ভারতের মোকাবেলায় পাকিস্তানে রুশ ট্যাঙ্ক!
আল খালিদ ১ - ছবি : সংগৃহীত
চলমান ভারত ও চীনের মধ্যকার সীমান্ত বিরোধে পাকিস্তানের হয়তো সক্রিয় কোনো ভূমিকা নেই। কিন্তু তিন পরমাণু শক্তিধর দেশই তাদের সামরিক ভাণ্ডার বাড়াচ্ছে, সম্ভাব্য সামরিক সঙ্ঘাতের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
নয়া দিল্লি যখন ড্যাসাল্ট রাফাল জেট কেনার জন্য ফ্রান্সের সাথে বিশাল এক চুক্তি করেছে, তখন পাকিস্তান সেনাবাহিনী আল খালিদ-১ গ্রহণ করেছে। এটি ১৯৯০-এর দশকে পাকিস্তান ও চীনের যৌথভাবে নির্মাণ করা ট্যাঙ্কের উত্তরসূরী।
ইসলামাবাদের আধুনিক প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারী চীন ও যুক্তরাষ্ট্র হলেও পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা বাড়ছে অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা সরঞ্জামে। আর পাকিস্তানের হাতে আছে এমন একটি সামরিক সরঞ্জাম, যা ছিল নির্মাণের সময়ের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ট্যাঙ্ক। তবে রুশ উৎসের টি-৮০ ট্যাঙ্কটি এখনো বিশ্বে বেশ ভয়াল অস্ত্র হিসেবে পরিচিত।
টি-৮০ তৃতীয় প্রজন্মের মেইন ব্যাটল ট্যাঙ্ক (এমবিটি) প্রথম সামরিক বাহিনীতে প্রবেশ করে ১৯৮৬ সালে। সোভিয়েত ইঞ্জিনিয়ার নিকোলাই পপভের ডিজাইনে এই ট্যাঙ্কে গ্যাস টার্বাইন ইঞ্জিন থাকে। এখানেই প্রথমবারের মতো প্রাইমারি প্রপালসন ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়।
অবশ্য, এটি আধুনিকায়ন করা হয় টি-৮০ইউটি নামে। এটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে প্রবেশ করে ১৯৯০-এর দশকে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৯৯৭ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ইউক্রেন থেকে মোট ৩২০টি ট্যাঙ্ক লাভ করে।
গুঞ্জন রয়েছে, ইউক্রেন ও পাকিস্তানের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী, এসব ট্যাঙ্কে আরো অনেক ফিচার যোগ করে উন্নত করা হয়।
দি ডিপ্লোম্যাটে ফ্রাঞ্জ-স্টিফেন গ্যাডি বলেন, পাকিস্তানের টি-৮০ইউডি ট্যাঙ্কগুলো ‘টি-৮৪ অপ্লোট এম’ এমবিটি মানে উন্নীত করা হয়েছে। এর টারেট অনেক বড়, সেন্সেরেও আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
বিশ্ব এখন নতুন নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করে পুরনোগুলোকে বাদ দিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু রাশিয়া ও পাকিস্তানের মতো অনেক দেশ তাদের পুরনো সরঞ্জাম আধুনিকায়ন করার পথ বেছে নিয়েছে।
আড়াই দশক আগের ট্যাঙ্ক এখনো সার্ভিসে থাকার কারণ এটি সব আবহাওয়ায় কাজ করতে পারে। রাশিয়ার সাব-জিরো তাপমাত্রায় কাজ করার জন্যই এ ধরনের ট্যাঙ্ক নির্মাণ করা হয়েছিল। এই ট্যাঙ্ক টি-৭২ এবং এমনকি টি-৯০-এর চেয়েও ভালোভাবে কাজ করতে পারে বলে মনে করা হয়ে থাকে।
মাইনাস ৩০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ডিজেল ট্যাঙ্কের যেখানে চালু হতে সময় নেয় ৪৫ মিনিট পর্যন্ত, সেখানে এই ট্যাঙ্ক সাথে সাথেই কাজ শুরু করে দিতে পারে। এর ফলে সম্ভাব্য যুদ্ধে এই ট্যাঙ্ক পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হতে পারে।
টি-৮০ এমবিটি শত্রুর সাজোয়া যান, সৈন্য, অবস্থান, স্বল্প উচ্চতায় থাকা হেলিকপ্টারকে টার্গেট করে বিশেষভাবে তৈরী। এটি দিনে বা রাতে- সবসময়ই কাজ করতে পারে।
এই ট্যাঙ্ক আবার অন্যতম ক্ষিপ্রগতির। এর ওজন ও শক্তি অনুপাত চমৎকার। এই ট্যাঙ্ক চরম আবহাওয়াতেও কাজ করতে পারে বলে মনে করা হয়ে থাকে।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের হিসাব অনুযায়ী, পাকিস্তানের কাছে এখন ২,২০০ ট্যাঙ্ক রয়েছে। তারা বিশ্বে ট্যাঙ্ক শক্তির দিক থেকে ১২তম স্থানে আছে। তাদের ট্যাঙ্কের মধ্যে আছে আল খালিদ, আল খালিদ ১, আল জারার, টি-৮০, টাইপ ৮৫, টাইপ ৬৯, টাইপ ৫৯।
সূত্র : ইউরেশিয়ান টাইমস/এসএএম