বিদ্রোহীদের সামরিক একাডেমি, আরো চাপে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

হতেত নাইঙ জাও | Sep 16, 2020 07:33 am
বিদ্রোহীদের সামরিক একাডেমি, আরো চাপে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

বিদ্রোহীদের সামরিক একাডেমি, আরো চাপে মিয়ানমার সেনাবাহিনী - প্রতীকী ছবি

 

মিয়ানমারের সবচেয়ে শক্তিশালী সশস্ত্র গ্রুপ তাদের নিজস্ব সামরিক একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছে।

সরকারের সাথে যুদ্ধবিরতি সই করার ৩০ বছরেরও বেশি সময় পর ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি (ইউডব্লিউএসএ) তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা পাঙ্ঘসঙের ইয়ঙ তেই গ্রামে ১১ সেপ্টেম্বর নতুন সামরিক একাডেমি উদ্বোধন করে।

ইউডব্লিউএসএ চেয়ারম্যান বাও ইয়োজিয়াঙ, সামরিক প্রধান ঝাও ঝঙতাং, পররাষ্ট্র বিভাগের প্রধান ঝাও গোয়ান ও অন্যান্য ইউডব্লিউএসএ কর্মকর্তা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে একাডেমির আসন্ন সেশনে শতাধিক ক্যাডেট অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইউডব্লিউএসএ মুখপাত্র ও লিয়াজোঁ অফিসার নাই রাং বলেন, ভবিষ্যত নেতাদের গঠন করাই সামরিক একাডেমির লক্ষ্য।
এই সামরিক একাডেমির মাধ্যমে ইউডব্লিউএসএ আশা করছে তাদের তরুণতর প্রজন্মকে আধুনিক সময়ের চ্যালেঞ্জগুলো (মনোগত ও প্রায়োগিকগত) কিভাবে সামাল দেয়া সম্ভব। অবশ্য শিক্ষা পদ্ধতির বিস্তারিত তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

মুখপাত্র বলেন, শিক্ষাপ্রক্রিয়া চলবে চার বছর। পরিবর্তিত সময়ের আলোকে রাজনৈতিক ও সামরিক প্রশিক্ষণ স্কুলগুলোকে উন্নতি করা দরকার।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, ইউডব্লিউএসএর উচিত সামরিক একাডেমি প্রতিষ্ঠার চেয়ে জাতীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তির (এনসিএ) প্রতি বেশি নজর দেয়া। এই গ্রুপটি এখনো এনসিএতে সই করেনি।
তিনি বলেন, আমরা বারবার বলে আসছি যে সশস্ত্র গ্রুপগুলের উচিত হবে না তাদের বাহিনী বা এলাকা সম্প্রসারণ করা। তাদের উচিত ইউনিয়নের স্বার্থ স্থায়ী শান্তির পথে চলা।
সরকারের সাথে দ্বিপক্ষীয় যুদ্ধবিরতির ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে ইউডব্লিউএসএ গত বছরের এপ্রিলে একটি সামরিক প্যারেডের আয়োজন করেছিল। এতে ড্রোন, বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রসহ তাদের সামরিক সম্ভারের প্রদর্শনী করেছিল।

ওই সময় মিয়ানমারের সামরিক নেতারা বলেছিলেন, গ্রুপটির সমান্তরাল সেনাবাহিনী গঠন সত্ত্বেও শান্তিপ্রক্রিয়ার স্বার্থে তারা ইউডব্লিউএসএর বিশাল সামরিক প্যারেড মেনে নিচ্ছেন।
ইউডব্লিউএসএ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৯ সালের ১৭ এপ্রিল। কমিউনিস্ট পার্টি অব বার্মার (সিপিবি) থেকে আলাদা হয়ে তারা একই বছর ওই সময়ের মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সাথে- দি স্টেট ল অ্যান্ড অর্ডার রেস্টোরেশন কাউন্সিল- সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করে।
তারা ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি ও ওয়া স্টেট পিপলস গভার্নমেন্ট প্রতিষ্ঠা করে। এর পর থেকে ইউডব্লিউএসএ নীরবে মিয়ানমারে বৃহত্তম, সর্বোত্তম অস্ত্রে সজ্জিত সশস্ত্র গ্রুপে পরিণত হয়েছে। তাদের সৈন্য সংখ্যা আনুমানিক ৩০ হাজার। এছাড়া সহায়ক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ১০ হাজার।
১৯৮৯ সালে যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইউডব্লিউএসএ ও মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর মধ্যে কোনো সঙ্ঘাত হয়নি।

ইউডব্লিউএসএর নেতৃত্বাধীন সাতটি জাতিগত গ্রুপের ব্লক ফেডারেল পলিটিক্যাল নিগেশিয়েশন অ্যান্ড কনসালটেটিভ কমিটি শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় সরকারের সাথে এনসিএর বিকল্প কিছুর দাবি জানাচ্ছে।
শান্তি ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ড. মিন জাও ওও জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান জেনারেল খিন নিয়ন্তকে সরিয়ে দেয়ার পর সরকার ও ওয়া নেতাদের মধ্যকার সম্পর্কে অবনতি ঘটেছে।
তিনি বলেন, সমস্যার অন্যতম কারণ আলোচনার চ্যানেলের অভাব।
তিনি বলেন, সাধারণভাবে, সব সশস্ত্র গ্রুপেরই সামরিক প্রশিক্ষণ হয়ে থাকে। কেআইএ (কচিন ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্মি) ও টিএনএলএ (তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি)-এর সামরিক একাডেমি রয়েছে। ফলে ইউডব্লিউএসএরও থাকতে পারে।

মিয়ানমারের ২০০৮ সালের সংবিধানে শান রাজ্যের ওয়া স্টেটকে স্ব-শাসিত অঞ্চল হিসেবে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। এতে দুই জেলার মধ্যে ছয়টি টাউনশিপ বিভক্ত করা হয়েছে। এসব জোন কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে মনে করা হলেও কার্যত ওয়াই সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের নিজস্ব সরকার ও প্রশাসনও রয়েছে।

ইউডব্লিউএসএ মিয়ানমারের অন্যান্য জাতিগত গ্রুপের মতো পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসন দাবি করছে। তারা চীনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখছে বলে সমালোচিত হয়ে থাকে।

সূত্র : দি ইরাবতী


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us