ভারতের হুমকি

মো: বজলুর রশীদ | Sep 10, 2020 05:39 pm
ভারতের হুমকি

ভারতের হুমকি - ছবি সংগৃহীত

 

চীনের সাথে ‘অলটাইম’ বন্ধুত্ব এবং ভারতের সাথে বিরোধের কারণে লাদাখ ইস্যুতে পাকিস্তান কাশ্মিরের বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন। এখানে ১৫ জুন রাতে ও ১৬ তারিখে ভারতীয় সেনাবাহিনী চীনের হাতে ২০ জন জওয়ানকে হারায় এবং আহত হয় শতাধিক। গত ৫০ বছরে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। এবার চীন ও পাকিস্তান ছাড়াও নেপাল ও ভুটান ভারতের বিরুদ্ধে সীমানা ঠেলাঠেলির অভিযোগ এনেছে। পাকিস্তান সীমান্তবিরোধে চীনকে সমর্থন দিয়েছে এই বিশ্বাসে যে, কাশ্মির ও নদী বিরোধে দেশটি ভারতের বিরুদ্ধে চীনের সমর্থন পাবে। মহারাজা হরি সিং জনগণের কোনো সমর্থন ছাড়াই হঠাৎ করে ১৯৪৭ সালে কাশ্মিরকে ভারতের সাথে সংযুক্ত করতে পত্র দেন। লাদাখ জম্মু ও কাশ্মিরের বিতর্কিত সীমান্ত এলাকা। ২০১৯ সালের আগস্টে ভারতের পার্লামেন্ট এক আইনের বলে লাদাখকে ৩১ অক্টোবর ২০১৯ সালে ইউনিয়ন টেরিটরি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। লাদাখ কাশ্মির অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত এলাকা। ভারতের সেনাবাহিনী সেটি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। লাদাখের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এত সুন্দর যে, চোখ ফেরানো যায় না। আকাশ স্ফটিকের মতো পরিষ্কার, উঁচু পর্বতমালা, বৌদ্ধদের মঠ ছাড়া ও নানা উৎসবে মুখর থাকে লাদাখ।

ভারতের উপরিউক্ত পদক্ষেপে পাকিস্তান জোর প্রতিবাদ জানালে ভারতীয় সেনা ও রাজনীতিকরা আওয়াজ তোলেন যে, পাকিস্তানের ‘আজাদ কাশ্মির’ও দখল করতে সেনা অভিযান চালানো হবে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত গিলগিট-বাল্টিস্তানও দখল করে নেয়া হবে। এমন করে ভারত মূলত চীনকে প্রতিরোধ করতে চায়। চীন দক্ষিণ এশিয়ায় পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়ে ভারতের কর্তৃত্ব যাতে এ অঞ্চলে খর্ব না করে সেটি ভারতের বড় চিন্তা। চীন এই পথে বহুদূর অগ্রসর হয়েছে। লাদাখে চীন ঢুকে পড়ার আগেই ভারত গালওয়ান উপত্যকায় রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণ শুরু করে। এর ফলে নেপাল ও চীনের সাথে সীমান্তবিরোধ জটিলতর হয়েছে। কাশ্মিরের কিছু অংশ (আকসাই চিন) চীনের দখলে, ফলে কাশ্মির বিরোধে চীন সহজেই জড়িয়ে পড়ে।

ভারত কাশ্মিরের পুরো অংশ চায় এবং কাশ্মির সমস্যা নিরসনে কোনো তৃতীয়পক্ষের ওকালতি পছন্দ করছে না। জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাবেরও ভারত তোয়াক্কা করছে না। ট্রাম্প দুইবার কাশ্মির বিরোধ মিটমাট করে দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে ভারত তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানও বিষয়টি সুরাহা করতে চেয়েছিলেন। ভারত তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে। মালয়েশিয়ার মাহাথির মোহাম্মদও আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি কাশ্মিরে লকডাউন ও গণনির্যাতনের সমালোচনা করলে ভারতের মোদি সরকার ক্ষুব্ধ হয়ে মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল আমদানি বন্ধ করে দেয়।

চীনের বেল্ট ও রোড ইনিশিয়েটিভের ফ্লাগশিপ প্রজেক্ট ‘সিপিইসির’ ঘোর বিরোধী ভারত। এর বড় কারণ হলো, পাকিস্তানের সিপিইসি গিলগিট-বাল্টিস্তানের ওপর দিয়ে গোয়াদরে পড়েছে। এই প্রকল্প ব্যাহত হয় এমন কিছু ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত চেষ্টা করে আসছে। অধিকৃত কাশ্মিরে নানা অবকাঠামো তৈরি করে দৃশ্যমান উন্নয়ন ঘটানোরও চেষ্টা করছে ভারত। লাদাখের ঘটনায় ভারত সেনা হারানোর কারণে এখন দেশের ভেতরেই মোদি সমালোচনা ও চাপে রয়েছেন।

সচারাচর মোদিসহ বিজেপি নেতারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নরম কথা বলেন না। হিন্দুত্ববাদী নেতারা কাশ্মিরে সব দুর্যোগের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে থাকেন। শুধু মোদি নয়, প্রয়াত কংগ্রেস নেতা রাজীব গান্ধিও বলতেন, ‘পাকিস্তানের কোন কোন কমান্ডো কাশ্মিরে যুদ্ধ করছে তাদের নাম-পরিচয় আমাদের কাছে আছে।’


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us