করোনা নিয়ে নতুন করে বিপাকে চীন

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Sep 18, 2020 10:19 am
করোনা নিয়ে নতুন করে বিপাকে চীন

করোনা নিয়ে নতুন করে বিপাকে চীন - প্রতীকী ছবি

 

চীনা ভাইরোলজিস্ট মি লেং ইয়ান বোমাটা ফাটিয়েছেন আগেই। এবার করোনা ভাইরাস নিয়ে নতুন গবেষণায় ফের সন্দেহের তির চীনের দিকে। কোভিডের উৎপত্তি প্রাকৃতিকভাবে, নাকি উহানের ল্যাবে— এই নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে চীনকে স্বস্তি দিয়েছিল বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান জি অ্যান্ডারসেনের গবেষণা। 

তিনি এবং তার সহযোগী গবেষকরা বলেছিলেন, এক বিশেষ ধরনের বাদুড়ের শরীরে পাওয়া ভাইরাসের সঙ্গে করোনার মিল প্রচুর। তাই কোনো ল্যাবে নয়, কোভিডের উৎপত্তি বাদুড়ের শরীরেই। এই তত্ত্বকে হাতিয়ার করে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করেছে চীন। যদিও এবার অ্যান্ডারসেনের এই রিপোর্ট নস্যাৎ করে দিলো ১২টি দেশের ১৮ জন বিজ্ঞানীর গবেষণা। তাদের পাল্টা দাবি, প্রাকৃতিকভাবে এই ভাইরাসের উৎপত্তি হয়নি। যার জেরে গোটা বিশ্বের বিজ্ঞানী মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

তাৎপর্যের বিষয়, সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের মধ্যে চারজন ভারতীয়। তাদের মধ্যে শেখ শরিফ হাসান ও পবিত্র পাল চৌধুরী নামে দুই বাঙালিও রয়েছেন। বাকি দু’জন হায়দরাবাদ ও বিহারের। গবেষণাপত্রটি আমেরিকার ‘জার্নাল অব মেডিক্যাল ভাইরোলজি’-তে প্রকাশের পর ব্যাপক সাড়া ফেলে। যে কারণে ‘নেচার’-এর মতো পত্রিকা তাদের ‘ওপিনিয়ন কলাম’ থিসিসটি আরো একবার ছাপানোর কথা ভাবনাচিন্তা করছে। গবেষকদের পক্ষ থেকে শেখ শরিফ হাসান জানিয়েছেন, অ্যান্ডারসেনের গবেষণা অনুযায়ী, ‘আরএটিজি১৩’ প্রজাতির বাদুড়ের শরীরে বাসা বাঁধা ভাইরাসের সঙ্গে নোভেল করোনা ভাইরাসের ৯৬ শতাংশ মিল রয়েছে। কিন্তু, তা সত্ত্বেও বেশ কিছু জায়গায় আমাদের খটকা লেগেছিল। সেই কারণে এই গবেষণা শুরু হয়।

গবেষকদের দাবি, প্রথম খটকা ধরা পড়ে মৃত্যুহারের পার্থক্যে। ২০০২ সালের সার্স ও ২০১২ সালের মার্স ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যুহার ছিল যথাক্রমে ১১ শতাংশ ও ৩৪ শতাংশ। অথচ এখন কোভিডে সেই হার মাত্র ২ শতাংশের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। আগের দু’টি ভাইরাসের ক্ষেত্রে মৃত্যুর প্রকোপ বেশি হলেও সংক্রমণ বিশ্বব্যাপী মহামারী সৃষ্টি করতে পারেনি। কিন্তু করোনা সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।

শুধু তাই নয়, দু’ধরনের ভাইরাসের তুলনা করতে গিয়ে বেশ কিছু পার্থক্য সামনে এসেছে। যেমন, শরীরে প্রবেশের পর ‘সার্স কোভ ২’-এর (নোভেল করোনা ভাইরাসের পোশাকি নাম) স্পাইক প্রোটিনে সেভাবে কোনো পরিবর্তন হয় না। কিন্তু আগের ভাইরাসগুলোর ক্ষেত্রে এহেন পরিবর্তন আলাদাভাবে লক্ষ্য করা যেত। আবার শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী কোষ বা কোনো অ্যান্টিবডি যাতে ভাইরাসের ক্ষতি না করতে পারে, তার জন্য তার বিশেষ খাঁজে কিছু অংশ লুকনো থাকে। একে বলা হয় ‘ক্যানিয়ন হাইপোথিসিস’। যা ‘সার্স কোভ ২’-এ অনুপস্থিত। এর আকার সমতল ও গঠন খাঁজবিহীন। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী কোষ সেগুলোকে খুব সহজে মেরে ফেলে। সেই কারণেই কোভিডে মৃত্যুহার অনেক কম। আগের ভাইরাসগুলোর স্পাইক প্রোটিন দ্রুতহারে অভিযোজিত হতো।

কিন্তু ‘সার্স কোভ ২’-এর স্পাইক প্রোটিনে এখন পর্যন্ত একটিমাত্র উল্লেখযোগ্য অভিযোজন লক্ষ্য করা গেছে। অতএব বোঝা যাচ্ছে, সার্স বা মার্স ভাইরাসে বিবর্তিত হয়ে করোনার সৃষ্টি হয়নি। কারণ, যাবতীয় বৈশিষ্ট্য বিবর্তনের নিয়মের উল্টা পথে হেঁটেছে। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য এক্ষেত্রে অনুপস্থিত।

সূত্র : বর্তমান

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us