তুরস্ককে ঘিরে যুদ্ধের দামামা। কে আগে গোলাটা ছুঁড়বে?

তুরস্ককে ঘিরে যুদ্ধের দামামা। কে আগে গোলাটা ছুঁড়বে? - ছবি : সংগৃহীত
দীর্ঘ পাঁচ শ' বছর ধরে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী উসমানিয়া সাম্রাজ্যের কেন্দ্রস্থল তুরস্ককে ঘিরে নতুন এক যুদ্ধের ঘূর্ণাবর্ত দেখা দিয়েছে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে। ইতোমধ্যেই তুরস্ককে নয়া-উসমানিয়াবাদী শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে ফেলেছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। ন্যাটো জোটের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছে তুরস্ক মুসলিম দেশ। খ্রিস্টান ক্লাব ন্যাটোতে তাই সে অপাঙক্তেয়।
ইউরোপীয় দেশ গ্রিসের সাথে অনেক বছর ধরেই তুরস্কের বিবাদ চলে আসছে। প্রতিবেশী দু’দেশের দক্ষিণে অবস্থিত ভূমধ্যসাগরে তেল-গ্যাস আহরণ নিয়ে এ বিবাদ এখন ভয়াবহ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। গ্রিস যুদ্ধের ভাষায় কথা বলছে। কোনো রকম পিছু হটতে রাজি নয় তুরস্ক। উত্তেজনাকর পরিস্থিতি যেকোনো মুহূর্তে একটা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের রূপ নিতে পারে।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ তুরস্কের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে সৌদি আরব, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। ইসরাইলের সাথে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন ও গ্রিসের সাথে যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়ে আমিরাত প্রকাশ্যেই তুরস্কের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে।
তুরস্ক আর ইরান এ চুক্তিকে মুসলমানদের বিশেষ করে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে আমিরাতের বিশ্বাসঘাতকতা বলে ঘোষণা করেছে। ভূমধ্য সাগরীয় অপর একটি দেশ লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে তুরস্ক আর মিসর পরস্পরবিরাধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে চুক্তি সই হবার পর ইসরাইলও প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে দিয়েছে গ্রিসকে।
এরকম জটিলতার মধ্যে মূলত তুরস্কের ইসরাইলবিরোধী ভূমিকার কারণে দারুণ নাখোশ আমেরিকা। সম্প্রতি তুরস্ক মিসাইল কেনার জন্য রাশিয়ার সাথে চুক্তি করার পর আমেরিকা থেকে তুরস্কের যুদ্ধ বিমান কেনার চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে ট্রাম প্রশাসন। বিপরীত দিকে ফ্রান্স যুদ্ধ জাহাজ আর যুদ্ধ বিমান পাঠিয়ে গ্রিসের পক্ষে শক্তি যোগান দিচ্ছে।
তুরস্ককে ঘিরে ময়দানে নেমে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বেশ কয়েটি যুদ্ধবাজ দেশ ও বৃহৎ শক্তি আমেরিকা। এদিকে রয়েছে আঞ্চলিক শক্তি ইরান ও রাশিয়া।
পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিশ্লেষকদের কেউ কেউ ১৯১৪ সালের প্রথম মহাযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। তখন বাজার দখল আর সম্পদ লুটের লোভে ইউরোপের শক্তিশালী দেশগুলো নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। তুরস্ককে লড়তে হয়েছিল ইউরোপীয় শক্তির বিরদ্ধে। আর ওই যুদ্ধেই ভেঙ্গে পড়েছিল উসমানিয়া সাম্রাজ্য।
সেদিন কেউই যুদ্ধ চায়নি। চেয়েছিল নিজ নিজ দেশর স্বার্থ রক্ষা করতে। তাতেই মহাযুদ্ধ বেঁধে গিয়েছিল।
আজকেও দুই শত্রু শক্তিতে বিভক্ত ইউরোপ। তুরস্ক আর গ্রিস নিজ নিজ দেশের স্বার্থেই কথা বলছে। ইউরোপীয় শক্তির বিপক্ষে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে তুরস্ক। টান টান উত্তেজনায় উদ্বিগ্ন বিশ্ববাসী।
ভূমধ্যসাগরীয় স্বার্থ
এবারের ঘটনার সূত্রপাত ভূমধ্যসাগরের তলদেশের তেল ও গ্যাসের ভাগ নিয়ে। বছরখানেক আগে ভূমধ্য সাগরের উত্তর তীরের দেশ তুরস্ক দক্ষিণ তীরের লিবিয়ায় ত্রিপোলির সরকারের সাথে চুক্তি করেছে সাগরের তলায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য। সম্প্রতি তুরস্ক ভূমধ্যসাগরে তাদের অনুসন্ধান জাহাজ ও সাথে পাহারাদার নৌবাহিনীর জাহাজ নিযুক্ত করেছে। গ্রিস এতে বাগড়া দিয়ে বসেছে। গ্রিসের দাবি, সাগরে তাদের অর্থনৈতিক অঞ্চলে ঢুকে তুরস্ক এ অনুসন্ধান চালাচ্ছে। এরই মধ্যে গত মাসেই ভূমধ্যসাগরীয় আরেকটি দেশ মিসরের সাথে এইরকম চুক্তি করেছে গ্রিস। স্বার্থের সঙ্ঘাত এখন প্রকাশ্য মহড়ায় রূপ নিয়েছে।
গত জুন মাসে লিবিয়াগামী এটি সন্দেহজনক চোরাই অস্ত্রবাহী জাহাজকে ভূমধ্য সাগরে তাড়া করে একটি ফরাসি ফ্রিগেট। সেখানে অবস্থানরত তুরস্কের নৌবাহিনীর জাহাজের সাথে একটা সংঘর্ষ প্রায় ঘটে যাচ্ছিল। তুরস্কের যুদ্ধজাহাজ থেকে তিন তিন বার রাডার বার্তা পাঠিয়ে ফরাসি ফ্রিগেটকে টার্গেট করার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। ফ্রান্স এ ঘটনাকে “চরম আগ্রাসী” বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ফ্রান্স দাবি করেছে, তাদের জাহাজ সেখানে অস্ত্র চোরাচালান রোধের কাজে নিযুক্ত ছিল। “অপারেশন সি গার্ডিয়ান” নামের ন্যাটোর কর্মসূচির আওতায় ইউরোপীয় কমান্ডের অধীনে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে মোতায়েন ছিল ফরাসি ফ্রিগেট করবেট। এ ঘটনার পর পরপরই ফ্রান্স ওই এলাকায় পূর্ব নির্ধারিত ন্যাটোর এটি মহড়ায় তুরস্কের সাথে অংশ না নেবার কথা ঘোষণা করে।
মাসখানেক পর গ্রিক যুদ্ধ জাহজের সাথে তুরস্কের যুদ্ধ জাহাজের আর এটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় ফ্রান্স যুদ্ধ জাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠায় ভূমধ্যসাগরের পূর্বাঞ্চলে গ্রিসের সমর্থনে।
ওদিকে আগষ্টে ভূমধ্য সাগরীয় বন্দর বৈরুতে ভয়াবহ রাসায়নিক বিষ্ফোরণ ঘটে যায়। সে সুযোগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাকরণ বৈরুতবাসীকে সহানুভূতি দেখানোর নামে সফর করতে গিয়ে বিমান থেকে ভূমধ্যসাগরের সম্ভাব্য যুদ্ধক্ষেত্র পরিদর্শন করে এসেছেন। মার্কিন প্রশাসন সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে তাদের উপস্থিতি কিছুটা শিথিল করার পর ফ্রান্স সেখানে তার পুরাতন উপনিবেশগুলোর উপর খবরদারি করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়িপ এরদোগান এ কথাই সম্প্রতি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন এবং আরো কেউ কেউ ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে তাদের পুরনো উপনিবেশিক স্বার্থ চাঙ্গা করতে চায়।
এদিকে, সিরিয়ায় মার্কিন ও সৌদি সমর্থনপুষ্ট আইএস নামের সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা দমনে রাশিয়া ও ইরানের সাথে যুক্ত হয়েছে তুরস্ক। ইরাক লিবিয়া ও সিরিয়ায় পশ্চিমা স্বার্থের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ন্যাটো চুক্তিভৃক্ত তুরস্ক। লিবিয়ায় বিদ্রোহী হাফতার বাহিনীকে সহায়তা করছে মিসর। বিপরীত দিকে, সেই হাফতার বাহিনীকে দমনের কাজে সৈন্য আর অস্ত্র পাঠিয়ে ত্রিপোলি সরকারকে সহায়তা করছে তুরস্ক। ফরাসিরা সমর্থন দিচ্ছে জেনারেল হাফতারকে।
মধ্যপ্রাচ্যে এরকমবহুজাতিক স্বার্থের সংঘাত থেকে একটি বহুজাতিক যুদ্ধের দাবানল সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।উদ্বিগ্ন জার্মানি তাই এগিয়ে এসেছে মধ্যস্ততার প্রস্তাব নিয়ে। কিন্তু সারা মেলেনি।
এ অবস্থার মধ্যে গ্রিস, ইটালি, ফ্রান্স ও সাইপ্রাস তাদের যুদ্ধজাহাজ নিয়ে উসস্কানিমূলক যৌথ মহড়া চালিয়েছে তুরস্কের দক্ষিণে ভূমধ্য সাগরের পূর্ব অংশে। গত ২৬ থেকে ২৮ আগষ্ট এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গ্রিস ও প্রতিবেশী তুরস্ক পূর্বে চারচারবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। ১৯১৯-২২ সালের গ্রীকো-তার্কো যুদ্ধের মধ্য দিয়ে উসমানিয়া সাম্রাজ্য ভেঙ্গে জন্ম নিয়েছিল গ্রিস ও তুরস্ক দুটি আলাদা দেশ। সেবার তুরস্ক ছেড়ে গ্রীসে আসতে হয়েছে গোড়া খ্রিস্টানদের আর গ্রিস ছেড়ে তুরস্কে মোহাজের হতে হয়েছিল মুসলমানদের । উভয় পক্ষের ২০ লাখ মানুষকে সেদিন উদ্বাস্তু হয়ে নিজ জন্মভূমি ছাড়তে হয়েছিল।
বৃহৎ মুসলিম সাম্রাজ্যের আকাঙ্ক্ষা
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর পতন ঘটে। পতন ঘটে ৬০০ বছরের ওসমানীয় সাম্রাজ্যের। একইসাথে মুসলিম বিশ্ব থেকে বিলুপ্তি ঘটে খিলাফত শাসন। খণ্ডবিখণ্ড হয়ে পড়ে তুরস্ক। খণ্ডিত তুরুস্কের মূল ভূখণ্ড নিয়ে মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক-এর নেতৃত্বে জন্ম নেয় আধুনিক তুরস্ক।
বর্তমানকালে তুরস্ক একটি সাংবিধানিক ধর্মনিরপেক্ষ দেশ যার কোনো রাষ্ট্রধর্ম নেই। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তুরস্কের ৯৬.৫ শতাংশ লোক ইসলাম ধর্মাবলম্বী ০.৩ শতাংশ খ্রিস্টান ও ৩.২ শতাংশ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।
এশিয়া ও ইউরোপের সঙ্গগমস্থলে অবস্থিত তুরস্কের বতর্মান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়িপ এরদোয়ান হলেন দেশের ১২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে ২০১৪ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত তার দল একে পার্টি পরপর চারবার সংসদীয় নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতাসীন রয়েছে।
সম্প্রতি ইস্তানবুলের হাজিয়া সোফিয়া নামের প্রাচীন গির্জাকে পুনর্বার মসজিদে রূপান্তর করে বিশ্বের মুসলিম ও খ্রিস্টান উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। তবে এটাকে উসমানিয়া দখলদারিত্ব বলে নিন্দা করেছে মার্কিন মিত্র মিসর।
বাইজেন্টাইন শাসনামলে ৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে কনসটানটিপোলে (আজকের ইস্তাম্বুল) নির্মিত হয় রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের চার্চ হাজিয়া সোফিয়া (ল্যাটিন অর্থ-পবিত্র জ্ঞান)। পরে মুসলমানরা কনস্টানটিপোল জয় করলে ১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯ মে পবিত্র জুমার নামাজ আদায় ও খুতবা পাঠের মাধ্যমে উসমানিয়া সুলতান মেহমেদ এটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করেন।
দীর্ঘ পাঁচ শ’ বছর পরে আধুনিক তুরস্কের জনক বলে পরিচিত মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক ১৯৩৪ সালে এটিকে যাদুঘরে পরিণত করেন ।
গত জুন মাসে প্রেসিডেন্ট এরদোগান নিজেই পবিত্র কোরআনের আয়াত পাঠ করে আনুষ্ঠানিকভাবে হায়া সোফিয়াকে পুনরায় মসজিদে রূপান্তর করেন। এ সময় গ্রিসের সমালোচনার জবাবে এরদোগান বলেছেন, উসমানিয়াদের যুগে এথেন্সে নির্মিত কোনো মসজিদের চিহ্ন আজ নেই। সব মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা তেমনটি করিনি।
প্রেসিডেন্ট এরদোগান নিজেকে মুসলিম উম্মার নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। মুসলিম অনুভূতি ব্যবহার করে তুরস্ক মুসলিম বিশ্বের তার মার্যাদা বাড়িয়ে নিচ্ছে বলে সৌদি আরবও চিন্তিত।
সৌদি সংশ্লিষ্টতা
গত কয়েক বছর ধরে সৌদি আরবের সাথে তুরস্কের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। কারণ পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের তেল সমৃদ্ধ দেশ কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি আরবসহ চারটি প্রতিবেশী মুসলিম দেশের যৌথ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাতারের সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে তুরস্ক। কাতার এ অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের অস্ত্র সরবরাহ করছে এমন অজুহাতে এবং ইরানের সাথে কাতারের সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে ২০১৭ সালের ৫ জুন সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর একযোগে এ নিষেজ্ঞা ঘোষণা করে স্থল, নৌ ও বিমানপথে কাতারের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বাহরাইন।
আসল বিরোধ শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় যখন বিভিন্ন আরব দেশের আন্দোলন আর অভ্যুত্থানে পরস্পর বিপরীত পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল কাতার ও সৌদি আরব। আর ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের আক্রমণেরও বিরোধিতা করছে কাতার, ইরান ও তুরস্ক।
গত বছর তুরস্কে রাজধানী ইস্তানবুলে সৌদি দূতাবাসের অভ্যন্তরে সাংবাদিক জামাল খাশোগি খুন হবার পর দু’দেশের সম্পর্কের ফাটল আরো বৃদ্ধি পায়।
সম্প্রতি সৌদি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতিহাসের পাঠ্যবইয়ে উসমানীয়দের দ্বারা তাদের দেশ পরাস্ত করার বিবরণ সংশোধন করে নিয়েছে। উসমানিয়া শাসকদেরকে দখলদার হিসেবে চিহ্নিত করে তারা নতুন প্রজন্মের জন্য নতুন ইতিহাস রচনা করেছে।
ইতিহাস সংশোধনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি সৌদি আরবে রাজধানী রিয়াদের একটি প্রাচীন সড়কের নাম বদলে দেয়া হয়েছে। উসমানিয়া সম্রাট সুলতান সোলায়মানের নামে নামকরণে করা এ সড়কটির নাম পরিবর্তনের পেছনে সৌদি-তুর্কি সম্পর্কের অবনতিকে চিহ্নিত করা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধমে।
উপসংহার
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে স্বার্থের টানাপোড়ন; গ্রিকের সাথে যুদ্ধাবস্থা; রাশিয়া ও ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠতা; সৌদি আরবসহ কয়েকটি মুসলিম দেশের সাথে সঙ্ঘাত; লিবিয়া, সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের ব্যাপারে তুরস্কের দৃঢ় অবস্থান- সব মিলিয়ে একটা ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়েছে তুরস্ককে ঘিরে। চলছে হুমকি-পাল্টা হুমকি। এখন দেখার অপেক্ষা কে আগে গোলাটা ছোঁড়ে। তারপর কোথাকার তেল-পানি কিভাবে ঘোলা হয় কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়?