লাদাখে ভারতের উট বাহিনী!
লাদাখে ভারতের উট বাহিনী! - ছবি সংগৃহীত
বিরোধপূর্ণ পূর্ব লাদাখ সীমান্তে পণ্য পরিবহন ও টহলের কাজে দুই কুঁজওয়ালা উট ব্যবহার করবে ভারতীয় সেনারা। তিন বছর আগে এ ধরনের পরিকল্পনা নেয়া হলেও ভারত-চীন উত্তেজনার মধ্যে এখন তা আলোর মুখ দেখছে।
লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের (এলএসি) দৌলত বেগ ওলদি (ওবিআর) ও দেপসাং অঞ্চলের উচ্চতা সাগর সমতল থেকে ১৭,০০০ ফুটের বেশি। এখানে দুই দেশের হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এই অঞ্চলে উটের পিঠে চড়ে টহল দিতে সুবিধা হবে বলে ভারতের সেনাবাহিনী মনে করে।
স্থানীয়ভাবে এসব প্রাণীকে বলা হয় ব্যাকট্রিয়ান উট বলা হয়, যা লাদাখের নুব্রা উপত্যকার ১২,০০০ ফুট উচ্চতায় পাওয়া যায়। ওই অঞ্চলে এসব উটের চলাচল স্বাভাবিক। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) লেহ’র হাই-অল্টিচ্যুড গবেষণাগারে এসব উট লালন ও বংশ বৃদ্ধি করেছে।
এই কর্মসূচিতে চিনকু ও টিনকুতে জন্ম নেয়া একাটি মাদি উটকে লালন ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
রাজস্তান থেকে আনা এক কুঁজওয়ালা উটের সঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে সীমান্তের কঠোর প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য দুই কুঁজওয়ালা উট অনেক বেশি উপযুক্ত।
লেহ’র গবেষণাগারে বংশবৃদ্ধি ঘটিয়ে সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক উট সরবরাহ করা হবে। একটি সূত্র জানায়, বর্তমান হিসাবে সেনাবাহিনীকে এ রকম ৫০টি উট সরবরাহ করতে হবে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভেটেনার অফিসার কর্নেল মনোজ বাতরা বলেন, এই পরিবেশে দুই কুঁজওয়ালা উট বেশ মানানসই। এগুলো ১৭০ কেজি বোঝা নিয়ে ১৭,০০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত যেতে পারে। এগুলো পানি না খেয়ে ৭২ ঘন্টা থাকতে পারে।
তিনি বলেন, এগুলো মালামাল পরিবহন ও টহলের কাজে ব্যবহার করা হবে। আগামী ৫-৬ মাসের মধ্যে উটগুলো সেনাবাহিনীকে সরবরাহ করা হবে।
ডিবিও-তে নিয়ে গিয়ে উটের সামর্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান ওই অফিসার।
তিব্বত ও লাদাখের মধ্যে প্রাচীন সিল্ক রুট ধরে মালামাল আনানেয়ার কাজে দুই কুঁজওয়ালা উট ব্যবহার করা হতো।
এ ধরনের উটের সংখ্যা কমে আসছে। লাদাখে মাত্র ৩৫০ থেকে ৪০০টি রয়েছে।
সরকার এর বংশবৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়ায় এখন সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বৃদ্ধ উটের জায়গায় নতুন উট আসবে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এখন প্রত্যন্ত সীমান্ত এলাকায় লজিস্টিক ও টহলের সামর্থ্য বাড়ানোর দিকে মনযোগী হয়েছে।
২০১৬ সালে চীনের সঙ্গে দোকালাম অচলাবস্থা দেখা দেয়ার পরপরই এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়।
সূত্র : এসএমএম