জিভের অসুস্থতার ধরন বোঝা যায়?
জিভের অসুস্থতার ধরন বোঝা যায়? - ছবি সংগৃহীত
অনেকেই বলেন, হাতের নখের পরীক্ষা করেই বলে দেয়া সম্ভব শরীরে কোনো রোগবালাই আছে কি না। অনেকের মতে, চোখের সাদা অংশ কতটা সাদা, কতটা লালচে, সেটা থেকেও স্বাস্থ্যের হাল বলা সম্ভব। এর পাশাপাশি আরো একটি বিষয় দেখে বলা সম্ভব স্বাস্থ্যের হালের কথা। সেটি লো জিভের রং। চিকিৎসকরা তাই পরামর্শ দিচ্ছেন, জিভের রঙের তেমন তেমন পরিবর্তন হলে, অবিলম্বে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
জিভের রঙের কোন কোন পরিবর্তন দেখে বুঝবেন, শরীরের হাল কেমন?
১। সাদা জিভ
চিজের যেমন রং, জিভের রং যদি তেমন হয়ে যায়, বুঝবেন আপনার ইমিউনিটি সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পড়ে গেছে। অনেক সময় টানা অ্যান্টিবায়োটিক খেলে এই সমস্যা হয়। ব্যাটটেরিয়া ওষুধের কারণে মারা গেলে, জিভে অতিরিক্ত ইস্টের ইনফেকশন হতে থাকে। চিকিৎসার ভাষায় একে ওরাল থ্রাস বলে।
লিউকোপ্লাকিয়া বলে একটি সমস্যার কারণেও জিভে সাদা-সাদা দাগ হয়। এটি বিপজ্জনক। এবং ক্যান্সারের পূর্বাভাস হতে পারে। ওরাল লিচেন প্ল্যানাস হলেও সাদা দাগ হয়। তবে এটি বিপজ্জনক নয়। খুবই বিরল অসুখ। এবং নিজেই সেরে যায়।
২। লাল জিভ
জিভের রং নানা কারণে লাল হয়ে যেতে পারে। তবে প্রধান কারণটা নিঃসন্দেহে ভিটামিনের অভাব। শরীরে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স কমে গেলে জিভের রং টকটকে লাল হয়ে যায়, তাছাড়া আয়রনের অভাবেও একই জিনিস হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে জিভের তলটি খুব স্মুদ হয়ে থাকে। অন্য সমস্যার ক্ষেত্রে তা হয় না। যেমন অনেক সময়ই দেখা যায়, লাল রঙের উঁচু-নিচু আকৃতি তৈরি হয়েছে জিভে। এটিকে ‘জিওগ্রাফিক টাং' বলে। এটি একেবারেই ক্ষতিকারক নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি সেরে যায়।
৩। কালো বা বাদামি জিভ
এর অর্থ আপনার মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যের হাল নড়বড়ে। এটা ব্যাকটেরিয়া বা ফাংগাসের কারণে হওয়া ইনফেকশন থেকে হতে পারে। তবে প্রথমেই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। এক্ষেত্রে জিভের ওপরিভাগ ফুলে কালো উঁচু-নিচু আকৃতি নেয় এবং সেখানে চুলের মতো কালো সেল জন্মায়। এই কারণেই একে ‘ব্ল্যাক হেয়ারি টাং'-ও বলা হয়। তবে প্যাপিলির অতিরিক্ত বৃদ্ধিতে এই সমস্যা হতে পারে। যারা ধূমপান করেন, তাঁদের এই সমস্যাটা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা বড় আকার নিতে পারে।
৪। ফাটা জিভ
এটি খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। কারণ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যাটি হয়। ফলে এটিকে বয়স বাড়ার লক্ষণ হিসেবেও দেখতে পারেন। চিকিৎসকদের মতে, এটি কোনো সমস্যা নয়। কিন্তু এটি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষত যারা মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দেন না, যাঁরা মুখের ভিতরের যত্ন কম নেন, তাদের এই ফাটা জিভ থেকে ইনফেকশন হতে পারে। কারণ এই ফাটা জিভের ফাটলগুলোতে সহজেই সংক্রমণ হতে পারে। তাই এই সমস্যা হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করাই ভালো।
৫। হলুদ জিভ
এটির কারণ সকলেই জানেন। মূলত জন্ডিস বা লিভারের অন্য কোনো সমস্যা হলেই হলুদ জিভ হয়ে যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে পেটের প্রদাহও হয়। তাই হলুদ জিভ দেখলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
সূত্র : বোল্ডস্কাই