চীনের মোকাবেলা : ভারতের হাতে এখন হাইপারসনিক মিসাইল
চীনের মোকাবেলা : ভারতের হাতে এখন হাইপারসনিক মিসাইল - ছবি সংগৃহীত
ভারত বিশ্বের সেই অভিজাত দেশগুলোর একটি যাদের পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। বেশ কতগুলো সূত্র জানিয়েছে, ভারত এখন আরেকটি অভিজাত ক্লাবের সদস্য হয়েছে, যাদের হাইপারসনিক মিসাইল রয়েছে। বহু বছরের গবেষণা ও উন্নয়নের পর চলতি মাসে ভারত সফলভাবে তাদের নিজস্বভাবে তৈরি হাইপারসনিক টেকনোলজি ডেমন্সট্রেটর ভেহিকেলের (এইচএসটিডিভি) পরীক্ষা চালিয়েছে।
এ পর্যন্ত শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া আর চীনের কাছে এই প্রযুক্তি ছিল। সোমবার এমন সময় এই পরীক্ষা চালালো ভারত যখন সীমান্তে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল এলাকায় নয়াদিল্লী আর বেইজিংয়ের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ডিফেন্স রিসার্চ অ্যাণ্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশান (ডিআরডিও) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, এই মিশনের মাধ্যমে তাদের হাইপারসনিক সক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং টুইটারে বলেছেন, “ডিআরডিও আজ সফলভাবে হাইপারসনিক টেকনোলজি ডেমন্সট্রেটর ভেহিকলের পরীক্ষা চালিয়েছে। এই সাফল্যের মাধ্যমে, সব গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগুলোকে পরবর্তী ধাপের জন্য কাজে লাগানো হচ্ছে”।
ডিআরডিও আরও জানিয়েছে যে, আগে পরীক্ষিত সলিড রকেট মোটর ব্যবহার করে এই হাইপারসনিক ক্রুজ ভেহিকেলের পরীক্ষা চালানো হয়েছে, যেটা এই মিসাইলকে ত্রিশ কিলোমিটার পর্যন্ত নিয়ে যায়, যেখানে এর অ্যারোডাইনামিক্সের হাইপারসনিক গতি সক্রিয় হয়।
মিসাইলের ক্রুজ ধাপের পারফর্মেন্স পর্যবেক্ষণের জন্য বঙ্গোপসাগরে একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক টুইটে বলেছেন, “হাইপারসনিক পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্নের জন্য ডিআরডিও-কে অভিনন্দন। আমাদের বিজ্ঞানীরা যে স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন তৈরি করেছে, সেটা মিসাইলের গতিকে শব্দের গতির ছয় গুণ বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে! খুব কম দেশেরই এই মুহূর্তে এই সক্ষমতা রয়েছে”।
অস্ত্র প্ল্যাটফর্ম ও আরও কিছু
এইচএসডিটিভি’র বেশ কিছু ব্যবহার রয়েছে, যার মধ্যে এয়ার ডিফেন্স মিসাইল এবং নজরদারীর বিষয়টিও রয়েছে। সেইসাথে, এই প্রযুক্তিকে জ্বালানি-সাশ্রয়ী, নিম্নমূল্যের এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের যান হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
অস্ত্র হিসেবে হাইপারসনিক মিসাইলের বৈশিষ্ট্য হলো এটা শব্দের গতির চেয়ে পাঁচগুণ গতিতে ছুটতে পারে এবং কম্পিউটারের মতো নিখুঁত পরিমিতির সাথে উড়তে এবং পৃথিবীপৃষ্ঠে ফিরে আসতে পারে, যে কারণে এগুলোকে প্রতিরোধ করা প্রায় অসম্ভব। এর গতি আর শক্তি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, হাইপারসনিক মিসাইলগুলোতে কোন বিস্ফোরক ব্যবহার না করা হলেও সেটা বিরাট ধ্বংস ঘটাতে পারে।
কিন্তু এটাতে একইসাথে পারমানবিক ওয়্যারহেডও ব্যবহার করা যায়। আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইলের সাথে পারমানবিক ওয়্যারহেড যুক্ত করার বিষয়টি সারা বিশ্বের সামরিক বাহিনীগুলোর জন্য মারাত্মক উদ্বেগের কারণ।
সূত্র : ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট