পুরুষ বন্ধ্যাত্ব নিয়ে এত গোপনীয়তা কেন?

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Oct 06, 2020 04:08 pm
পুরুষ বন্ধ্যাত্ব নিয়ে এত গোপনীয়তা কেন?

পুরুষ বন্ধ্যাত্ব নিয়ে এত গোপনীয়তা কেন? - ছবি সংগৃহীত

 

পাশ্চাত্যে জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান লাভ আইল্যান্ডে একবার প্রতিযোগী হয়েছিলেন ক্রিস হিউজ। গত কয়েক বছরে তার অন্ডকোষে চার দফা অপারেশন হয়েছে।

"আমার বয়স যখন ১৫, তখন থেকেই আমি অনুভব করতাম যে আমার বাঁদিকের অন্ডকোষে কিছু একটা সমস্যা রয়েছে। কিন্তু যেহেতু আমার তেমন কোনো অসুবিধা হচ্ছিল না তাই ব্যাপারটা উপেক্ষা করেছিলাম। সমস্যাটা ছিল ভারিকোসিল - অন্ডকোষে শিরা জমাট বেঁধে যাওয়া। "

পরে ক্রিস হিউজ এর চিকিৎসা করান। কিন্তু তার ডান দিকের অন্ডকোষে দেখা দেয় নতুন সমস্যা - যাকে বলে হাইড্রোসিল বা পানি জমে যাওয়া।

সেজন্য তাকে অপারেশন করাতে হয়। পরে ২০১৮ সালে টিভিতে সকালের অনুষ্ঠানে লাইভ ক্যামেরার সামনে অন্ডকোষ পরীক্ষার এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি।

যেহেতু এ নিয়ে তিনি অনেক দিন ধরে সমস্যায় ভুগছেন - তাই টিভির ওই অনুষ্ঠান তার কাছে তেমন কিছুই মনে হয়নি।

কিন্তু ক্রিস যা ভাবতে পারেননি তা হলো - ওই অনুষ্ঠানটি তারই ভাই বেন হিউজের জীবনে কী প্রভাব ফেলবে।

টিভিতে ভাইয়ের অনুষ্ঠান দেখে বেন নিজে তার অন্ডকোষ পরীক্ষা করলেন, এবং দেখতে পেলেন সেখানে একটা টিউমারের মতো কিছু হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার পর টিউমারটাতে ক্যান্সার ধরা পড়লো, ২০১৯এর জানুয়ারিতে তার অপারেশন করা হলো।

এর মধ্যে দিয়েই বেরিয়ে এলো আরেক সমস্যা।

অপারেশনের আগে বেন ঠিক করেছিলেন - তিনি একটি স্পার্ম ব্যাংকে নিজের শুক্রাণু জমা রাখবেন, যাতে পরে সমস্যা হলেও তিনি সন্তানের পিতা হতে পারেন।

তাতে দেখা গেল, বেনের দেহে টেস্টোস্টেরন হরমোন এতই কম যে- তা শুক্রাণু তৈরির জন্য যথেষ্ট নয়। তখন শুরু হলো আরেক চিকিৎসা।

আর এরই পাশাপাশি ক্রিস আর বেন ঠিক করলেন, তারা পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করবেন, তাদের উদ্বুদ্ধ করবেন যেন পুরুষরা নিজেদের উর্বরতার ব্যাপারটি সম্পর্কে সচেতন হন - যা নিয়ে তারা হয়তো আগে কখনোই ভাবেননি।

পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব কী?
সহজ কথায় পুরুষদের বন্ধ্যাত্বে মূল কারণ : বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ কম হওয়া।

ব্রিটিশ স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান এনএইচএসের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়, যে দম্পতিদের সন্তান হয় না, তাদের এক-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় এর কারণ হচ্ছে - স্বামীর শুক্রাণুর মান নিম্ন ও সংখ্যা কম হওয়া।

চিকিৎসকদের মতে, প্রতি মিলিলিটারে শুক্রাণুর সংখ্যা ১৫ মিলিয়ন বা দেড় কোটির কম হলেই প্রাকৃতিকভাবে গর্ভধারণে সমস্যা হতে পারে।

সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক গাইডলাইন অনুযায়ী প্রতি মিলিলিটারে ১৫ মিলিয়নের বেশি শুক্রাণু থাকলেই তাকে স্বাভাবিক বলা হয়।

যে দম্পতিরা সন্তান চাইছেন তাদের এক বছর চেষ্টার পরও গর্ভসঞ্চার না হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে বলা হয়।

কী কী কারণে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যেতে পারে?
বিজ্ঞানীরা এর একাধিক কারণ চিহ্নিত করেছেন । তবে, এটাও মনে রাখতে হবে যে অনেক রোগীর ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা কম হবার কারণ স্পষ্ট বোঝা যায় না।

ক্রিস হিউজ পুরুষের বন্ধ্যাত্বের ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে একটি প্রামাণ্য চিত্র তৈরি করেছেন।

এতে তিনি একটি পানশালায় বসে তারই বন্ধুদের প্রশ্ন করেছেন যে তাদের মতে কী কী শুক্রাণুর সংখ্যা ও স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

বন্ধুরা জবাবে উল্লেখ করেছেন বেশ কিছু কারণ - যেমন তাপমাত্রা, মাদক সেবন এবং অতিরিক্ত চাপা অন্তর্বাস পরার কথা।

এর কোনোটাই ভুল নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, বায়ুদূষণ থেকে শুরু করে জীবনযাপন পদ্ধতি পর্যন্ত অনেক কিছুই শুক্রাণুর স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

বিজ্ঞানীরা সাধারণভাবে যে কারণগুলোর কথা উল্লেখ করেন এর মধ্যে প্রধান ক'টি এখানে উল্লেখ করা হলো।

. পুরুষের দেহে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, বা কম হরমোন উৎপাদন।

. ক্লাইনফেল্টার সিনড্রোম নামে এক ধরণের জেনেটিক সমস্যা।

. কোনো কোনো শিশুর জন্মের সময় অন্ডকোষ দেহের ভেতরেই রয়ে যায়। এটিও শুক্রাণুর সমস্যা ঘটাতে পারে।

. দেহের যে নালীগুলো অন্ডকোষ থেকে শুক্রাণু বহন করে নিয়ে যায় তা জন্ম থেকে অনুপস্থিত থাকা, বা কোন রোগ বা আঘাতজনিত কারণে নালীগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়া।

. যৌনাঙ্গের কোনো সংক্রমণ যেমন ক্ল্যামাইডিয়া, গনোরিয়া, বা প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের প্রদাহ।

. অন্ডকোষের শিরা বড় হয়ে যাওয়া বা ভ্যারিকোসিলস।

. অন্ডকোষে কোনো অস্ত্রোপচার বা হার্নিয়ার অপারেশন।

. অতিরিক্ত মদ্যপান, ধূমপান, গাঁজা এবং কোকেনের মতো মাদক সেবন।

. অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া বা স্থূলতা।

. কিছু কিছু ওষুধ, যেমন টেস্টোস্টেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি, দীর্ঘকাল ধরে এ্যানাবোলিক স্টেরয়েড ব্যবহার, কেমোথেরাপির মতো ক্যান্সারের ওষুধ, কিছু কিছু এ্যান্টিবায়োটিক বা বিষণ্ণতা কাটানোর ওষুধও শুক্রাণুর মান ও সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে।


শুক্রাণু সংখ্যা ও স্বাস্থ্য বাড়াতে আপনি কী করতে পারেন?
বিজ্ঞানীরা বলেন, আপনার জীবনযাপনে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেও আপনি শুক্রাণুর সংখ্যা ও স্বাস্থ্য বাড়াতে পারেন - যাতে সন্তানের পিতা হবার সম্ভাবনা বাড়বে।

পুরুষদের অন্ডকোষ দেহের বাইরে ঝুলে থাকে, কারণ তাতে দেহের ভেতরের তাপমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম উষ্ণ অবস্থায় সবচেয়ে ভালো মানের শুক্রাণু তৈরি হতে পারে।

সে কারণে একজন পুরুষ যদি দীর্ঘ সময় ধরে খুব গরম পরিবেশে কাজ করেন, তাহলে তার উচিত হবে নিয়মিত স্বল্প সময়ের বিরতি নেয়া। তাকে যদি দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকতে হয়, তাহলে তার নিয়মিত উঠে দাঁড়ানো এবং একটু হেঁটে আসা দরকার।

অতিরিক্ত টাইট অন্তর্বাস পরার ফলে অন্ডকোষের তাপমাত্রা অন্তত ১ ডিগ্রি বেড়ে যায় বলে মনে করা হয়। অবশ্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে চাপা অন্তর্বাসের কারণে শুক্রাণুর মানের ওপর তেমন কোন প্রভাব পড়ে না।

তবে সন্তান নেবার পরিকল্পনা থাকলে আপনি অপেক্ষাকৃত ঢিলা আন্ডারওয়্যার পরতে পারেন।

সন্তানের পিতা হবার চেষ্টা করছেন, এমন পুরুষদের ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান, গাঁজা, কোকেন বা স্টেরয়েড গ্রহণ এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এগুলো পুরুষের শুক্রাণুর মান ও উর্বরতা কমিয়ে দেয়। সপ্তাহে ১৪ ইউনিটের বেশি মদ্যপান এড়িয়ে চলুন।

খাদ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিগুণে ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খাওয়া - যা শুক্রাণুর স্বাস্থ্য ভালো রাখবে। প্রতিদিন ভাত, আলু বা রুটির সাথে অন্তত পাঁচ রকম ফল ও সবজি, শিম, ডাল এবং দই খান। সাথে আরো খাবেন মাছ, ডিম ও গোশতের মতো প্রোটিনজাতীয় খাদ্য।

পুরুষদের ওজন বেশি হলে তা শুক্রাণুর সংখ্যা ও মান কমিয়ে দিতে পারে। তাই নিজের বডি ম্যাস ইনডেক্স বা বিএমআই হিসাব করুন এবং তা ২৫-এর নিচে রাখুন।

বিএমআই হিসেব করা খুবই সহজ । আপনার ওজনকে (কিলোগ্রামে) আপনার উচ্চতার (মিটারে) বর্গ দিয়ে ভাগ করলে যে সংখ্যাটা পাবেন - তাই হলো আপনার বিএমআই। এটা ২৫-এর বেশি হলেই আপনাকে ওজন কমানোর জন্য শরীরচর্চা এবং খাবারদাবার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

সবশেষে মানসিক চাপমুক্ত থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক চাপের কারণে যৌন ইচ্ছা কমে যেতে পারে, কমে যেতে পারে শুক্রাণু উৎপাদন।

পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব এত বেশি?
পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব বিশেষ করে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলোতে - এটা এক বড় সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।

বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে চালানো এক জরিপে দেখা গেছে - গত ৪০ বছর ধরেই পশ্চিমা দেশগুলোয় পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাচ্ছে।

১৯৭৩ থেকে ২০১১ পর্যন্ত সময়কালের উপাত্ত নিয়ে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের পুরুষদের ওপর করা হয়েছিল এ গবেষণা।

বিশ্বজুড়ে পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের ওপর চালানো ২০১৫ সালের এক জরিপে দেখা যায়, পৃথিবীতে দম্পতিদের প্রায় ১৫ শতাংশ বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছেন ।

এর মধ্যে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে সন্তান না হবার জন্য শুধু পুরুষই দায়ী, আর সার্বিকভাবে বন্ধ্যাত্বের পেছনে পুরুষের ভুমিকা আছে ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে।

এই জরিপে দেখা যায়, ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশে পুরুষদের কারণে বন্ধ্যাত্বের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ এবং এশিয়া মহাদেশে এর পরিমাণ ৩৭ শতাংশ।

কিন্তু গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের ব্যাপারে নির্ভুল পরিসংখ্যানের অভাব রয়েছে।

এর কারণ, নারীদের বন্ধ্যাত্ব নিযে যতটা আলোচনা হয়, নানা সামাজিক কারণে অনেক দেশেই পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব নিয়ে ততটা আলোচনা হয় না।

পুরুষদের ওপর সামাজিক চাপ
ফিরে আসি দুই ভাই ক্রিস আর বেন হিউজের কথায়।

ডাক্তারি পরীক্ষায় ক্রিসের শুক্রাণুর সংখ্যা স্বাভাবিক পাওয়া গেছে, কিন্তু বেন এখন টেস্টোস্টেরন ওষুধ নিচ্ছেন - যাতে তার শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়ে।

দুই ভাইই একমত যে এটা এমন এক বিষয় যা নিয়ে পুরুষদের মধ্যে আরো বেশি কথাবার্তা হওয়া উচিত।

"আমরা যখন পাবে গিয়ে বন্ধুদের সাথে কথা বললাম, তখন দেখলাম আমরা সবাই আসলে পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব সম্পর্কে খুবই কম জানি" - বললেন ক্রিস।

দুই ভাই মনে করেন, শুধু যে এ ব্যাপারে জ্ঞানের অভাব আছে তাই নয়, পুরুষরা এ নিয়ে কথা বলতে লজ্জাবোধ করে।

কারণ পুরুষত্ব সম্পর্কে সমাজে যেসব ধারণা প্রচলিত আছে তা ছেলেদের ওপর নানা রকম সামাজিক চাপ সৃষ্টি করে।

"আমরা যৌন শিক্ষা পেয়েছি, কিন্তু উর্বরতা নিয়ে কথা বলতে গেলে পুরুষরা অস্বস্তি বোধ করতে পারে, কারণ এর সাথে পুরুষত্বের একটা সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হয়।"

"একজন পুরুষ যদি নারীকে গর্ভবতী করতে না পারে তাহলে সে অপরাধবোধে ভুগতে পারে, কিন্তু ব্যাপারটা আসলে দু'জনেরই" - বেন বলছিলেন, "আমি এবং ক্রিস যখন তরুণ বয়েসে বান্ধবীদের সাথে ঘুরে বেড়াতাম, তখন আমরা তো তাদেরকে গর্ভবতী করতে চাইছিলাম না। কিন্তু তা চাইলেও পারবো কিনা তা আমরা জানতাম না। "

বেনের মতে, এটা শুনতে অদ্ভুত শোনাতে পারে কিন্তু তরুণ -যুবকদের উচিৎ তাদের উর্বরতা পরীক্ষা করা এবং তিনি তার বন্ধুদের এ পরামর্শ দিচ্ছেন।

ক্রিস বলছেন, গুগলে ফার্টিলিটি বিষয়ে সার্চ করতে গেলে মেয়েদের সম্পর্কে যত তথ্য আসে, পুরুষদের ব্যাপারে তথ্য আসে অনেক কম।

তিনি মজা করে বলছেন, "এমন কি ইন্টারনেটও পুরুষদের উর্বরতার প্রশ্নটিকে খারাপ চোখে দেখছে।"

বেন বলছেন, "পুরুষরা এ বিষয়টা চেপে যায়, কারণ সমাজের ধারণাটা এমন যেন পুরুষদের কোন সমস্যা থাকতে পারবে না, তাদের হতে হবে শক্তিমান। কিন্তু এটা আসলে মোটেও ঠিক নয়।"

"আমি শুধু বলবো, পুরুষরা - আপনারা এ নিয়ে কথা বলুন।"

সূত্র : বিবিসি

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us