চীনের মোকাবেলায় রাফালে কাজ হবে না!
রাফাল জঙ্গি বিমান - ছবি : সংগৃহীত
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের প্রথম রাফাল জেটের সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তিনি ভারতের শত্রুদের জন্য এটিকে একটি ‘কড়া বার্তা’ হিসেবে অভিহিত করেন। চীনের সাথে সীমান্ত বিরোধ বাড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে তিনি এই বার্তা দিলেন। ভারত ৯.৪ বিলিয়ন ডলারে ফ্রান্সের কাছ থেকে ৩৬টি রাফাল কিনছে। ওই বিমানগুলোর প্রথম চালান হিসেবে এই ৫টি ভারতীয় বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হলো।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ টুইটে বলেন, রাফালের অন্তর্ভুক্তি বিশ্ব ও বিশেষভাবে যারা ভারতের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে, তাদের প্রতি একটি কড়া বার্তা। তিনি অবশ্য সরাসরি চীনের কথা উল্লেখ করেননি। রাজনাথ আরো বরেন, আমাদের দেশ কোথাও শান্তি বিঘ্নিত করে, এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না। আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের কাছ থেকেও একই বিষয় চাই।
চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে চীনের সাথে থাকা হিমালয় অঞ্চলে ৪৫ বছরের মধ্যে প্রথম গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। আর গত জুনে চীনা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়।
ভারত ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৃহস্পতিবার মস্কোতে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে তাদের যৌথ বিবৃতিতে সীমান্ত উত্তেজনার কথা উল্লেখ ছিল না।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াঙ ইয়ি ও তাদের সাথে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভের দেয়া বিবৃতিতে বিশ্ব প্রবৃদ্ধি, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বাড়াতে তিন দেশের মধ্যে অভিন্ন উন্নয়ন ও সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়।
তবে চীনের সাথে সম্পর্কের অবনতি হওয়ার আগেই ভারত কৌশলগতভাবে পাশ্চাত্যের ঘনিষ্ঠ হচ্ছিল। দেশটি যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াচ্ছিল। তারা তাদের সামরিক বাহিনীকে আধুনিকায়ন করার জন্য ১৩০ বিরিয়ন ডলারের বাজেট প্রণয়ন করেছে।
নয়া দিল্লিভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ মনোজ যোশী বলেন, নতুন রাফাল জেটগুলো ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মনোবল বাড়াবে। তবে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, চীনের মোকাবেলা করার সময় এই অল্প কয়েকটি রাফালকে বিশাল কিছু হিসেবে গণ্য করা সম্ভব নয়। অল্প কয়েকটি বিমান দিয়ে চীনের মতো সামরিক শক্তিকে নত করা যাবে না।
সূত্র : জিভিএস
যুক্তরাষ্ট্রকে ফের হুঁশিয়ারি বেইজিংয়ের
পার্স টুডে
দণি চীন সাগরের নৌসীমা নিয়ে মতবিরোধে হস্তেেপর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে চীন। বেইজিং বলেছে, ওয়াশিংটন উত্তেজনা উসকে দিচ্ছে যা এই কৌশলগত অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে ‘সবচেয়ে বড় বিপজ্জনক’ উপাদান হিসেবে কাজ করছে।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আসিয়ান জোটের শীর্ষ সম্মেলনে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে দেয়া এক বক্তৃতায় এ মন্তব্য করেন। ওয়াং বলেন, ‘দণি চীন সাগরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা চীনের কাছে কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে। এ ছাড়া এ অঞ্চলকে ঘিরে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো এবং চীনের অভিন্ন কৌশলগত আকাক্সা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই আকাক্সার প্রতি আমেরিকাসহ সব বহিঃশক্তি সম্মান প্রদর্শন এবং উত্তেজনা সৃষ্টি করে তা থেকে ফায়দা লোটা বন্ধ করবে বলে চীন আশা করছে।’ চীনের শীর্ষ কূটনীতিক অভিযোগ করেন, চীনসহ আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো যখন সংলাপের মাধ্যমে তাদের পানিসীমা নিয়ে মতবিরোধ নিরসনের চেষ্টা করছে তখন আমেরিকা এসব দেশের মধ্যে মতবিরোধ উসকে দেয়ার চেষ্টা করছে।
মার্কিন সরকার গত মাসে চীনের ২৪ নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান দণি চীন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ ও সামরিক তৎপরতার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করে ওয়াশিংটন। এই বিরোধপূর্ণ পানিসীমাকে কেন্দ্র করে এই প্রথম ওয়াশিংটন বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদপে নিলো।
বেইজিং দণি চীন সাগরের বেশির ভাগ অঞ্চলের মালিকানা দাবি করে। সম্পদ-সমৃদ্ধ এ অঞ্চলের মালিকানার অন্যান্য দাবিদার দেশ হচ্ছে ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, তাইওয়ান ও ভিয়েতনাম। মার্কিন সরকার এই দ্বন্দ্বে চীনের কোনো কোনো প্রতিবেশী দেশকে সমর্থন দিচ্ছে। দণি চীন সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল থেকে বছরে আয় হয় ৫ ট্রিলিয়ন ডলার।
আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় নৌযান চলাচলের স্বাধীনতা রার অজুহাত দেখিয়ে আমেরিকা দণি চীন সাগরে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করছে। চীন এ অঞ্চলে মার্কিন নৌ ও বিমান বাহিনীর সঙ্গে বেইজিংয়ের সঙ্ঘাত বেধে যেতে পারে বলে ওয়াশিংটনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে।