ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পারবে ইরান!
এফ-৩৫ - ছবি : সংগৃহীত
ইসরাইল-সংযুক্ত আরব আমিরাত চুক্তি তথা আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে কূটনৈতিক আগ্রাসন চালিয়ে দীর্ঘদিনের আরব ঐক্যকে ছিন্নভিন্ন করে দেয়া হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক আক্রমণ চালিয়ে আরব ঐক্যকে পাল্টে দেয়া হয়েছে। চুক্তির মাধ্যমে মিসর ও জর্দান ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু এই স্বীকৃতি দিয়ে তারা এখন প্রতারণার শিকার। প্রকৃতপক্ষে ইসরাইলের চলমান দখলদারিত্ব যেটার মাধ্যমে ইতোমধ্যে দুই রাষ্ট্র নীতির সব আশাকে ধূলিসাৎ করে দেয়া হয়েছে, সেটাই এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। ওমান, বাহরাইন এবং সুদান ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় বেশি আগ্রহী। প্রকৃতপক্ষে, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল-আরব ত্রিপক্ষীয় কৌশলগত জোট ইরানের বিরুদ্ধে একটি জোটে পরিণত হয়েছে। তারা শান্তি নয়, ইরানের বিরুদ্ধে জোট গঠন করতে চায়।
এ দিকে, ইরানও সময় নষ্ট না করে চীনের সাথে কৌশলগত প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে। এই অংশীদারিত্ব সমন্বিতভাবে একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূ-রাজনৈতিক ঝড়ের সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার সর্বাধিক চাপের পলিসিকে পাত্তা না দিয়ে চীন একটি আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সফল হয়েছে। এই সময়ে চীনের ‘ইকোনমিক অর্ডার’ একটি অর্থনৈতিক বাধা সৃষ্টি করেছে। এটার মাধ্যমে ইরানসহ অন্য যারা এই ব্যবস্থার অধীনে আসছে তাদেরকে নিরাপত্তা ‘ছাতা’র অধীনে নিয়ে আসা হচ্ছে।
বর্তমানে ইসরাইলের সুপিরিয়র এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান এবং যথাযথ গোয়েন্দা ব্যবস্থার কারণে ইসরাইলি হামলার কাছে ইরান অরক্ষিত তথা দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু চীনের সাহায্যে এই হুমকি মোকাবেলায় যথাযথ ব্যবস্থা গড়ে তোলাটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এটা ইরানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীনের জে-২০ ও পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ জেট ফাইটার। এটা হয়তো বা আমেরিকান এফ-৩৫ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে;
হয়তো পারবে না। তবে আউটার স্পেস-এ চীন একটি স্যাটেলাইটকে গুলি করে ভূপাতিত করতে সক্ষম। তাদের পক্ষে এফ-৩৫ কে গুলি করে ভূপাতিত করার সক্ষমতা অর্জন করা কঠিন কিছু নয়। আর চীন যখন এই সক্ষমতা অর্জন করবে তখন ইসরাইলের স্টিলথ স্ট্র্যাটেজি মুখ থুবড়ে পড়বে।
যেসব আরব দেশ ইসরাইলের সাথে শান্তি চায় তাদের প্রতি আমাদের শুভেচ্ছা। কিন্তু এটা ফিলিস্তিনিদের রক্তের বিনিময়ে নয়। সত্যের মুহূর্ত শিগগির আসবে যখন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী আমিরাত সফর করবেন এবং সেখানে তাদের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হবে। এই সময় তেলআবিব থেকে একটি বার্তা প্রচার করা হবে, ‘আমাদের যারা শত্রু, মিসর ও কেনানের সব অধিবাসী এবং ব্যাবিলনের অধিবাসীরা আমাদের ভয়ে কাঁদতে থাকবে। যখন আমরা তাদের বুকে বর্শা নিক্ষেপ করব এবং দেখতে পাবো তারা রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে এবং তাদের মাথা কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে তখন আমাদের এই ত্রাসের কারণে তাদের আকাশে বাতাসে ভয়ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে।’
লেখক : পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান
দ্য নেশন থেকে ভাষান্তর :
মুহাম্মদ খায়রুল বাশার