চীনের মোকাবেলা ভারতের ব্রহ্ম, আকাশ ও নির্ভয় ক্ষেপণাস্ত্র
ভারতের ব্রহ্ম, আকাশ ও নির্ভয় ক্ষেপণাস্ত্র - ছবি : সংগৃহীত
চীনের জিনজিয়াং ও তিব্বত অঞ্চলে পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) মোতায়েন করা ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবেলায় ভারতের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার ব্রহ্ম ক্রুইস ক্ষেপণাস্ত্র, ৮০০ কিলোমিটার পাল্লার নির্ভয় ক্রুইস ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান থেকে বিমানে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র (এসএএম) আকাশ, যা ৪০ কিলোমিটার দূরের হুমকিকে কুপোকাত করতে পারে।
চীনা বাহিনী দুই হাজার কিলোমিটার পাল্লার অস্ত্র ও দূরপাল্লার এসএএম মোতায়েন করেছে তিব্বত ও জিনজিয়াঙ অঞ্চলে। আর এগুলোর মোকাবেলায় ভারত সুপারসনিক ব্রহ্ম, সাবসোনিক নির্ভয় ও আকাশ মোতায়েন করেছে। ফলে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। চীনা মোতায়েন কেবল অধিকৃত আকসাই চিনেই সীমিত নেই, বরং সেইসাথে কাশগড়, হতন, লাসা ও নিয়াঙচিসহ ভারতের সাথে থাকা ৩,৪৮৮ কিলোমিটার জুড়ে থাকা সীমান্তে মোতায়েন রয়েছে।
ভারতের প্রধান অস্ত্র হচ্ছে ব্রহ্ম বিমান থেকে বিমানে নিক্ষেপযোগ্য ও বিমান থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। এর অগ্রভাগে থাকা ৩০০ কেজির বিস্ফোরক তিব্বত ও জিনজিয়াঙের এয়ারস্ট্রিপগুলোকে আঘাত হানতে পারে।
লাদাখ এলাকায় ব্রহ্ম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাপক সংখ্যায় মোতায়েন করা হয়েছৈ। এগুলা সু-৩০ এমকেআই জঙ্গি বিমানের মাধ্যমেও ব্যবহার করা যায়। এছাড়া ভারতের কার নিকোবর এয়ার বেইজ ব্যবহার করে ভারত মহাসাগর থেকেও ব্রহ্ম ব্যবহার করা সম্ভব। ওই এয়ার বেইজে সু-৩০ এমকেআই মোতায়েনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মালাক্কা প্রণালী থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়ার সান্দা প্রণালী পর্যন্ত চীনা রণতরীর হুমকি প্রতিরোধে ওই বিমান মোতায়েন করা হয়েছে বলে এক সিনিয়র ভারতীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
নির্ভর সাবসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র অবশ্য কম সংখ্যায় উৎপাদন করা হয়েছে। তবে এগুলো এক হাজার কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে পারে। এর অর্থ হলো, শত্রুর অস্ত্র নিক্ষেপের আগেই সেটি ধ্বংস করে দিতে সক্ষম।
ভারতের আরেকটি বড় অস্ত্র হলো আকাশ এসএএম। লাদাখ সেক্টরে এটি পর্যাপ্ত সংখ্যায় মোতায়েন করা হয়েছে। চীনা বিমান বাহিনীর বিরুদ্ধে এটি বেশ কার্যকর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অবশ্য লাদাখ এলাকায় পিএলএর জঙ্গিবিমানের কার্যক্রম এর মধ্যেই কমে এসেছে। তবে কারাকোরাম পাসের কাছে দৌলত বেগ ওল্ডিতে তাদের কার্যক্রম বেড়েছে।
আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র একসাথে ৬৪টি টার্গেটকে শনাক্ত করতে পারে এবং এর মধ্যে ১২টির সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে। জঙ্গিবিমান, ক্রুইজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র- সবই সে নিস্ক্রিয় করে দিতে পারে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
লাদাখে ট্যাঙ্ক-সাঁজোয়া যান মোতায়েন ভারতের
এএনআই ও এনডিটিভি
লাদাখ সীমান্তে পারমাণবিক অস্ত্রধারী চিরবৈরী দুই প্রতিবেশীর সামরিক বাহিনীর মধ্যে কয়েক মাস ধরে নজিরবিহীন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কূটনৈতিক, সামরিক ও সরকারি পর্যায়ে লাদাখের উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে উভয় দেশ দফায় দফায় আলোচনায় সীমান্ত থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে রাজি হলেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। বরং উভয় দেশের সৈন্যরা এই সীমান্তে ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী রোববার লাদাখে ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান মোতায়েনের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান পূর্ব লাদাখ সীমান্তে চীনা সৈন্যদের লক্ষ্য করে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল-মে থেকে ব্যাপক এই সীমান্ত নিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের মাঝে নজিরবিহীন উত্তেজনা দেখা দেয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, ভূপৃষ্ঠ থেকে বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতার সীমান্ত লাদাখের চুমার-দেমচক এলাকায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সারি সারি টি-৯০ ট্যাঙ্ক ও বিএমপি সাঁজোয়া যান চীনা ভূখণ্ডের দিকে তাক করে আছে। সর্বশেষ গত ৩১ আগস্ট দুই দেশের সেনাবাহিনীর সদস্যদের মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। ওই দিন লাদাখের প্যাংগং লেকের দক্ষিণ তীরে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশের চেষ্টা করে চীনা সৈন্যরা। তখন থেকেই উভয় দেশ সীমান্তে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কয়েক দফা বৈঠক করে। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি।