ভারতের হাতে তাইওয়ান কার্ড : কী করবে চীন?

লি কিংকিং | Oct 14, 2020 09:18 am
সু-৩৫ জঙ্গি বিমান

সু-৩৫ জঙ্গি বিমান - ছবি : সংগৃহীত

 

হিন্দুস্তান টাইমস সোমবার একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে, যেটার শিরোনাম হলো ‘চীনের জন্য বার্তা: ভারত স্বাধীন’। এই সম্পাদকীয়তে ভারতের কিছু মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের তাইওয়ান দ্বীপের ‘জাতীয় দিবস’ উদযাপনের বিষয়টিকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। নিবন্ধে বলা হয়েছে, “ভারত একটি গর্বিত গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে স্বাধীন ও প্রাণবন্তু মিডিয়া রয়েছে”। এতে একই সাথে চীনা পক্ষের প্রতিকূলতা এবং তথাকথিত আধিপত্য ও মিডিয়ার দমনের বিষয়টিকে এক করে ফেলা হয়েছে।

এইচটি সম্পাদকীয়তে একটি মৌলিক সত্য এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে : চীনের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ভারত স্বাধীন নয়। চীন অন্য দেশকে তার সীমারেখা লঙ্ঘনের অনুমতি দেয় না, এবং এটার সাথে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার কোন সম্পর্ক নেই”।

ভারত এক-চীন নীতির স্বীকৃতি দিয়েছে, এবং চীন-ভারত কূটনীতিক সম্পর্কের এটাই মূল ভিত্তি। কিছু ভারতীয় মিডিয়া তাইওয়ানের ‘জাতীয় দিবস’ উদযাপনের মাধ্যমে এক-চীন নীতিকে পদদলিত করেছে, এবং চীনা দূতাবাস যখন বিষয়টি উল্লেখ করেছে, তখন তারা তাদের এই ভুল অবস্থানকে সংশোধন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

চীন-ভারত সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে কিছু ভারতীয় মিডিয়া তাইওয়ান প্রশ্নটি ফুলিয়ে তোলার চেষ্টা করছে। সেপ্টেম্বরে, ভারতের একটি মিডিয়া নিউজ লাইন আইএফই একটি ভুয়া খবর প্রকাশ করে দাবি করে যে, তাইওয়ান পিপলস লিবারেশান আর্মির একটি সু-৩৫ জঙ্গি বিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে, যেই খবরটাকে দ্রুত প্রত্যাখ্যান করা হয়। ভারতীয় মিডিয়াকে তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে, এবং কিছু ভারতীয় অভিজাত ব্যক্তি নিজ থেকেই তাইওয়ান প্রশ্নে কূটকৌশল খেলা শুরু করেছেন। তারা একতরফাভাবে চীন-ভারত সম্পর্ককে বিষিয়ে তুলছে।

কোনো সরকারই তাদের সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে অন্যান্য দেশকে তাচ্ছিল্য করার সুযোগ দেবে না। চীনা মিডিয়া যদি প্রকাশ্যে উত্তরপূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন করে, বা ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলোর স্বপক্ষে লেখা প্রকাশ করে, তাহলে নয়াদিল্লী কিভাবে তার প্রতিক্রিয়া জানাবে? ভারতের প্রতিক্রিয়া সেখানে চীনের চেয়ে কোনোভাবেই কম হবে না। যে সব কণ্ঠস্বর অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে উসকানি দিচ্ছে, তাদের কি বিরোধিতা করা উচিত নয়?

ভারতের কিছু মিডিয়াকে অবশ্যকেই মনে করিয়ে দিতে হবে যে, এক-চীন নীতি নাড়িয়ে দেয়ার স্বাধীনতা তাদের নেই। ভারত নিজেদেরকে ‘গর্বিত গণতান্ত্রিক দেশ’ মনে করে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর দৃষ্টিকোণ থেকে চীনকে দেখে থাকে। চীন-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় ওয়াশিংটন তাইওয়ান কার্ডকে আরো বেশি ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। ভারতের কিছু ব্যক্তিও সেই ওয়াশিংটনের পথেই হাঁটছে, এবং পরিস্থিতি থেকে সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছে।

নয়াদিল্লী বিশ্বাস করে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন অর্জন করেছে। সে কারণে তারা তারা চীনের প্রতি উসকানি বাড়াচ্ছে, এবং এমনকি চীনের সীমারেখাকে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নির্ভরযোগ্য নয়, অন্যদিকে চীনের পাল্টা হামলা অনেক মজবুত। ভারত আগুন নিয়ে খেলছে, এবং শেষ পর্যায়ে উভয় দিক থেকেই তাকে হতাশায় পড়তে হবে।


সূত্র : গ্লোবাল টাইমস


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us