করোনার সংক্রমণ : শিশুদের জন্য স্বস্তির খবর!
করোনার সংক্রমণ : শিশুদের জন্য স্বস্তির খবর! - ছবি : সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে শিশু ও কিশোরদের জন্য কিছুটা স্বস্তিদায়ক খবর পাওয়া গেল। আর তা কেবল শিশু-কিশোরদের জন্যই নয়, বাংলাদেশের মতো যেসব দেশের জনসংখ্যার গড় বয়স তুলনামূলক কম তাদের জন্যও এই খবরটি স্বস্তিদায়ক হতে পারে। ২০ বছর বা তার বেশি বয়সের মানুষদের তুলনায় শিশু এবং কিশোর বয়সীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক বলে জানানো হয়েছে এক গবেষণা নিবন্ধে। লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের এপিডেমিওলজিস্টদের ওই গবেষণা সম্প্রতি নেচার মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
রোগের ঝুঁকি এবং বয়সের সঙ্গে এর সম্পর্ক বের করতে সংক্রমণ মডেল ব্যবহার করা হয়েছে এই গবেষণায়। গবেষকরা বলছেন, সমীক্ষায় ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে ২১ শতাংশের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে দেখেছেন তাঁরা। অন্যদিকে ৭০ বা তার বেশি বয়সিদের ক্ষেত্রে এই হার প্রায় ৬৯ শতাংশ।
চীন, জাপান, ইতালি, সিঙ্গাপুর, কানাডা ও দক্ষিণ কোরিয়ার মহামারী সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা বলছেন, সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা শিশু-কিশোরদের কোভিড-১৯ হওয়ার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম এবং আক্রান্ত হলে তাদের অবস্থা কম গুরুতর হতে পারে।
কোভিড-১৯ সংক্রান্ত অনেক বিষয়ই এখনও বিজ্ঞানীদের অজানা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, কিছুক্ষেত্রে শিশুরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়লেও এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের বেশিরভাগই প্রাপ্তবয়স্ক। সিডিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের সাধারণত মৃদু উপসর্গ থাকে।
করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে বিশ্বজুড়ে স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইউনেস্কো ধারণা করছে, প্রায় ১৯০টি দেশে স্কুল বন্ধ হওয়ার কারণে ১৫০ কোটির বেশি শিক্ষার্থী অর্থাৎ বিশ্বের ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঘরে আটকে আছে। নিবন্ধে গবেষকরা লিখেছেন, উপসর্গহীনদের জন্য সংক্রমণ ছড়ানো নিয়ে আরও গবেষণা করা দরকার। তবে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ রোধের পদক্ষেপগুলোয় এতে সামান্যই প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষত যদি উপসর্গহীনদের থেকে সংক্রমণ কম হয়।
সমীক্ষায় এও বলা হয়েছে, শিশুদের মধ্যে নতুন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কম থাকা নিয়ে সরাসরি প্রমাণের ক্ষেত্রে মিশ্র ফল মিলেছে। তবে এটি সত্য হলে সামগ্রিকভাবে বিশ্বে কম সংক্রমণ হতে পারে। যেসব দেশের জনসংখ্যার গড় বয়স কম, সেসব দেশে মাথাপিছু কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যাও কম হওয়া স্বাভাবিক।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ ও মহামারীবিদ্যার অধ্যাপক মার্ক উলহাউস বলেন, গবেষকরা দেখেছেন, শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সংক্রমণের ঝুঁকি কম। তাছাড়া তারা সংক্রামিত হলে উপসর্গও কম দেখা যায়। তবে তারা সংক্রমণ কম ছড়ায় কি না, গবেষকরা সে সম্পর্কে এখনো সুনির্দিষ্ট কিছু জানাননি। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন।
সূত্র : বর্তমান