খিঁচুনি : যা করবেন, যা করবেন না
খিঁচুনি : যা করবেন, যা করবেন না - ছবি সংগৃহীত
রাস্তাঘাটে চলার সময় প্রায়ই দেখা যায় খিঁচুনি আক্রান্ত ব্যক্তিকে চারদিক দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ এসে নাকের কাছে রাবারের জুতা ধরছেন। এগুলো ভুল ধারণা। খিঁচুনির সময় কিছু ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে।
আক্রান্ত ব্যক্তি যদি বুঝতে পারেন তার খিঁচুনি হতে যাচ্ছে তাহলে দেরি না করে শুয়ে পড়ুন। কারণ দাঁড়ানো অবস্থায় খিঁচুনি হলে পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা আছে। এ সময় বালিশ দেয়ার দরকার নেই। মাথা একদিকে কাত করে রাখুন। চিৎ করে শোয়াবেন না। এতে লালা শ্বাসনালীতে চলে যাবে।
মাথায় বা চোখে মুখে পানি দেয়ার প্রয়োজন নেই। যাদের খিঁচুনি খুব ঘন ঘন হয় ও খিঁচুনির সাথে পায়খানা হয় তারা চিকিৎসকের পরামর্শে পায়ুপথের খিঁচুনি বন্ধের ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন।
বেশির ভাগ খিঁচুনির স্থায়িত্ব খুবই কম। ১-২ মিনিট থেকে ৪-৫ মিনিট। এ সময় উপরের নিয়মগুলো মেনে চলুন। খিঁচুনি হওয়ার সাথে সাথে আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিয়ে হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে ছুটে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। খিঁচুনি বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। বন্ধ হওয়ার পরও আক্রান্ত ব্যক্তিকে একা রাস্তা পারাপার হতে দেয়া ঠিক নয়। কারণ খিঁচুনির পরও তার মস্তিষ্ক ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। তাই তাকে কিছুক্ষণ সময় দিন পুরোপুরি ঠিক হওয়ার জন্য।
খিঁচুনির সময় আক্রান্ত ব্যক্তির নাকে চামড়ার জুতা ধরাটা নিতান্ত কুসংস্কার। এতে রোগীর কোনো উপকার আসে না। বরং জুতার নোংরা তার মুখে লেগে যেতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঘিরে না ধরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করে দিন।
মোবাইল ফোনে ক্যান্সার?
নিরাময় প্রতিবেদক
অনেকের ধারণা মোবাইল ফোন ব্যবহারে মস্তিষ্কের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। ভয়ে অনেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না। এ নিয়ে গবেষকদেরও আগ্রহের কমতি নেই। থেমে নেই তাদের গবেষণা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কোনো কিছু বলতে পারছেন না তারা। গবেষণা থেকে জানা যায় ১৯৭০ সালের পর থেকে মস্তিষ্কের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার বেড়ে যায়। এর কারণ হিসেবে মোবাইল ফোন যে খুব বেশি দায়ী তা কিন্তু নয়। কারণ সে সময় মোবাইল ফোনের প্রচলন এতটা ছিল না। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির কারণে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি আবিষ্কৃত হয়। ফলে রোগ নির্ণয় সহজ হয়।
একটি গবেষণায় প্রায় ৪২ হাজার ব্যক্তিকে ২০ বছর ধরে ফলোআপে রাখা হয়। প্রাপ্ত ফলাফল থেকে জানা গেছে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সাথে মস্তিষ্কের ক্যান্সারের কোনো সম্পর্ক নেই। আবার আর একটি গবেষণা জানাচ্ছে যারা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন তাদের গ্লায়োমা নামে এক ধরনের মস্তিষ্কের বিনাইন টিউমার হয় কিন্তু ক্যান্সারের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের স্যালিভারি গ্ল্যান্ড বা লালাগ্রন্থির টিউমার বেশি হয়। এ গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের খুব অল্পসংখ্যকেরই লালাগ্রন্থির ক্যান্সার হয়েছে। তবে এরা বেশি ধূমপান করেন বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। ধূমপান এ ক্যান্সারের জন্য দায়ী তা আগে থেকেই জানা। গবেষকরা দীর্ঘমেয়াদি গবেষণার কাজ হাতে নিয়েছেন। সুখবর যে, এখন পর্যন্ত খারাপ কিছু জানা যায়নি।
তবে মোবাইল ফোন ব্যবহার যে ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী নয় তা নিশ্চিত করে বলার সময় এখনো আসেনি। ক্যান্সার সৃষ্টির কারণ খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজন সময়। ধূমপান যে অনেক ক্যান্সারের জন্য দায়ী তাও বের করতে অনেক দিন লেগেছে। তাই সচেতনতার বিকল্প নেই। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা কম মোবাইল ফোন ব্যবহারের পক্ষপাতী। কানে মোবাইল না লাগিয়ে হেডফোন, লাউড স্পিকারে কথা বললে মোবাইল মস্তিষ্কের সংস্পর্শে কম সময় থাকবে।