ভারতের টার্গেট ৬ সাবমেরিন

ভারতের টার্গেট ৬ সাবমেরিন - ছবি : সংগৃহীত
ভারত সরকার সম্প্রতি একটি তালিকা প্রকাশ করেছে, যাতে উল্লেখিত ১০১টি প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের আমদানি আগামী ডিসেম্বর থেকে ক্রমান্বয়ে নিষিদ্ধ করা হবে। ফোর্বস-এর এক রিপোর্টে বলা হয়, উপমহাদেশে হঠাৎ করে শান্তি চলে আসায় এটা হয়নি বরং ভারত চাচ্ছে তার নিজস্ব অস্ত্রশিল্প গড়ে তুলতে। ২০১৫ সাল থেকে সৌদি আরবের পর অস্ত্র আমদানির পেছনে ভারত বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি ব্যয় করেছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এখন থেকে স্নাইপার রাইফেল থেকে এয়ারক্রাফট ও যুদ্ধজাহাজ পর্যন্ত সবকিছু স্থানীয়ভাবে তৈরির চেষ্টা করবে। তবে এখন পর্যন্ত এর ফলাফল মিশ্র, তেজাস জঙ্গিবিমান এর প্রমাণ।
চীনের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ভারত তার নৌশক্তি বাড়তেও মনযোগী হয়েছে, যাতে দেশীয়ভাবে প্রথম বিমানবাহী রণতরী নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত। ভারত মহাসাগরে আধিপত্য ধরে রাখতে দিল্লীর এটা প্রয়োজন। তা নাহলে দেশটি সমুদ্র পথেও আক্রান্ত হতে পারে।
এ ধরনের হানা মোকাবেলা ও চীনের ক্রমবর্ধমান নৌ সামর্থ্যের সঙ্গে পাল্লা দিতে নৌবাহিনী শিগগিরই ছয়টি সাবমেরিন দেশে তৈরির উচ্চাভিলাষী প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে। নৌবাহিনীর পি৭৫আই প্রকল্পের অধীনে এগুলো নির্মাণ করা হবে। এক্ষেত্রে কৌশলগত অংশীদারিত্ব মডেল অনুসরণ করা হবে। এর লক্ষ্য হলো আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় সামর্থ্য বৃদ্ধি করা।
এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল (আরএফপি) অনুমোদন করা হয়েছে। অক্টোবরে এটা জারি করা হবে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ কাজের জন্য দুটি শিপইয়ার্ডকে তালিকাভুক্ত করেছে। এগুলো হলো: এলঅ্যান্ডটি গ্রুপ ও রাষ্ট্রায়ত্ব মাজাগাঁও ডকস লিমিটেড (এমডিএল)। এদেরকে সহায়তাকারী বিদেশী কোম্পানি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয় জার্মানির থাইসেনক্রুপ মেরিন সিস্টেমস, স্পেনের নাভানতিয়া ও ফ্রান্সের নেভাল গ্রুপসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠান।
উল্লেখ্য, এগুলো নতুন কোন শ্রেণীর সাবমেরিন হবে না, হবে স্করপেনে ক্লাস ডিজেল-ইলেকট্রিক/এয়ার-ইনডিপেনডেন্ট প্রপালশন (এআইপি) বোট। মূল স্করপেনে ক্লাস সাবমেরিন তৈরি করে ফ্রান্স ও স্পেন যৌথভাবে।
প্রজেক্ট ৭৫আই সাবমেরিন হলো প্রজেক্ট ৭৫ কালভরি-ক্লাস সাবমেরিনের ফলোআপ। আগের প্রকল্পের ৬টি সাবমেরিন নির্মাণের কাজ ২০২২ সালের মধ্যে শেষ হবে বলে ধরা হয়। এসব সাবমেরিন নানা কাজে ব্যবহার করতে পারবে ভারতীয় নৌবাহিনী।
পি৭৫আই সাবমেরিনে থাকবে ছয়টি টর্পেডো লঞ্চিং টিউব, ১৮টি ভারী অস্ত্র, টিউব-লঞ্চড এমবিডিএ এসএম-৩৯ এক্সসেট অ্যান্টি-শিপ মিসাইল ও প্রিসিসন গাইডেড অস্ত্র। এগুলো টিউবে থাকবে, যা সাগরে সহজেই রিলোড করা যাবে। নতুন সাবমেরিনগুলোতে প্রেসার হাল থাকবে এবং স্টেলথ সামর্থে্যর দিক দিয়েও শ্রেষ্ঠ হবে। এগুলোতে ২৫ থেকে ৩১ ক্রু ও ১৪ জন কমব্যাট ড্রাইভার থাকতে পারবে।
সাউথ চায়না সিতে চুপিসারে ঢুকে পড়ার ক্ষেত্রে এসব সাবমেরিন আদর্শ হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত স্করপেনে সাবমেরিনের গতিবিধির উপর নজর রাখা ফ্রন্টলাইন ওয়ারশিপের উপর নজর রাখার মতোই সহজ।
সূত্র : এসএএম