পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব এত বেশি?

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Oct 06, 2020 03:57 pm
পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব এত বেশি?

পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব এত বেশি? - ছবি সংগৃহীত

 

পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব বিশেষ করে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলোতে - এটা এক বড় সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।

বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে চালানো এক জরিপে দেখা গেছে - গত ৪০ বছর ধরেই পশ্চিমা দেশগুলোয় পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাচ্ছে।

১৯৭৩ থেকে ২০১১ পর্যন্ত সময়কালের উপাত্ত নিয়ে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের পুরুষদের ওপর করা হয়েছিল এ গবেষণা।

বিশ্বজুড়ে পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের ওপর চালানো ২০১৫ সালের এক জরিপে দেখা যায়, পৃথিবীতে দম্পতিদের প্রায় ১৫ শতাংশ বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছেন ।

এর মধ্যে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে সন্তান না হবার জন্য শুধু পুরুষই দায়ী, আর সার্বিকভাবে বন্ধ্যাত্বের পেছনে পুরুষের ভুমিকা আছে ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে ।

এই জরিপে দেখা যায়, ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশে পুরুষদের কারণে বন্ধ্যাত্বের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ এবং এশিয়া মহাদেশে এর পরিমাণ ৩৭ শতাংশ ।

কিন্তু গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের ব্যাপারে নির্ভুল পরিসংখ্যানের অভাব রয়েছে।

এর কারণ, নারীদের বন্ধ্যাত্ব নিযে যতটা আলোচনা হয়, নানা সামাজিক কারণে অনেক দেশেই পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব নিয়ে ততটা আলোচনা হয় না।


পুরুষদের ওপর সামাজিক চাপ
ফিরে আসি দুই ভাই ক্রিস আর বেন হিউজের কথায়।

ডাক্তারি পরীক্ষায় ক্রিসের শুক্রাণুর সংখ্যা স্বাভাবিক পাওয়া গেছে, কিন্তু বেন এখন টেস্টোস্টেরন ওষুধ নিচ্ছেন - যাতে তার শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়ে।

দুই ভাইই একমত যে এটা এমন এক বিষয় যা নিয়ে পুরুষদের মধ্যে আরো বেশি কথাবার্তা হওয়া উচিত।

"আমরা যখন পাবে গিয়ে বন্ধুদের সাথে কথা বললাম, তখন দেখলাম আমরা সবাই আসলে পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব সম্পর্কে খুবই কম জানি" - বললেন ক্রিস।

দুই ভাই মনে করেন, শুধু যে এ ব্যাপারে জ্ঞানের অভাব আছে তাই নয়, পুরুষরা এ নিয়ে কথা বলতে লজ্জাবোধ করে।

কারণ পুরুষত্ব সম্পর্কে সমাজে যেসব ধারণা প্রচলিত আছে তা ছেলেদের ওপর নানা রকম সামাজিক চাপ সৃষ্টি করে।

"আমরা যৌন শিক্ষা পেয়েছি, কিন্তু উর্বরতা নিয়ে কথা বলতে গেলে পুরুষরা অস্বস্তি বোধ করতে পারে, কারণ এর সাথে পুরুষত্বের একটা সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হয়।"

"একজন পুরুষ যদি নারীকে গর্ভবতী করতে না পারে তাহলে সে অপরাধবোধে ভুগতে পারে, কিন্তু ব্যাপারটা আসলে দু'জনেরই" - বেন বলছিলেন, "আমি এবং ক্রিস যখন তরুণ বয়েসে বান্ধবীদের সাথে ঘুরে বেড়াতাম, তখন আমরা তো তাদেরকে গর্ভবতী করতে চাইছিলাম না। কিন্তু তা চাইলেও পারবো কিনা তা আমরা জানতাম না। "

বেনের মতে, এটা শুনতে অদ্ভুত শোনাতে পারে কিন্তু তরুণ -যুবকদের উচিৎ তাদের উর্বরতা পরীক্ষা করা এবং তিনি তার বন্ধুদের এ পরামর্শ দিচ্ছেন।

ক্রিস বলছেন, গুগলে ফার্টিলিটি বিষয়ে সার্চ করতে গেলে মেয়েদের সম্পর্কে যত তথ্য আসে, পুরুষদের ব্যাপারে তথ্য আসে অনেক কম।

তিনি মজা করে বলছেন, "এমন কি ইন্টারনেটও পুরুষদের উর্বরতার প্রশ্নটিকে খারাপ চোখে দেখছে।"

বেন বলছেন, "পুরুষরা এ বিষয়টা চেপে যায়, কারণ সমাজের ধারণাটা এমন যেন পুরুষদের কোন সমস্যা থাকতে পারবে না, তাদের হতে হবে শক্তিমান। কিন্তু এটা আসলে মোটেও ঠিক নয়।"

"আমি শুধু বলবো, পুরুষরা - আপনারা এ নিয়ে কথা বলুন।"

সূত্র : বিবিসি


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us