত। এক অর্থে তারা ছিল সেনা উর্দি পরা কৃষক। এ ছাড়া পেট্রোগ্র্যাডের শ্রমিক-সৈনিক অভ্যুত্থান নাড়া দিয়েছিল পুরো রাশিয়াকে। অভ্যুত্থানে রাশিয়ার গরিব কৃষকরা যোগ দিয়েছিল বিপুল সংখ্যায়।
১৯১৭ সালে রাশিয়ার তিন-চতুর্থাংশ মানুষ নিরক্ষর ছিল। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের কারণে অতি অল্প সময়ের মধ্যে রাশিয়া থেকে নিরক্ষরতা চিরদিনের মতো বিদায় নেয়। দ্রুত উন্নত হতে থাকে জনগণের জীবনযাত্রার মান। বর্তমান বিশ্ব সমাজতন্ত্র ও বিশ্ব পুঁজিবাদের মধ্যে ভাবাদর্শীয় ও রাজনৈতিক সংগ্রামের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে গণতন্ত্রের প্রশ্ন। বুর্জোয়া মতাদর্শী ও শোধনবাদীরা সমাজতান্ত্রিক দেশ তথা ঔপনিবেশিক জোয়াল থেকে মুক্ত রাষ্ট্রগুলোর ওপর নিজেদের গণতন্ত্রের আদর্শ চাপিয়ে দিতে চায়, দৃষ্টান্ত হিসেবে তারা তুলে ধরে পুঁজিবাদী সমাজকে, যেখানে সমস্ত বাহ্য ‘স্বাধীনতাই’ শেষ বিচারে শাসক সংখ্যালঘু, সর্বাগ্রে বৃহৎ একচেটিয়ার স্বার্থাধীন। এ নিদর্শন মেহনতিদের কাজে লাগে না। সমাজতন্ত্রের আদর্শ হলো, সংখ্যালঘিষ্ঠের জন্য গণতন্ত্র নয়, সাধারণভাবে গণতন্ত্র নয়, মেহনতিদের জন্য গণতন্ত্র, সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র। সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্রের অর্থ, তার আধেয় হলো দেশের সমস্ত সামাজিক প্রক্রিয়ার পরিচালনায় ব্যাপক জণগণের অংশগ্রহণ। সমাজতান্ত্রিক সমাজের গণতন্ত্র প্রকাশ পায় সোভিয়েত নাগরিকদের রাজনৈতিক অধিকার ও ব্যক্তি-স্বাধীনতায়। মার্কসবাদ ও লেনিনবাদ বলে যে, গণতন্ত্র শুধু একটা শ্রেণিগত ধারণা। যেমন সাধারণভাবের কোনো স্বাধীনতা হয় না, তেমনি সাধারণভাবে কোনো গণতন্ত্রও হয় না। সোভিয়েত দেশেই প্রথম এমন গণতন্ত্রের উদ্ভব ও প্রতিষ্ঠা হয়, যা মেহনতিদের স্বার্থের উপযোগী। অক্টোবর বিপ্লবে জন্ম নেয়া সোভিয়েত ক্ষমতা হলো জনগণের ক্ষমতা, জনগণের জন্য ক্ষমতা।
১০ অক্টোবর বলশেভিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির গোপন অধিবেশনে সশস্ত্র অভ্যুত্থানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন লেনিন। এর ছয় দিন পর কেন্দ্রীয় কমিটির আরেকটি অধিবেশন হয় লেনিনের সভাপতিত্বে। লেনিন এতে সশস্ত্র অভ্যুত্থানের পক্ষে বক্তব্য রাখেন। ওই অধিবেশনে সশস্ত্র অভ্যুত্থানের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কেন্দ্রীয় কমিটি পেট্রোগ্র্যাড সোভিয়েতে গঠন করে বৈপ্লবিক সামরিক কমিটি। পেট্রোগ্র্যাড সোভিয়েতের সভাপতি ছিলেন ট্রটস্কি। ৭ নভেম্বর ১৯১৭ বলশেভিক পার্টি পেট্রোগ্র্যাডে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কেরেন্সকি পালিয়ে যান। ওই সশস্ত্র বিপ্লবে কোনো রক্তপাত হয়নি। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিকরা সরকার গঠন করে। বুর্জোয়াদের বহুল ব্যবহৃত গতানুগতিক মন্ত্রিসভা শব্দটি লেনিন বর্জন করেন। তিনি তার মন্ত্রিসভার নামকরণ করেন ‘পিপলস কমিশার্স’। তিনি হন এর সভাপতি। লেনিন একাধিকবার বলেছেন, সমাজতন্ত্র প্রলেতারিয়েতের শ্রেণী-সংগ্রামের ভাবাদর্শ হওয়ায় তা ভাবাদর্শের উদ্ভব, বিকাশ ও সংহতির সাধারণ শর্তের অধীন, অর্থাৎ তার ভিত্তিস্বরূপ মানবিক জ্ঞানের সমস্ত মালমসলা, বিজ্ঞানের উচ্চ বিকাশ ধরে নেয়া হয় তাতে, দাবি করে তা বৈজ্ঞানিক কাজ। মানবজাতির সঞ্চিত সমস্ত মানসিক সম্পদ আত্মস্থ করার লক্ষ্যে চালায় চিন্তার সর্বাত্মক সমালোচনামূলক বিচার। এ কাজটা ছাড়া বৈজ্ঞানিক ভাবাদর্শ হিসেবে সমাজতন্ত্র সম্ভব হতো না। প্রলেতারীয় ভাবাদর্শের বৈজ্ঞানিক চরিত্রের ফলে অতীতের প্রগতিশীল মানসিক উত্তরাধিকারের প্রতি তার একটা সযত্ন মনোভাব পূর্বনির্ধারিত হয়ে যায়। গর্ববোধ নিয়েই লেনিন লিখেছিলেন, বিপ্লবী প্রলেতারিয়েতের ভাবাদর্শ হিসেবে মার্কসবাদ তার বিশ্ব ঐতিহাসিক তাৎপর্য অর্জন করেছে এ জন্য যে, মার্কসবাদ বুর্জোয়া যুগের অতিমূল্যবান সুকৃতিগুলোকে আদৌ বর্জন করেনি, বরং মানবিক চিন্তা ও সংস্কৃতির দুই সহস্রাধিক বছরের বিকাশে যা কিছু মূল্যবান ছিল তা আত্মস্থ করেছে ও ঢেলে সাজিয়েছে। মার্কসের মতো লেনিনও মনে করতেন, সমাজতান্ত্রিক ভাবাদর্শ প্রকৃতিগতভাবেই একটা বিচারমূলক ও ‘বৈপ্লবিক তত্ত্ব’। আর এই শেষ গুণটা সত্যিই পুরোপুরি ও তর্কাতিতরূপে মার্কসবাদের মজ্জাগত। এর অর্থ হলো, সমাজতান্ত্রিক ভাবাদর্শ সৃজনশীল এবং তা চিন্তার স্রোতহীনতা সহ্য করে না, পরিবর্তমান বাস্তবতার উপযোগী নতুন নতুন সিদ্ধান্ত ও প্রতিপাদ্যে তা ক্রমাগত সমৃদ্ধ হয়। কেবল এরূপ ভাবাদর্শই বৈপ্লবিক সংগ্রামে ও নবজীবন নির্মাণে নির্ভরযোগ্য দিশারি হতে পারে। দুনিয়াকে বদল করতে গিয়ে লোকে নিজেদের স্বভাবকেই বদলে দেয়।
নভেম্বর বিপ্লব যখন সম্পন্ন হয় তখনো প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। এই যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে। অসংখ্য মানুষকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর ফলে কলকারখানা ও কৃষিতে কাজের মানুষের অভাব দেখা দিয়েছে। অস্ত্রশস্ত্রের অভাব, মন্ত্রীদের দুর্নীতি, রাষ্ট্রযন্ত্রের বিশৃঙ্খল অবস্থা, জারের দরবারে মূর্খ রাসপুটিনের অপ্রতিহত প্রভাব ইত্যাদির ফলে রাশিয়ায় ঘনিয়ে আসে এক ভয়াবহ সঙ্কট। যুদ্ধেও জারের সেনাবাহিনীর হার হচ্ছিল। এই সার্বিক অরাজক অবস্থার আসল চাপটা পড়েছিল রাশিয়ার শ্রমিক ও কৃষকদের ওপর। বলতে গেলে জারের শাসনব্যবস্থা নিজ থেকেই ভেঙে পড়েছিল। শান্তির জন্য মানুষ ব্যাকুল হয়ে উঠেছিল। এই পরিস্থিতিতেই রাশিয়াতে বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব সংঘটিত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি এই বিপ্লবে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব মানুষের শান্তির আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছিল। জারের আমলে শুরু হওয়া সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বযুদ্ধ অব্যাহত রাখে বুর্জোয়া সরকার। অথচ রাশিয়ার মানুষের চাওয়া ছিল যুদ্ধের অবসান। এ পরিস্থিতি নভেম্বর বিপ্লবের প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করে দেয়।
একটা দেশে বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন হলে সে দেশে বিপ্লবের পরবর্তী স্তর হয় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব। তাই রাশিয়ায় তখন থেকে শুরু হয়েছিল সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের স্তর। ভারতের সুব্রত বল লিখেছেন, ‘সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের স্তর শুরু হওয়া, সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব শুরু হওয়া এবং সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সামাজিক দায়িত্বগুলো শুরু হওয়া এক জিনিস নয়। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের স্তরের সূচনা নির্ধারিত হয় বুর্জোয়া শ্রেণীর রাষ্ট্রক্ষমতা দখল দ্বারা, আর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সূচনা নির্ধারিত হয় শ্রমিক শ্রেণীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কায়েমের দ্বারা। শ্রমিক শ্রেণীর সেই সরকার কখন সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সামাজিক দায়িত্বগুলোর রূপায়ণ শুরু করতে পারছে তার দ্বারা নয়। যদিও কৃষিপ্রধান রাশিয়ার বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলে ১৯১৭ সালের নভেম্বর বিপ্লবের ফলে সর্বশ্রেণীর কৃষকের যৌথ ক্ষমতা কায়েম হয়েছিল এবং যদিও দীর্ঘ এক বছর যাবৎ গ্রামের বিপ্লব বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক স্তরের সীমা অতিক্রম করেনি। তবু যেহেতু শ্রমিক শ্রেণী একচ্ছত্রভাবে রাশিয়ায় কেন্দ্রীয় অর্থাৎ নির্ধারক ক্ষমতা দখল করে নিতে পেরেছিল, তাই বলা হয় যে অক্টোবর বিপ্লব ছিল সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব বা সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সূচনা।’
নভেম্বর বিপ্লবের সময়ে রাশিয়া ছিল কৃষিপ্রধান দেশ। জনসাধারণের ৮০ শতাংশ ছিল কৃষক। তাই কৃষকের সমস্যার সমাধান ছাড়া দেশের উন্নতি ছিল অসম্ভব। কৃষি ছিল অত্যন্ত পশ্চাৎপদ এবং তাতে ভূমিদাস প্রথার চিহ্নিত সামন্তবাদী অবশেষগুলো বিদ্যমান ছিল। গ্রামাঞ্চলে বিদ্যমান ক্ষুদ্র পণ্য উৎপাদন ইউনিটগুলো ছিল সমাজতন্ত্র বিনির্মাণের বাধা। এক কথায় রাশিয়া তখন ছিল চাষাদের দেশ। পুরো দেশটাই ছিল এই অবস্থার প্রভাবাধীন। হয়তো এ জন্যই সৈনিকদের বলা হতো উর্দি পরা কৃষক অর্থাৎ সামরিক পোশাক পরলেও তারা কৃষক। একইভাবে শিল্প শ্রমিকদের নতুন প্রজন্মের বেশির ভাগই ছিল কারখানার পোশাকে কৃষক। ই এইস কারের মতে, ‘কৃষকদের একটা ধূসরপুঞ্জ রাতারাতি পরিবর্তিত হয়েছে কারখানা শ্রমিকদের ধূসরপুঞ্জে।’ রাশিয়ার এই ব্যাপক পশ্চাৎপদতা থেকে উদ্ভূত কয়েকটি কারণ নভেম্বর বিপ্লবের বিজয়কে এগিয়ে দিয়েছে। নভেম্বর যে কর্তব্যের সম্মুখীন হয় তা ছিল অপেক্ষাকৃত দুর্বল এবং কম সংগঠিত বুর্জোয়া শ্রেণীকে উৎখাত করা। দ্বিতীয়ত লেনিনের ভাষায়, ‘রাশিয়ার পশ্চাৎপদতা এক অদ্ভুত উপায়ে সর্বহারার বুর্জোয়াবিরোধী বিপ্লবকে কৃষকের জমিদারবিরোধী বিপ্লবের সাথে মিশিয়ে দেয়।’
অক্টোবর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বিশ্বে ধ্বনিত হয়েছে প্রলেতারিয়েতের ‘আন্তর্জাতিক জয়গান’; কেউ করে দেবে নাকো উদ্ধার, ঈশ্বর-রাজা-বীর ভক্তিতে, আজাদি সে আমাদের আপনার, হাতে করে জেনে নেবো শক্তিতে। বিপ্লবী সংগ্রাম, সমাজতন্ত্র নির্মাণ মানুষকে শুধু একের পর এক অর্থনৈতিক শোষণ ও সামাজিক পীড়ন থেকেই নয়, মুক্ত করেছে স্বার্থপরতা, দাসসুলভ পাষণ্ডতা, নীচতা থেকেও, যা যুগের পর যুগ মানুষের মনে গেঁথে দিয়েছিল ব্যক্তি মালিকানার সমাজ। মানুষ আত্মিক সম্পদে যত ধনী হয়, ততই বেশি সে দেয় সমাজকে, ততই সামাজিক স্বার্থ তার কাছে আপন, ততই উপভোগ্য তার নিজের ব্যক্তিগত জীবন। দুনিয়ার সবচেয়ে মানবিক সমাজব্যবস্থার নির্মাতাদের নৈতিক আদল থেকে মানবতা অবিচ্ছেদ্য। সমাজতান্ত্রিক জীবনধারায় শ্রমজীবী মানুষ সমস্ত বৈষয়িক ও আত্মিক সম্পদের স্রষ্টা, সে নিজেই একটা উচ্চতম সামাজিক
মূল্য। সোভিয়েত জীবনযাত্রার ধরনে লোকেরা লালিত হয় উচ্চ রাজনৈতিক-নৈতিক গুণে, গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে নতুন সম্পর্ক, নতুন নৈতিক শীল, যা কমিউনিজমের স্বার্থের সেবায় নিয়োজিত, যা দেখে মানবজাতি হয়ে ওঠে মানবোচিত। ১৯১৭ সালের বিপ্লব ছিল রক্তপাতহীন। কিন্তু উৎখাত হওয়া শাসক-শোষক শ্রেণী-পরবর্তী সময়ে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ শুরু করে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। বিদেশী সাম্রাজ্যবাদীদের মদদপুষ্ট এই শাসক-শোষক শ্রেণী অবশেষে চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়।
লেখক : কলামিস্ট ও গবেষক