জ্বর হলেই কি করোনা পরীক্ষা করাবেন?

সুজাতা মুখোপাধ্যায় | Sep 30, 2020 08:41 pm
জ্বর হলেই কি করোনা পরীক্ষা করাবেন?

জ্বর হলেই কি করোনা পরীক্ষা করাবেন? - ছবি : সংগৃহীত

 

করোনাভাইরাসেই এই সময়ে একটু গা-গরম হলেই এখন দুশ্চিন্তা। অন্য সময়ে যারা এই জ্বরকে পাত্তা দিতেন না, তারাও এখন লুকিয়ে-চুরিয়ে ওষুধ খাচ্ছেন কেউ কেউ, যাতে কেউ জানতে না পারে জ্বরের খবর। সঙ্গে কাশি ও গলা ব্যথা থাকলে তো কথাই নেই। কোভিডের আতঙ্কে মানুষ ভুলে গেছেন সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার কথা। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে এটিও যে নিয়ম মেনে আসে। এ বারও এসেছে এবং বাড়ছে ইনফ্লুয়েঞ্জাও। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভয়। কিন্তু সত্যিই কি এত ভয় পাওয়ার কিছু আছে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সব্যসাচী সেন জানিয়েছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে হালকা থেকে মাঝারি জ্বরের সঙ্গে গা ম্যাজম্যাজ, সর্দিভাব, নাক দিয়ে পানি পড়া বা নাক বন্ধের মতো উপসর্গ থাকে। কাশিও হচ্ছে কারো কারো। তবে এমন যদি হয়, কফ তোলার জন্য কাশি, কিন্তু কফ উঠছে না, এ অবস্থায় চিন্তার কিছু নেই। বিশ্রামে থাকতে হবে। গরম পানির ভাপ নিতে হবে। হালকা খাবার ও পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে।

সব্যসাচীবাবু বলেন, ‘‘জ্বর বাড়লে প্যারাসিটামল খেতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। মাল্টিভিটামিনও খেতে পারেন। মাস্ক পরে বাড়ির অন্যদের থেকে দূরে থাকতে হবে আলাদা ভাবে। কারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রভাবে শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায় বলে পরিবারের অন্য কারো সূত্রে করোনা এলে সবার প্রথমে আপনারই বিপদের আশঙ্কা। জ্বর ও শারীরিক ব্যথা মোটামুটি ২-৩ দিন থাকে। তারপর কমতে শুরু করে। কিন্তু যদি ৪-৫ দিন পরও জ্বর থাকে, বাড়তে শুরু করে, রোগী দুর্বল হয়ে পড়েন, সঙ্গে সঙ্গে কোভিডের পরীক্ষা করা উচিত। বুকে চাপ বা শ্বাসকষ্ট শুরু হলে এই পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক।’’

সব্যসাচীবাবু জানান, সব ক্ষেত্রে দরকার নেই। কারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে এমনিই শরীর দুর্বল হয়ে যায়। তার উপর হাসপাতালে লাইনে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা করাতে গেলে সেখান থেকে রোগ এসে যেতে পারে। রিপোর্টেরও আবার ফলস পজিটিভ, ফলস নেগেটিভ আছে, সংক্রমণের প্রথম অবস্থায় বিশেষ করে। তাছাড়া কো-মর্বিডিটি না থাকলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোভিড এত হালকাভাবে থাকে যে প্যারাসিটামল ও আরো দু-চারটি ওষুধ খেলে, বিশ্রামে থাকলেই সুস্থ হয়ে উঠবেন রোগী।

কী খেয়াল রাখতে হবে

ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে তো সাধারণ মানুষ বেশি সতর্ক হন না। কাজেই তার সঙ্গে যদি কোভিড হয়, যারই সংস্পর্শে আসবেন, সবারই হওয়ার সম্ভাবনা।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সৌতিক পাণ্ডা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে সাবধান না হলে এমনিও সবার কোভিড হবে। কাজেই বাড়িতে কারও জ্বর হলে, সে ইনফ্লুয়েঞ্জা হোক কি কোভিড, তাকে আলাদা করে দিন। রোগী ও পরিবারের সবাই ত্রিস্তরীয় মাস্ক পরুন। বার বার হাত ধুতে থাকুন। ইনফ্লুয়েঞ্জাও যথেষ্ট ছোঁয়াচে। তা ছাড়া যেকোনো একটি সংক্রমণ কিন্তু অন্য সংক্রমণকে ডেকে আনতে পারে। কাজে এই পরিস্থিতিতে ইনফ্লুয়েঞ্জা হলো মানে কোভিডের আশঙ্কাও বাড়ল। কাজেই সাবধানতার কোনো বিকল্প নেই।”

আর পরীক্ষা?

সৌতিকবাবু জানান, জ্বরের সঙ্গে যদি শুকনো কাশি, ঢোক গিলতে কষ্ট, বুকে হালকা চাপ বা শ্বাসকষ্ট থাকে এবং তিনি যদি কনটেইনমেন্ট জোনের এক থেকে দুই কিলোমিটারের মধ্যে থাকেন, কোভিড পরীক্ষা করা জরুরি। তবে মানুষ যেভাবে মেলামেশা শুরু করেছেন, তাতে তিনি কোথায় থাকছেন, সেটা এখন গুরুত্বহীন হয়ে গেছে। উপসর্গ থাকলেই পরীক্ষা হচ্ছে।

অতএব

জ্বর হলেই দুশ্চিন্তা করবেন না। তাতে শরীর আরো দুর্বল হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দু-তিন দিনে সমস্যা কমে যাবে। কাজেই সাবধানে থাকুন। জ্বর হলেই নিজেকে আলাদা করে নিন। উপসর্গের গতিপ্রকৃতির দিকে নজর রাখুন ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us