মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে আবার ঝড়
মহিউদ্দিন মাহাথির ও আনোয়ার - ছবি সংগৃহীত
মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে বারবারই ঝড় উঠছে। বাঁক পরিবর্তন হচ্ছে বারবার। দেশটির রাজনীতি ও ক্ষমতার অস্থিরতা আর ভেতর থেকে পরিবর্তনের একটি আভাস পাওয়া যাচ্ছিল আগে থেকেই। সেই ঝড় বিরোধীদলীয় নেতা আনোয়ার ইবরাহিমের সরকার গঠনের মতো পর্যাপ্ত সংসদ সদস্যের সমর্থন নিশ্চিত হওয়ার দাবির পর নতুন মোড় নেয়। নতুন সরকার গঠনের জন্য তার প্রতি দেওয়ান রাকিয়তের (সংসদ) বেশির ভাগ সদস্যের সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করে আনোয়ার ঘোষণা করেন, শিগগিরই তিনি ইয়াং ডি-পার্টুয়ান আগোংয়ের (রাজা) সাক্ষাৎকার চাইবেন। আনোয়ার ভূমিপুত্র এবং মালে-মুসলিম নেতৃত্বাধীন সরকারে নেতৃত্ব দেবেন বলে জোর দিয়েও একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করবেন বলে জানান। কিন্তু আনোয়ারের এই ঘোষণার পর রাজা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পাঁচ-ছয় দিন পর তিনি রাজপ্রাসাদে ফিরে এসেছেন। প্রাসাদ থেকে বলা হয়েছে, রাজা খেলতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন এবং একই সাথে ফুড পয়জনিংয়ের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে এর মধ্যে সাবাহ রাজ্যের উপনির্বাচন সম্পন্ন হয়ে গেছে যেখানে মহিউদ্দিন ইয়াসিনের সমর্থক জোট ৩৮টি আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছে। এতে বিরোধী জোট ওয়ারিসান-প্লাস আসন পেয়েছে ৩২টি।
সাবাহ রাজ্যে জেতার পর দৃশ্যত মহিউদ্দিন ইয়াসিনের অবস্থান মজবুত হয়েছে বলে মনে হতে পারে। কিন্তু সাবাহর মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে বারিসান ন্যাশনাল আর পেরিকাতান ন্যাশনালের মধ্যে যে টানাপড়েন দেখা দেয় তা একপর্যায়ে জোটের মধ্যে নতুন ভাঙনের ইঙ্গিত সৃষ্টি করে। এর মধ্যে উমনোর যুবপ্রধান আশরাফ ওয়াজদি দুসুকি পেরিকাতান সরকারে থাকা এবং তাদের সাথে জোটবদ্ধ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি ফেডারেল সরকার ও বিভিন্ন রাজ্য সরকার গঠনের উদাহরণ টেনে বলেছেন, উমনো জোটের মধ্যে সবচেয়ে বড় দল হওয়ার পরও বেরাসাতুই মূলত সরকারের সব সুবিধা পাচ্ছে। অথচ দলটির নির্বাচিত সংসদ সদস্য মাত্র ছয়জন। বাকিরা উমনো থেকে অথবা পিকেআর দিয়ে লম্ফ দিয়ে দল পাল্টে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমান ফেডারেল সরকার গঠন এবং এর পরের উপনির্বাচনগুলোতে উমনোর সমর্থনের ওপর ভিত্তি করে জয়ী হয়ে বেরাসাতুই ক্ষমতার মূল সুবিধা ভোগ করছে।
যুব উমনো প্রধান আশরাফ ওয়াজদি দুসুকি যে বক্তব্য দিচ্ছেন সেই যুক্তিতেই মহিউদ্দিন ইয়াসিনের সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে ২০ থেকে ২২ জন উমনো এমপি আনোয়ারকে সমর্থন দেয়ার কথা বলছিলেন। এসব এমপির পেছনে দলের প্রভাবশালী নেতা নাজিব রাজাক ও আহমদ জাহিদ হামিদির সমর্থন রয়েছে বলেও ধারণা করা হয়।
এর আগে আনোয়ারের সরকার গঠনের মতো সমর্থন থাকার কথা ঘোষণার পর উমনো ও বারিসান জোট প্রধান আহমদ জাহিদ হামিদি বলেছিলেন, আনোয়ারের সরকার গঠনের ব্যাপারে অনেক উমনো ও বিএন এমপির সমর্থন রয়েছে। তিনি এও বলেছেন, অনেক সংসদ সদস্য আনোয়ারকে নতুন সরকার গঠনের জন্য তাদের মধ্য থেকে সমর্থন জানিয়েছেন। এটি যারা করেছেন তাদের অবস্থানকে তিনি সম্মান করছেন। জাহিদ জোর দিয়ে বলেন, উমনো ও বিএন আনুষ্ঠানিকভাবে পেরিকাতান ন্যাশনাল (পিএন) জোটের অংশ নয়। যদিও তার পরের অবস্থান জোরালোভাবে এর সাথে মেলে না।
আনোয়ার ইবরাহিম তার বক্তব্যে সঠিক সংখ্যা এবং সংসদ সদস্যদের নাম উল্লেখ না করেই বলেন, তারা বেশির ভাগই মালয়-মুসলিম এবং ইয়াং ডি-পার্টুয়ান আগোংয়ের সাথে দেখা করে তাদের কথা বলতে চান। আমানাহ এবং ডিএপি আনোয়ারের পক্ষে আগেই সমর্থন ঘোষণা করে, তবে সারওয়াকের গাবুনগান পারটি সারাওয়াক বা জিপিএস বলেছে, তারা দৃঢ়ভাবে মুহিউদ্দিনের পেছনে রয়েছে।
আনোয়ারের ঘোষণার পর ইয়াং ডি-পার্টুয়ান আগোং জাতীয় হার্ট ইনস্টিটিউটে হাসপাতালে ভর্তি হন। এ কারণে আনোয়ারের সাক্ষাত প্রার্থনার আবেদনে তিনি সম্মতি দিয়েও তা স্থগিত রেখেছেন বলে রাজপ্রাসাদ থেকে বলা হয়। কিন্তু রাজা রাজপ্রাসাদে ফেরার পর তিনি আনোয়ারকে সাক্ষাতকার দেবেন এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। বরং একটি বক্তব্য প্রাসাদ থেকে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে যেখানে বলা হতে পারে, সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব সংসদেই উত্থাপিত হতে পারে। এ ছাড়া সরকারের উত্থাপিত বিল পাস না হলে সেটিও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর একটি বিবেচনা হতে পারে। মাহাথির মোহাম্মদ আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপারে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা বলছিলেন। কিন্তু সংসদের মুহিউদ্দিন সমর্থক স্পিকার সে সুযোগ দিচ্ছেন না। সংসদে সরকারের কোনো বিল পাস না হওয়ার মতো অবস্থা দেখা দিলে সে ধরনের বিল তোলা থেকেও সরকার বিরত থাকতে পারে।
আনোয়ার ইবরাহিম সংসদে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার দাবি করার পর আইনি পথে সরকার গঠন এবং দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী তিনি হতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় এখন আরো বেড়েছে। মালয়েশিয়ার সাংবিধানিক আইন কমিটির সহ-সভাপতি অ্যান্ড্রু খু বলেছেন, ‘রাজা তাকে সাক্ষাতকার দেয়ার আগ পর্যন্ত আনোয়ারকে অপেক্ষা করতে হবে।’ রাজা হাসপাতাল থেকে ফেরার পর মনে হচ্ছে তিনি আনোয়ারকে সাক্ষাতকার দেয়ার বিষয় বিবেচনা করছেন না।
আগেই ধারণা করা হয়েছিল, আনোয়ারের ঘোষণা কার্যকর করার ক্ষেত্রে যেকোনো বিলম্বে মুহিউদ্দিনের সমর্থন ফিরে পাওয়ার অবকাশ সৃষ্টি হবে। এর জন্য তাকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে বোঝাপড়ায় যেতে হবে। অন্য দিকে, অপেক্ষার সময় দীর্ঘায়িত হলে আনোয়ারের সমর্থন পিছলে যাওয়ার একটি আশঙ্কা থেকে যেতে পারে। গত এক সপ্তাহের প্রতিদিনের ঘটনা পর্যবেক্ষণে তেমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, আনোয়ারের সরকার গঠনের ঘোষণার পর দুটি বিষয় ঘটার সম্ভাবনা এখনো রয়েছে। যদি উমনোর একটি অংশ অথবা পুরো বারিসান ন্যাশনাল পেরিকাতান সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে তাহলে প্রধানমন্ত্রী সংসদ ভেঙে দিতে রাজাকে বলতে পারেন। রাজা সংসদ বিলুপ্তিতে সম্মতি দিতে পারেন। অথবা রাজা এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে সংসদের আস্থাভাজন নতুন একজনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করতে পারেন। অবশ্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত চাইবেন ক্ষমতা ধরে রাখতে। সংসদ সদস্যদের সমর্থন পেতে তিনি বিকল্প পথে হাঁটতে পারেন। সেরকম রাস্তা এখন অবশ্য তেমন দেখা যাচ্ছে না।
মোদ্দাকথা হলো, পাকাতানের পতনের জন্য ‘শেরাটন মুভ’ যেভাবে ঘটেছিল আনোয়ার ইবরাহিম একইভাবে সরকার গঠন করতে পারেন। নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হোক বা না হোক ‘শেরাটন মুভ ’ আবার ঘটতে পারে এ কারণে যে তাতে আইনি কোনো বাধা নেই। এটি সরকার পরিবর্তনের একটি নজিরে পরিণত হতে পারে। গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে, তৎকালীন পিকেআর উপ-প্রধান আজমিন আলী পিএনকে সমর্থন করার জন্য দলটির ১০ জন সংসদ সদস্যকে বের করে এনে এ ঘটনায় তাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তখন এক ভয়াবহ রাজনৈতিক সঙ্কট শুরু হয় এবং পিএইচের শাসনের পতন ঘটে এবং মুহিউদ্দিনের নেতৃত্বে বর্তমান জোট ক্ষমতায় বসে। শেরাটন মুভের সময় রাজা এমপিদের মতামত নিয়ে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছিলেন। রাজা শেষ পর্যন্ত এবারো সেটি করতে পারেন। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন অথবা কোনো বিল পাসে সরকারের ব্যর্থতা অথবা বারিসান ন্যাশনাল বা উমনো/বারিসানের একদল এমপি প্রকাশ্য সংবাদ সম্মেলন করে তাদের সমর্থনের কথা ঘোষণা করলেও রাজা নতুন কাউকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে পারেন।
তবে এই হিসাব-নিকাশও নানা কারণে জটিল হয়ে গেছে। মাহাথির মোহাম্মদ আনোয়ারের এই ঘোষণাকে ২০০৮ সালের ঘোষণার সাথে তুলনা করেছেন। তিনি আনোয়ারের ক্ষমতায় যাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টির ঘুঁটি এখনো সাজিয়ে চলেছেন বলে মনে হয় তার এই কথায়। তবে ৯৫ বছর বয়সী এই নেতা তার বিশ্বাসযোগ্যতার অনেকখানি ক্ষতি করেছেন। তিনি ক্ষমতায় আসা-যাওয়া নিয়ন্ত্রণে তার হাতে থাকা অনেক ঘুঁটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন এর অতি ব্যবহারের কারণে। এবার মাহাথির মোহাম্মদ তার ব্লকের ১৮ জন এমপির সমর্থন আনোয়ার পাবেন না এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন। ডিএপি বলেছে, দলটি বারিসানের সাথে কাজ করবে না। তার অর্থ হলো- উমনো বা বারিসান আনোয়ারকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিলে সে ক্ষেত্রে ডিএপি এই সমীকরণে থাকবে না। এক্ষেত্রে মুহিউদ্দিন ডিএপি ও ওয়ারিসানকে নিয়ে নতুন এক জোট গঠন করার চেষ্টা নিতে পারেন। সেটি সংখ্যাগরিষ্ঠতার পর্যায়ে চলে যেতেও পারে। তবে এ ধরনের মেরুকরণে কে সরকার গঠন করবে তা নির্ভর করবে পাস অথবা জিপিএসের ওপর। দুই দলেরই ১৮ জন করে সদস্য রয়েছে। নতুন সরকার গঠনে এসব জটিল সমীকরণের কারণে নির্বাচনই অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে বলে মনে হয়।
আর মালয়েশিয়ানদের সামনে একটি নতুন নির্বাচন দেয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। সেটি হলে অবশ্য ঘটনা ভিন্নদিকে মোড় নেবে। অনেকের মতে, বর্তমান সময়ে সর্বোত্তম হলো- একটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান করা এবং জনগণকে সরকার বেছে নেয়ার সুযোগ দেয়া।
আকস্মিকভাবে মুহিউদ্দিন ইয়াসিন সরকারের নেতৃত্ব পাওয়ার পর এমন কিছু কাজ করেছেন যা পরিস্থিতিকে তার জন্য জটিল করে তুলেছে। তিনি চেয়েছিলেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী যারা রয়েছেন সবাইকে সাইডলাইনে ফেলে দিতে। মাহাথিরকে তিনি পূত্রসহ দল থেকে বের করে দিয়েছেন। নাজিব রাজাককে দুর্নীতি মামলায় শাস্তি নিশ্চিত করে রাজনীতি থেকে বিদায়ের ব্যবস্থা করেছেন। জাহিদ হামিদির মামলাও চলমান রয়েছে। যেকোনো সময় দণ্ড হতে পারে। আনোয়ার ইবরাহিমকে রাজা যে ক্ষমা প্রদর্শন করেছিলেন তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা করার ব্যবস্থা হয়েছে। ডিএপির প্রধান গুয়াং এং-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা নতুন করে চালু করে দিয়েছেন।
রাজনীতির এত এত ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে কুপোকাত করতে গেলে পায়ের নিচের মাটি যে সরে যাবে সেই হিসাব মুহিউদ্দিন ইয়াসিন কতটা করতে পেরেছিলেন তা স্পষ্ট নয়। তবে এবার উমনো ও পাস সরকারের প্রতি আনুষ্ঠানিক সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেও ভেতরে ভেতরে তাদের শীর্ষ নেতারা মুহিউদ্দিনের বিদায়ের আয়োজনের সাথে সরবে-নীরবে যুক্ত বলে মনে হয়। ফলে বলা যায়, মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে বড় ধরনের ঝাঁকুনি সমাগত।
নতুন পরিস্থিতিতে হয়তো বা আনোয়ার প্রধানমন্ত্রী হয়ে মালয় প্রধান অন্তর্ভুক্তিমূলক একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সংহত করবেন। অথবা সাবাহ রাজ্যের মতো একটি অপরিপক্ব নির্বাচন আসন্ন হবে। কোভিড-১৯ এ বিপর্যস্ত অর্থনীতির কারণে এ রাস্তাটি অনভিপ্রেত মনে হতে পারে। তবে মালয়েশিয়ান ডিপ স্টেট যদি আনোয়ারকে কোনোভাবেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে না চান তবে সেটি ঘটারই সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও আনোয়ার ঘনিষ্ঠ অনেকের মতে, মালয়েশিয়ার সুলতানরা এখন আনোয়ারের ক্ষমতার পথে সেভাবে বাধা হতে চাইছেন না। এটি আরো স্পষ্ট হবে রাজার ভবিষ্যত সিদ্ধান্তে।
রাজা নির্বাচনের দিকে যেতে চাইলেও দেশটির বর্তমান মেরুকরণ থাকবে বলে মনে হয় না। যুব উমনোর প্রধান যেদিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন সেটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। উমনো এবং বেরাসাতুর ভোট ভিত্তি অভিন্ন মালয় ভোটাররা। উমনোর রয়েছে অর্র্ধশত বছরের একটি নেটওয়ার্ক, সেই তুলনায় বেরাসাতুর সমৃদ্ধ কোনো ভোট-ভিত্তি নেই। মাহাথিরের প্রভাবের ওপর ভিত্তি করে দলটি সংঘঠিত হয়েছিল। এখন তিনি নতুন একটি দল গঠন করেছেন। ফলে উমনো চাইবে বারিসানের জোটভুক্ত দলগুলোর সাথে পাসকে নিয়ে নির্বাচনী জোট বা সমঝোতা করে পরের নির্বাচনে যেতে। অন্যদিকে পাকাতান হারাপান তার জোটবদ্ধতা বজায় রাখার চেষ্টা করবে। সেটি হলে বেরাসাতু অনেকখানি নিঃসঙ্গ হয়ে পড়বে। দলটি চেষ্টা করবে তৃতীয় একটি জোট গঠন করতে।
এ ধরনের ত্রিমুখী অবস্থা সৃষ্টি হলে বারিসান-পাস জোট হয়তো ভালো ফল করতে পারে। তবে আনোয়ারের নেতৃত্বাধীন পাকাতান হারাপানের সম্ভাবনাও কমবে না যদি জোটের বর্তমান অবস্থা বজায় রাখা সম্ভব হয়। যাই হোক না কেন, সম্ভবত মুহিউদ্দিন সরকারের সময় ইতি ঘটার কাছাকাছি চলে এসেছে। মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে প্রতিদিনই যে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে তাতে নির্বাচনই হয়ে উঠতে পারে অনিবার্য বাস্তবতা। তবে তার আগে আরো অনেক ঘটনাই ঘটতে পারে।
mrkmmb@gmail.com