অদৃশ্য চ্যালেঞ্জের মুখে সালাহউদ্দিন!

ক্রীড়া প্রতিবেদক | Sep 09, 2020 10:16 pm
সালাহউদ্দিন

সালাহউদ্দিন - ছবি : সংগৃহীত

 

গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার নির্বাচনী সভায় দেখা যেত সভার সভাপতির বক্তব্য সবার শেষে। যখন সবাই সভা শেষ করে চলে যাচ্ছেন। তার কথা শোনার কোনো আগ্রহই নেই। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডরেশনের নির্বাচনে সভাপতি পদে বিগত বছর গুলোর মতো এবাবও সভাপতি পদে এমন প্রর্থীদের দেখা যাচ্ছে যাদের কাছে সভাপতি পোস্টটা যেন সেই নির্বাচনী সভার সভাপতির মতো। যার ইচ্ছে মনোনয়ন পত্র কিনে জমা দিচ্ছেন সভাপতি পদে।

সর্বশেষ নির্বাচন পর্যন্ত অবশ্য যোগ্য ব্যক্তিরাই সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এর ব্যতিক্রম হলে দেশের ফুটবলের যে কী দশা হতো তা অনুমান করা যায়। এবার বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন দুই সাবেক ফুটবলার শফিকুল ইসলাম মানিক ও বাদল রায়। একজন সভাপতিকে দেশে বিদেশে ছুটতে হয়। হতে হয় সবার কাছে গ্রহনযোগ্য। স্পন্সর যোগাড় করতে হয়। মোট কথা দেশের ফুটবলের মূল ব্যক্তি তিনি। কিন্তু এই পদে যারা দাঁড়াচ্ছেন তাতে মনে হচ্ছে একেবারে গুরুত্বহীন সভাপতি পদটি। এটা নিশ্চিত বাদল এবং মানিকের সভাপতি পদে দাঁড়ানোটা ক্ষোভ আর হতাশারই বহিঃপ্রকাশ।

২০১৬ সালের নির্বাচনে সভাপতি পদে দাঁড়ান কামরুল আশরাফ খান পোটন। ওই বছরই সভাপতি পদে মনোনয়ন পত্র জমা দেন সাবেক ফুটবলার গোলাম রাব্বানী হেলাল। টঙ্গী ক্রীড়া চক্রের নুরুল ইসলাম নুরুও দাঁড়িয়ে যান এই পোস্টে। আরেক নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দেন এক ক্রীড়া সাংবাদিক। বাদল রায় বর্তমানে বাফুফের সহসভাপতি। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি বাফুফের গুরুত্বপূর্ণ পদে। মাঝে এক বার তিনি নির্বাচন না করায় ছিলেন ফেডারেশনের বাইরে। তখন তিনি ছিলেন সুস্থ। দেশের ফুটবল উন্নয়নে বিশেষ করে ফুটবলারদের স্বার্থ রক্ষার্থে তার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। নানা সুচিন্তিত ভূমিকা রেখেছেন।

তবে বাদল রায় এখন অসুস্থ। স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে তার পক্ষে স্বাভাবিকভাবে চলাচলই কঠিন। এখন তিনি যদি কাজী সালাউদ্দিনকে হারিয়ে জিতে যান সভাপতি পদে তাহলে তার পক্ষে কি এই অসুস্থ শরীর নিয়ে সভাপতি পদের চাপ সামলানো সম্ভব হবে। এতে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। এই অসুস্থতার জন্যই তাকে সহসভাপতি পদে রাখেনি তার পক্ষের লোকজন।

কখনো বাফুফের সদস্যও ছিলেন না শফিকুল ইসলাম মানিক। দেশের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কোচ। খেলেছেন দেশের শীর্ষ ক্লাবে। কিন্তু বাফুফের মতো দেশের অন্যতম বড় ফেডারেশনের নেতৃত্ব দেয়ার মতো সাংগঠনিক দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা কি তার আছে? আগেও তিনি বাফুফের সদস্য পদে নির্বাচন করে হেরেছেন। এরপরও বাদল রায় এবং মানিক যদি শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার না করেন তাহলে তাদেরকেও ভোট দেবেন কাউন্সিলররা।

গতবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে মনোনেয়ন পত্র কিনে বসেন নুরুল ইসলাম নুরু। পরে অবশ্য প্রত্যাহার করে নেন। টঙ্গীর একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরু যদি সভাপতি পদে নির্বাচিত হতেন তাহলে তার পক্ষে কি চালানো সম্ভব হতো ফেডারেশন? লক্ষ্যণীয় বিষয় চার বছর পর সেই নুরু এখন কাজী সালাউদ্দিনের প্যানেলে সদস্য হিসেবে দাঁড়িয়েছেন।

গত বছর নুরুর সাথেই সালাউদ্দিনের বিপক্ষে সভাপতি পদে দাঁড়ান কামরুল আফরাফ খান পোটন এবং গোলাম রাব্বানী হেলাল। হেলাল পরে সালাউদ্দিনকে সমর্থন দিয়ে সরে গেলেও পোটন নির্বাচন করেছেন। ফুটবল অঙ্গনে একেবারেই অপরিচিত ছিলেন পোটন। নির্বাচনী সভায় তার বক্তব্য হতবাকই করে দিতো। এরপরও তাকে ৫০ ভোট দিয়েছিলেন কাউন্সিলররা। পোটনের মতোই ২০০৮ সালের নির্বাচনে কাজী সালাউদ্দিনকে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল ( অব:) আমিন আহমেদ চৌধুরী।

এবার সালাউদ্দিনের বিপক্ষে নির্বাচন করার কথা ছিল তরফদার রুহুল আমিনের। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণের কথা বলে সরে যান তিনি। তরফদার নির্বাচন করলে এবারও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হতো সালাউদ্দিনকে। অবশ্য তরফদারের সমর্থকরাই এখন মানিক বা বাদল রায়কে সমর্থক।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us