নেপাল-চীন নতুন চুক্তি : উদ্বেগে ভারত
নেপাল-চীন নতুন চুক্তি : উদ্বেগে ভারত - ছবি : সংগৃহীত
নেপাল ও চীন শিগগিরই ভারত-নেপাল নিরাপত্তা বিনিময় ফ্রেমওয়ার্কের মতো একই ধরনের একটি দ্বিপাক্ষিক সামরিক বিনিময় ম্যাকানিজম চুক্তি সই করতে যাচ্ছে। ভারতের নিরাপত্তা এজেন্সিগুলো নয়া দিল্লীকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে।
লাদাখের পূর্বাঞ্চলে ভারতের সঙ্গে চীনের উত্তেজনার মধ্যে হিমালয়ান দেশটি এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সাম্প্রতিক সময়ে নেপালের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘেটেছে। ফলে দুই দেশের মধ্যে ঐতিহ্যগত সম্পর্কটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, নেপাল সেনাবাহিনী ও পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) মধ্যে সামরিক বিনিময় কর্মসূচি গ্রহণের জন্য নেপাল সরকার নেপাল-চায়না বাইলেটেরাল কনসালটেটিভ গ্রুপ অন সিকিউরিটি ইস্যুজ (বিসিজিএসআই) গঠনের পরিকল্পনা করেছে। সূত্র বলে, এটা হবে নিরাপত্তা বিষয়ক ভারত-নেপাল দ্বিপক্ষীয় কনসালটেটিভ গ্রুপের অনুরূপ।
চীন এখন নেপাল সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম ও শান্তিরক্ষা অপারেশনে সাহায্য করছে। তাছাড়া জঙ্গল যুদ্ধ ও উচ্চভূমির যুদ্ধ প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য চীনের পিএলএ’র অন্যতম পছন্দসই গন্তব্য হলো নেপাল। ১৯৮৮ সাল থেকে চীন ও নেপালের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা শুরু হয় এবং ক্রমাগত তা বাড়ছে।
তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে নেপালে ব্যাপকহারে বিনিয়োগ করছে চীন এবং দুই দেশের মধ্যে দ্রুত সড়ক ও রেল যোগাগযোগ গড়ে উঠছে।
অতি সম্প্রতি নেপালের নীতিনির্ধারকরা চীনের বেইদু নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেমের (বিডিএস) ব্যাপারে বেইজিংয়ে ১৩-দিনব্যাপী অফলাইন ও অনলাইন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। চীনের বিশেষ আমন্ত্রণে তারা সেখানে যান।
নেপালের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারকদের জন্য বেইজিংয়ের সাইন্স একাডেমিতে বেশ কিছু আসন সংরক্ষিত রাখে চীন। ৪ সেপ্টেম্বর এই কর্মসূচি শুরু হয় এবং ২০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়।
চীনের এই উদ্যোগকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমের (জিপিএস) আধিপত্যের বিরুদ্ধে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং এই অঞ্চলে তারাই নিজস্ব নেভিগেশন সিস্টেমের উন্নয়ন ঘটালো। সামরিক ও বেসামরিক উভয় ক্ষেত্রেই চীন তার নিজস্ব নেভিগেশন সিস্টেম বেইদু ব্যবহার করে।
জিপিএসের প্রতিদ্বন্দ্বী বিডিএস হলো বিশ্বের চতুর্থ স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম। অন্য সিস্টেমগুলো হচ্ছে রাশিয়ার গ্লোনাস ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের গ্যালিলিও। ভারতও নাভিক নামে নিজস্ব স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম তৈরির চেষ্টা করছে।
নেপাল চীনের সঙ্গে একটি ট্রানজিট চুক্তিও সই করেছে। ফলে দেশটি বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য চীনের সাতটি স্থল ও সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করতে পারবে। ফলে ভারতের উপর নেপালের নির্ভরতা কমবে।
সূত্র : আইএএনএস/এসএএম