ভুল করেছিল ভারতীয় সামরিক বাহিনী!
জেনারেল রাওয়াত - ছবি : সংগৃহীত
কয়েক দশক ধরেই চীন-ভারত সম্পর্কে সীমান্ত বিরোধ সবচেয়ে বড় উত্তেজনা সৃষ্টিকারী বিষয়। বর্তমান উত্তেজনা সম্পর্কে প্রখ্যাত প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) ইনামুল হক বলেন, ভারত সত্যিকারের একটি ভীমরুলের চাকে ঢিল ছুঁড়েছে।
জেনারেল হক বলেন, আমি মনে করি না যে দরকষাকষি বা দাবি আদায়ের মতো কোনো অবস্থানে আছে ভারত। এই সঙ্কটে চূড়ান্ত মুখ রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে যোগাযোগ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ভারত কম অংশ পাবে। কারণ, তাদের আলোচনার অবস্থান দুবৃল আর চীন ভালো মনোভাবে নেই।
সাবেক এই জেনারেল বলেন, কোনো পক্ষই যুদ্ধ চায় না। তিনি ভারতের জেনারেল বিপিন রাওয়াতের সমালোচনা করে বলেন, ভারতীয় সামরিক বাহিনী লাদাখ সঙ্কটকে রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে সম্ভবত আনায়াসসাধ্য বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করেছিল। এর কী পরিণাম হতে পারে, সে ব্যাপারে তাদের তেমন কোনো ধারণা ছিল না।
ওয়াশিংটন ডিসি থেকে দেখা
সর্বশেষ অবস্থা থেকে মন্তব্য করতে গিয়ে দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, দুই পক্ষ এখনো বিপদ থেকে মুক্ত হয়নি। মস্কোতে সই হওয়া চুক্তি সঙ্কট অবসানের ইঙ্গিত দেয়নি। পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত। নতুন চুক্তির ব্যাপারে খুব বেশি আশাবাদী হওয়া ঠিক নয় আমাদের।
উইড্রো উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সিনিয়র এসোসিয়েট ও এশিয়া প্রোগ্রামের উপ-পরিচালক কুগেলম্যান বলেছেন, দুই দেশের শীর্ষ দুই কূটনীতিক একটি চুক্তিতে সই করেছেন। সম্ভবত এটি রণাঙ্গনের পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কহীন।
এই সঙ্কটে ভারতের বিকল্প সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে কুগেলম্যান বলেন, নয়া দিল্লির বিকল্প সীমিত, বিশেষ করে সামরিক দিক থেকে।
তিনি বলেন, ভারতের সবচেয়ে বড় বাজি হলো তার ভূমি দখলে রাখা। উভয়পক্ষই মুখরক্ষামূলক ব্যবস্থার জন্য মুখিয়ে আছে।
তিনি বলেন, তবে এর মানে এই নয় যে এই সঙ্কট ভেল্কিবাজির মতো শেষ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, চীন যদি খারাপ আবহাওয়ায় সৈন্য রাখতে চায়, তবে ভারতের সামনেও সৈন্য রাখা ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না।
ওয়াশিংটনভিত্তিক এই বিশেষজ্ঞ বলেন, বেইজিং বা নয়া দিল্লির কেউ তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চায় না। তবে তিনি মনে করেন, চীনা সৈন্যদের অবস্থান ও চলাচলের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র গোয়েন্দা সমর্থন দেবে নয়া দিল্লিকে।
দিল্লিভিত্তিক সাংবাদিক রাহুল বেদির এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপারেশন পারাকারামে যেভাবে করেছিল, সেভাবে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী সরে আসতে পারবে না।তিনি দি ওয়্যারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, ভারতকে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে, ২৫ থেকে ৩০ হাজার সৈন্য মোতায়েন করতে হবে। চীনের সাথে সঙ্ঘাতে ভারতের বিপুল ব্যয় হবে। আর তাতে করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের কাজ পিছিয়ে যাবে।
সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন