ইরানকে হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের
ইরানকে হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের - ছবি সংগৃহীত
কয়েক দিন আগেই ইরানের ওপর থেকে অস্ত্র সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে বাধা দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য তাদের সেই উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। এবার রাশিয়া ও চীনের থেকে ইরান অস্ত্র কেনার চেষ্টা করলে আমেরিকা তাতে বাধা দেবে বলে হুমকি দিলেন মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।
মঙ্গলবার ফ্রান্সের একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মাইক পম্পেও বলেন, ‘বিশ্বকে সুরক্ষিত রাখতে সবরকমের চেষ্টা করে আমেরিকা। এই জন্য আমরা নির্দিষ্ট একটি পরিকল্পনা মেনে চলি। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইরান যে চীনা ট্যাঙ্ক ও রাশিয়ান এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কেনার চেষ্টা করছে তাতে আমরা বাধা দেব। কারণ ওই অস্ত্রগুলো আবার লেবাননে অশান্তি সৃষ্টিকারী হিজবুল্লার হাতে তুলে দিচ্ছে তেহরান। খুব তাড়াতাড়ি এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতিও।’
ইরানের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি আরো বলেন, ‘লেবাননে অশান্তি সৃষ্টিকারী হিজবুল্লাকে সবরকম সমর্থন দিচ্ছে ইরান। পশ্চিম এশিয়াতে অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টির পিছনেও তেহরানের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। ফিলিস্তিন সংঘাত নয় বরং ইরানের হুমকিই এখানকার অবস্থার জন্য দায়ী। তাই এখন ইরানের হাতে অনেক টাকা ও অস্ত্র তুলে দিলে তা উগ্রবাদীদের কাজেই ব্যবহার হবে। এটা কখনো মেনে নেয়া যায় না।’
আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে ইরান। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত খবর প্রকাশ পেতেই ইরানকে হুমকি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি টুইট করেন, সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার শোধ নিতে ইরান এরকম ষড়যন্ত্র করছে। তাদের যেকোনো ধরনের হামলার জবাব দেয়া হবে হাজার গুণ।’
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
নির্বাচিত হলে ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তিতে ফিরবেন বাইডেন
পার্স টুডে
আগামী ৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে। এই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সব পক্ষই নিজেদের প্রচারণাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। একই সাথে দেশের জনগণকে একের পর এক প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।
এ দিকে ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হতে পারলে যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের সাথে পরমাণু সমঝোতায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। সম্প্রতি মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএনর ওয়েবসাইটে লেখা এক প্রবন্ধে জো বাইডেন এ কথা লিখেছেন। তিনি পরমাণু সমঝোতাকে ‘কঠিনভাবে মেনে চলার চুক্তি’ বলে মন্তব্য করেন। জো বাইডেন বলেন, ‘আমি ইরানকে কূটনীতির পথে ফিরে আসার প্রস্তাব দেব। যদি ইরান সমঝোতায় ফিরে আসে তা হলে আমেরিকাও তাতে যুক্ত হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আর এখন কিছু পদক্ষেপ নেব যাতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের করোনাবিরোধী লড়াই বাধাগ্রস্ত না হয়। এরপর আমি ধীরে ধীরে ট্রাম্পের আরোপ করা অসম্মানজনক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবো।’ ২০১৮ সালের মে মাসে ট্রাম্প ইরানের সাথে করা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যান। ইরানও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পরমাণু সমঝোতার কিছু ধারা বাস্তবায়ন স্থগিত রেখেছে।
তবে আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী জো বাইডেন যদি নির্বাচিত হন তা হলেও ইরানের ওপর মার্কিন সব নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এমনকি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে যেসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে সেগুলোও প্রত্যাহার করা হবে না। ইরানের বেশির ভাগ জনগণের ধারণা এমনই। এ অবস্থায় তারা বলছেন, ইরানের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ট্রাম্প কিংবা বাইডেন কারো সাথে আলোচনা করা উচিত হবে না। ইরানের জনগণ আরো মনে করছেন যে, ভবিষ্যতে যদি কখনো যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা হয় তা হলে ইরাক ও সিরিয়ায় সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ের বিষয়টি আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করা তেহরানের উচিত হবে না। এ ছাড়া ইরানের নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার কোনো ইস্যু হতে পারে না।
ইরানের বহুসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদেরও একই ধরনের মতামত। তারা বলছেন, বাইডেন এরই মধ্যে এক বক্তৃতায় বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আরো ‘স্মার্ট উপায়’ রয়েছে।