লিবিয়ার যে ক্ষতি করছেন হাফতার
হাফতার ও ট্রাম্প - ছবি সংগৃহীত
ইরাক, ইয়েমেন, সিরিয়ার মতো লিবিয়া নামের মুসলিম দেশটিও অনেক দিন ধরে জ্বলছে এক অন্তহীন যুদ্ধের আগুনে। সে আগুনে জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে গেছে ও যাচ্ছে সমৃদ্ধ দেশটি। রাজনৈতিক অধিকার ও বাকস্বাধীনতা না থাকলেও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের অভাব ছিল না দেশটিতে।
১৯৬০-৭০-এর দশকে তেল পাওয়ার আগে লিবিয়া তেমন সচ্ছল দেশ ছিল না। তবে তেলসম্পদ আবিষ্কৃত হওয়ার পর দেশটিতে সর্বাত্মক উন্নয়ন শুরু হয়। সেই উন্নয়নযজ্ঞে অংশগ্রহণের মতো লোকের অভাবে অন্যান্য দেশের লাখ লাখ লোকজন আনা হয়। আমাদের বাংলাদেশেরও কয়েক লাখ সাধারণ লোক এবং ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার তখন লিবিয়ায় কাজ করতে যান।
লিবিয়া দেশটি উত্তর আফ্রিকায়, ভূমধ্যসাগরের তীরে এবং মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোর কাছাকাছি অবস্থিত। লিবিয়ার আয়তন প্রায় ১০ লাখ বর্গমাইল, অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রায় ২০ গুণ বড়, অথচ লোকসংখ্যা এক কোটিরও কম, মাত্র ৭০-৮০ লাখ। ১৫৫০ থেকে ১৯১০ সাল পর্যন্ত লিবিয়া ছিল তুরস্কের একটি প্রদেশ। একজন স্থায়ীভাবে বসবাসকারী তুর্কি তুরস্ক খিলাফতের প্রতিনিধি হিসেবে লিবিয়া শাসন করতেন। যেহেতু তখন তেল পাওয়া যায়নি, তাই লিবিয়া ছিল বেশ গরিব। যদিও আয়তনে অনেক বড়, কিন্তু এর বেশির ভাগই ছিল মরুভূমি। লোকসংখ্যা ছিল মাত্র এক লাখের মতো। ১৯১২ সালে তুরস্কের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগে দেশটি দখল করে নেয় ইতালি। তুরস্ক প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ইতালি জার্মানির পক্ষ অবলম্বন করে। এতে অক্ষশক্তি পরাজিত হলে ইতালি ১৯৪৩ সালে মিত্রশক্তির কাছে লিবিয়া হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়।
মিত্রশক্তি ১৯৫১ সালে দেশটিকে স্বাধীনতা দেয়। তারা লিবিয়াকে একজন ধর্মীয় গোত্রীয় নেতার কাছে শাসনতান্ত্রিক রাজতন্ত্র হিসেবে ছেড়ে আসে। ১৯৬০ সালের দিকে লিবিয়ার দক্ষিণাংশে প্রথম তেলের খনি আবিষ্কার করা হয়। ১৯৬৯ সালে কর্নেল গাদ্দাফি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন। তেলসম্পদকে কাজে লাগিয়ে সামরিক শাসক গাদ্দাফি অন্যান্য আরব দেশের মতো নিজের দেশকে আধুনিকভাবে গড়তে শুরু করেন। ১৯৬৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪২ বছর স্বৈরশাসক হিসেবে শাসন করেন গাদ্দাফি। তার আমলে ওই দেশের জনগণের জাগতিক অভাব বলতে তেমন কিছু ছিল না। কিন্তু জগতের সব স্বৈরশাসকের মতো লিবিয়ার স্বৈরশাসক কর্নেল গাদ্দাফিও ভুলে গিয়েছিলেন, মানুষ নামের প্রাণীটি শুধু ভাত-কাপড় ও অন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা পেয়েই তুষ্ট থাকে না। তারা ভাবতে জানে, বলতে জানে। আর তাই তারা ভাবনাগুলো বলতে চায়, প্রকাশ করতে চায়। কিন্তু গাদ্দাফির শাসনামলে লিবিয়ায় জনগণের এ আকাক্সক্ষা পূরণের বিন্দুমাত্র সুযোগ ছিল না।
তবে তেলের কারণে অঢেল সম্পদের সরবরাহ হওয়ায় মানুষের মৌলিক চাহিদা, যথা- অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, কর্মসংস্থান, পানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদির অনেক কিছুই ফ্রি সরবরাহ করত সরকার। এমনকি বিয়ে করার জন্য পর্যন্ত নাগরিকদের প্রয়োজনীয় অর্থ দেয়া হতো। গাদ্দাফি হয়তো ভাবতেন, মানুষ তো সবই পাচ্ছে, তাদের আর কী চাই? তিনি বুঝতেন না অথবা বুঝতে চাইতেন না, মানুষ মানুষই। অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসার বাইরেও তাদের আরো কিছু মৌলিক চাহিদা আছে। তারা বাকস্বাধীনতা চায়, জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার অধিকার চায়, সরকার ও দেশ পরিচালনায় ন্যায্য অংশীদারিত্ব চায়। এসবই মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা।
স্বৈরশাসক গাদ্দাফি অনেক জনকল্যাণমূলক কাজ করেছেন, কিন্তু দেশবাসীর স্বাভাবিক মানবিক চাহিদাগুলোর প্রতি কোনো তোয়াক্কাই করেননি। এমনকি দেশের নাগরিকরা দেশে বা বিদেশে একটু স্বাধীন চিন্তা করলেই তাকে চিরতরে শেষ করে দেয়া হতো। দেশে কোনো কথা বলার সুযোগই ছিল না, বিদেশে অবস্থানকালেও যদি কেউ কোনোভাবে সরকারের সমালোচনা করত, দেশে যাওয়ার সাথে সাথে বিমানবন্দর থেকেই তাকে জেলে যেতে হতো। নানা অকথ্য অত্যাচারে জর্জরিত হতে হতো। অনেককে বিদেশেই গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শেষ করে দেয়া হতো। লন্ডনে নিজেই এ রকম অনেক ঘটনা দেখতে পেয়েছি।
গাদ্দাফি মনে করছিলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী। সব স্বৈরশাসকই একই চিন্তা করে থাকেন। অথচ ইতিহাসের শিক্ষা হচ্ছে, কোনো শাসক যখন দীর্ঘ,দিন শাসন করে এবং যত জনকল্যাণমূলক কাজ করুক না কেন, একসময় জনগণ মুখ ফিরিয়ে নেয়, যদিও ক্ষমতার মোহে অন্ধ ও চাটুকার পরিবেষ্টিত স্বৈরশাসক সেটা বুঝতে পারেন না।
ইতিহাসের নিয়মে বল একসময় জনগণের কোর্টে যায়। লিবিয়ায়ও গেছে। দেশটির জনগণ সময়-সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। ইতোমধ্যে পাশের দেশ তিউনিশিয়াতে বেকারত্বের যন্ত্রণা সইতে না পেরে এক যুবক প্রকাশ্য দিবালোকে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করল। ওই দেশে দীর্ঘ প্রায় ২৩ বছর ধরে স্বৈরশাসক যায়ন আল আবেদিন বেন আলি রাজত্ব করে আসছিলেন। ওই যুবকের আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে প্রতিবাদ, অসহযোগ শুরু হয়। তাতে বাধ্য হয়ে স্বৈরশাসক বেন আলি সপরিবারে সৌদি রাজতন্ত্রের কাছে আশ্রয় নেয়। এভাবে তিউনিশিয়া দেশটিতে সরকার পরিবর্তন হয়ে যায়। জনগণ স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি পায়।
গণবিপ্লবের এ আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে আরব বিশ্বের অন্যত্রও। মিসর লিবিয়া ইয়েমেনসহ আরো কয়েকটি দেশে দীর্ঘ দিনের স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও আন্দোলন শুরু হয়। মিসরের হোসনি মোবারক, ইয়েমেনের সালেহর পতন হয়। লিবিয়াও দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। আবালবৃদ্ধবনিতা রাস্তায় নেমে আসে। এই আন্দোলনকে বলা হয় ‘আরব বসন্ত’।
আরব বসন্তের হাওয়া পেয়ে আরবের জনগণ আরো কিছু স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে মাঠে নামে। মিসর, ইয়েমেন ও লিবিয়া- এ তিন দেশে জনগণের আন্দোলন জমে ওঠে। এসব দেশের প্রতিটির স্বৈরশাসক ২০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত শাসন করে আসছেন। হয় সেনাবাহিনী থেকে অথবা বংশানুক্রমে রাজা-বাদশাহ কর্তৃক আরব দেশগুলো শাসিত হচ্ছে। এসব স্বৈরশাসক পশ্চিমাদের তল্পিবাহক হয়ে টিকে আছেন। তারা দেশের সম্পদকে জনগণের সম্পদ মনে না করে ইচ্ছামতো লুটপাট এবং পশ্চিমাদের খেদমতে ব্যয় করছেন। তাদের দেশে জনগণের ভোটাধিকার ও মানবাধিকার নেই।
লিবিয়ায় কর্নেল গাদ্দাফি প্রায় ৪২ বছর ক্ষমতা আঁকড়ে ছিলেন। মিসর ও ইয়েমেনের পর লিবিয়ায় আন্দোলন শুরু হয়। ন্যাটো জোটের দেশগুলো, বিশেষ করে ফ্রান্স, এগিয়ে আসে লিবিয়ার জনগণের সাহায্যে। শেষ পর্যন্ত গাদ্দাফিকে পলাতক অবস্থায় মিসাইলের সাহায্যে হামলা করে আহত করা হয়। উত্তেজিত জনতা ড্রেনে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা তাকে উঠিয়ে মেরে ফেলে। এটিই হলো দীর্ঘ দিনের এক স্বৈরশাসকের শেষ পরিণাম। এমনই হয়।
এককালের ধনী দেশ ও সচ্ছল জনগণ ২০১১ সালে গাদ্দাফির পতনের পর থেকে নিজেদের মধ্যে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত। ফ্রান্সসহ ন্যাটো জোটের দেশগুলো গাদ্দাফিকে হত্যা করল ঠিকই, কিন্তু তার পর গত ৯ বছর গৃহযুদ্ধ, লুটপাট, হত্যা ছাড়া সে দেশের জনগণ কিছুই পেল না। বরং চরম দুর্ভোগে কাটাচ্ছে।
এভাবে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীরা একটি উন্নত মুসলিম দেশকে ধ্বংস করে ছাড়ল। সেভাবে ইতোমধ্যে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আফগানিস্তান, ইরাককে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে এবং ইরাকে স্বৈরশাসক সাদ্দামকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মেরেছে। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর উদ্দেশ্যই হলো তাদের ও তাদের ক্লায়েন্ট দেশের কথামত চলতে হবে, নতুবা কোনো মিথ্যা অজুহাতে শেষ করে দেয়া হবে।
লিবিয়ায় কর্নেল গাদ্দাফির পতনের পর গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার এখন সে দেশে সোনার হরিণ। এককালের ধনী দেশ এখন একটি গরিব দেশের চেয়েও করুণ অবস্থায়। না আছে পানি বিদ্যুৎ, না আছে চোখের ঘুম। হানাহানি আর মারামারি নিত্যদিনের সঙ্গী। আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছুই নেই। আর এ সুযোগে বাইরের শক্তিগুলো নিজ নিজ স্বার্থে বিভিন্ন গ্রুপকে ব্যবহার করছে।
২০১৫ সালে জাতিসঙ্ঘ উদ্যোগ নিয়ে একটি ঐক্যজোটের সরকার প্রতিষ্ঠা করে ইলেকশানের ব্যবস্থা করে। একটি ইলেকশান হয় যা জাতিসঙ্ঘ কর্তৃক স্বীকৃত। দেশটির আরেক পক্ষ নানা কারণে সেই ইলেকশানের ফলাফল গ্রহণ করতে পারেনি। আগিলা সালেহ এক দল নিয়ে সংসদ গঠন করে লিবিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তবরুক এলাকায়। সংসদ গঠন করে নিজে স্পিকার হয়ে খলিফা হাফতারকে পূর্বাঞ্চলের সেনাপ্রধান বানালেন।
জাতিসঙ্ঘ-মনোনীত সরকারের নেতৃত্বে আছেন ফায়েজ সাররাজ। অন্য দিকে সালেহের সমর্থন নিয়ে খলিফা হাফতার নামক একজন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা সামরিকপ্রধান। পূর্বাঞ্চলে বেনগাজিতে খলিফা হাফতারের নিজস্ব বাহিনী রয়েছে, যা এলএনএ নামে পরিচিত।
হাফতার জীবন শুরু করে সৈনিক হিসেবে। গাদ্দাফি তৎকালীন রাজা ইদ্রিসকে উৎখাত করার সময় তার সাথে ছিলেন হাফতার। কর্নেল গাদ্দাফির অনেক বিশ্বস্ত ছিলেন হাফতার। ১৯৭৩ সালে ইসরাইলের সাথে যুদ্ধে মিসরের অধীনে সিনাইয়ে যুদ্ধ করেছেন। ১৯৮৭ সালে প্রতিবেশী দেশ শাদের সাথে যুদ্ধে প্রায় ৩০০ অফিসার ও সৈন্যসহ শাদ সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী হয়ে জেলে ছিলেন। জেলে বসেই অন্যান্য অফিসারের সাথে কর্নেল গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্লান করেন। এই খবর গাদ্দাফি জানার পর আর তাদের জেল থেকে মুক্ত করে দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ নেননি।
সুযোগসন্ধানী আমেরিকা এই খবর জানার পর নিজ স্বার্থে গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার কাজে ব্যবহার করার জন্য শাদের সাথে আলোচনা করে তাদেরকে মুক্ত করে আমেরিকায় নিয়ে যায়। সেখানে আরো ট্রেনিং দেয়। তার পর ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় লিবিয়াতে পাঠিয়ে গাদ্দাফিকে উৎখাত করা হয়। অবশ্য তিনি একা নন, অন্যদেরও অবদান আছে।
জেনারেল হাফতার ত্রিপোলির কিছুটা ইসলামভাবাপন্ন সরকারের ঘোর বিরোধী। আরব স্বৈরশাসকদের খুব পছন্দনীয় তিনি। মিসর ও অন্যান্য দেশের ইসলামী আন্দোলন ও নেতাকর্মীদের উত্থান চান না, সে জন্য ফ্রান্স, রাশিয়া ও অন্যান্য পশ্চিমা নেতাদের খুব প্রিয় এই হাফতার।
হাফতার বর্তমানে লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের সেনাপ্রধান। তাকে সমর্থন দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক স্বৈরশাসক রাজপুত্র প্রিন্স মোহাম্মদ বিন যায়িদ, যিনি ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া ইসরাইলের সাথে প্রকাশ্যে সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। আরব আমিরাতের শাসক বিন যায়িদ, ফ্রান্স, রাশিয়া, সৌদি রাজপুত্র মোহাম্মদ বিন সালমান ও মিসরের স্বৈরশাসক সিসি হাফতারকে পুরো লিবিয়া দখলে সাহায্য করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হন। খলিফা হাফতারের মাধ্যমে প্রায় পুরো লিবিয়া দখল করে ত্রিপোলি সরকারকে উৎখাতের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন। ফায়াজ সাররাজের সরকার বাধ্য হয়ে ২০১৯ সালের নভেম্বরে ও ডিসেম্বরে তুরস্ক সরকারের সাথে সামুদ্রিক ও সামরিক চুক্তির মাধ্যমে সাহায্য চায়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সরকার চুক্তি অনুযায়ী সামরিক সাহায্য দেয়া শুরু করে, যে কারণে হাফতারের বাহিনী লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চল ও রাজধানী ত্রিপোলি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। ত্রিপোলি সরকার হাফতারের সৈন্যদেরকে পশ্চিমাঞ্চলে পরাজিত করে পূর্বাঞ্চলের তেলসমৃদ্ধ এলাকা সিরত ও জুফরা দখল করতে গিয়ে দেশী-বিদেশী, বিশেষ করে মিসরের সিসির পক্ষ থেকে চরমভাবে বাধা পায়। মিসর ও তুরস্কের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের উপক্রম ঘটে। জাতিসঙ্ঘের উদ্যোগে পরে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করা হয়।
এর আগে জার্মানি, ইইউ ও রাশিয়ার উদ্যোগে একাধিকবার সমঝোতা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রতিবারই হাফতার তার সাহায্যকারীদের প্ররোচনায় সেই সমঝোতা মানেননি।
বর্তমানে তুরস্ক, জিএনএ ও এলএনএ এবং হাফতারের সাহায্যকারী দেশগুলো যথা মিসর, আরব আমিরাত, রাশিয়া ও ফ্রান্স সবাই যুদ্ধবিরতি মেনে চলছে এবং জাতিসঙ্ঘের উদ্যোগে একটি সমঝোতায় উপনীত হওয়ার চেষ্টায় আছে। কারণ প্রতিটি পক্ষই উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছে যে, যুদ্ধের মাধ্যমে লিবিয়ার সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।
আমরা আশা করি, সবাই একমত হয়ে লিবিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবেন এবং লিবিয়া আবার একটি উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
লেখক : প্রবাসী সমাজসেবক