হাইপোগ্লাইসেমিয়া কেন হয়, কী করবেন
হাইপোগ্লাইসেমিয়া কেন হয়, কী করবেন - ছবি সংগৃহীত
ডায়াবেটিক আক্রান্তরা বিশেষ করে যারা ইনসুলিন নেন তাদের রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার পরিমাণ হঠাৎ করে কমে যেতে পারে। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৪ মিলিমোল/লিটারের কম হলে তাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলে। সাধারণত ইনসুলিন বা মুখে সেবন যোগ্য ডায়াবেটিসের ওষুধের ডোজ বেশি হলে, খাবারে শর্করার পরিমাণ কম হলে, অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করলে, সময়ের খাবার সময়ে না খেলে বা কোনো খাবার মিস করলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করা গেলে এ থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ কিন্তু দেরি হয়ে গেলে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুও হতে পারে। এজন্য এর লক্ষণগুলো ডায়াবেটিস আক্রান্তদের জানা থাকা একান্ত জরুরি। হাইপোগ্লাইসেমিয়া শুরুর লক্ষণগুলো হল : মাথা ঘোরা, শরীর ঘেমে যাওয়া, ক্ষুধা লাগা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, অস্থিরতা, মাথাব্যথা, জোরে জোরে হৃদকম্পন হওয়া। অনেকের ঘুমের মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।
এর লক্ষণগুলো হলো : ঘামে বিছানার চাদর ভিজে যাওয়া, দুঃস্বপ্ন দেখা, দুর্বল লাগা, অস্থিরতা। যদি শুরুতে চিকিৎসা না করা হয় তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তি মাংসপেশিতে দুর্বলতা অনুভব করেন, কথা জড়িয়ে যায়, ঘোর লাগে, খিঁচুনি হতে পারে, অচেতন হতে পারেন। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তি মারাও যেতে পারেন। চিকিৎসা কিন্তু আপনার হাতে। এ লক্ষণগুলো দেখা দেয়ার সাথে সাথে ৪-৮ চামচ গ্লুকোজ বা চিনি পানিতে মিশিয়ে পান করুন। এছাড়া ১ চামচ জেলি বা মধু অথবা অর্ধেক কাপ ফলের জুস বা ১ কাপ দুধ সাথে সাথে পান করুন। ১০-১৫ মিনিট পর গ্লুকোমিটার দিয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাপ করুন। যদি ৪ মিলিমোলের কম থাকে তাহলে আবারো ৪-৮ চামচ গ্লুকোজ বা ১ চামচ জেলি বা মধু পান করুন। এরপর যদি না কমে তবে আবার গ্লুকোজ খেতে পারেন। এতেও সমস্যা না মিটলে দ্রুত হাসপাতালে যান।
অনেক সময় দেখা যায় আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যান। এক্ষেত্রে ১ মিলিলিটার গ্লুকাগন ইনজেকশন দিতে হবে। বাসায় এ ইনজেকশন দেয়ার ব্যবস্থা না থাকলে রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে। হাইপোগ্লাইসেমিয়া প্রতিরোধ করার জন্য ইনসুলিনের ডোজ ঠিক করে নিন। ইনসুলিন নেয়ার ঠিক আধা ঘণ্টা পর খাবার খান। একটি নিদিষ্ট সময়ে খাবার খান। কোনো বেলার খাবার মিস করবেন না। খাবারে যেন শর্করা জাতীয় খাবার কম না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে অনেকে চকলেট, কুকিজ, বিস্কুট খান। এটা ঠিক নয়। এগুলো থেকে দ্রুত শর্করা পাওয়া যায় না। যদি শারীরিক পরিশ্রম বেশি করেন তাহলে ইনসুলিন বা ওষুধের মাত্রা চিকিৎসকের পরামর্শমতো কমান।
নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ পরিমাপ করুন। নিজের সাথে সব সময় শর্করাজাতীয় খাবার রাখুন। হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ ও চিকিৎসা পরিবারের কোনো সদস্যকে ভালো করে শেখান।