করোনার মধ্যে হঠাৎ জ্বর, কী করবেন?
করোনার মধ্যে হঠাৎ জ্বর, কী করবেন? - প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাস ছাড়াও এখন যে কারণে জ্বর আসতে পারে তা হলো- ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, টাইফয়েড, স্ক্রাব টাইফাস, চিকুনগুনিয়া ও চিকেন পক্স। এছাড়া নিউমোনিয়া বা ফুসফুসের সংক্রমণ ও মেনিনজাইটিস অথবা মস্তিষ্কের সংক্রমণেও জ্বর আসতে পারে। সবক’টিই সংক্রামক রোগ, চিকিৎসাযোগ্য এবং সেরেও যায়। কিন্তু জ্বর এলে প্রথম দু’দিন ইনফ্লুয়েঞ্জা হচ্ছে, বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর হচ্ছে বা এসি রাতে বন্ধ করতে ভুলে গিয়েছি বলে ঠান্ডায় জ্বর হচ্ছে, এইসব ভেবে বাড়িতে বসে থাকবেন না। নিজস্ব ডাক্তারবাবুর কাছে যান বা নিদেনপক্ষে টেলিমেডিসিনে পরামর্শ নিন। এই সময় জ্বর এলে করোনা ভাইরাস থেকে হচ্ছে ভেবে নিয়েই এগতে হবে।
জ্বর ছাড়া অন্যান্য উপসর্গ
১. গা-হাত-পায়ে ব্যথা : গা-হাত-পায়ে ব্যথা যেকোনো ভাইরাল জ্বরে হতে পারে। তবে এটি প্রধানত ডেঙ্গুর লক্ষণ। ডেঙ্গুতে গায়ে ব্যথার সঙ্গে হাড়ে ব্যথা হবে।
২. র্যাশ বা চুলকানি : লাল র্যাশ ডেঙ্গুতে হয়। জ্বরের প্রথম দিকে এবং পাঁচ থেকে সাত দিনের মাথায় সারা গায়ে র্যাশ বের হয়। টাইফয়েডেও র্যাশ বের হয়। তবে শ্যামলা ত্বকে তা দেখা নাও যেতে পারে। তবে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায়।
৩. গাঁটে গাঁটে ব্যথা : প্রধানত চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ। জ্বর সেরে যাওয়ার এক বছর পর্যন্ত গাঁটে ব্যথা থাকতে পারে। ডেঙ্গুতেও এরকম ব্যথা হতে পারে। কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
৪. ঠক ঠক করে কাঁপুনি : প্রধানত ম্যালেরিয়ার লক্ষণ। মূত্রনালী বা ফুসফুসে সংক্রমণ হলেও হতে পারে।
৫. ডায়ারিয়া : যেকোনো ভাইরাল জ্বরে হতে পারে। এছাড়া টাইফয়েডে হয়, বিশেষ করে ৯ দিনের মাথায়। করোনা জ্বরেও ডায়ারিয়া হয়। এই রোগে মৃদু জ্বর, ডায়ারিয়া এবং রক্ত পায়খানাও হতে পারে। ডেঙ্গুতেও ডায়ারিয়া হয়।
৬. গলাব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট : এইসব উপসর্গ থাকলে করোনার আশঙ্কা বেশি। বিশেষ করে অতিমারীর সময়। গলা বা ফুসফুসের সংক্রমণেও হতে পারে।
কীভাবে চিকিৎসা শুরু?
১. নিজে থেকে কোনো পরীক্ষা করাতে যাবেন না। কারণ কোনো পরীক্ষা কবে করলে সঠিক ফল পাওয়া যাবে, তা আপনার জানার কথা নয়।
২. তাই যত দ্রুত সম্ভব হাউস ফিজিশিয়ানকে দেখান। দরকার হলে টেলিমেডিসিন-এর সাহায্য নিন।
৩. ডাবের পানি, ওআরএস, লেবুর রস খান। প্রচুর পরিমাণে পানিপান করুন। জ্বর ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি হলে প্যারাসিটামল ৬৫০ খান। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সর্বোচ্চ চারবার খেতে পারেন।
৪. তাড়াতাড়ি রক্ত পরীক্ষা করান। অবশ্য করোনার জন্য লালারস পরীক্ষা করতে হতে পারে। সাধারণত পাঁচ দিনের মাথায় টেস্ট করলে রিপোর্ট সঠিক আসার সম্ভাবনা থাকে।
৫. সম্পূর্ণ আলাদা থাকুন দু’সপ্তাহ। বাড়িতে থাকুন। বাইরে বের হবেন না।
৬. করোনাতে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করা যাবে। অযথা আতঙ্কিত হবেন না।
৭. জ্বরের পরীক্ষার কোনো প্যাকেজ হয় না। ফাঁদে পা দেবেন না। প্রথম তিন থেকে পাঁচ দিন এর মধ্যে রক্ত পরীক্ষা করলে ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, ডেঙ্গু ধরা পড়ে যাবে।
পাঁচ দিনের মাথায় স্ক্রাব টাইফাসের টেস্ট করতে হবে। একাধিক বার টেস্ট করাতে হতে পারে।
৮. দোকান থেকে উলটোপালটা ডোজে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাবেন না। কারণ যখন সত্যি সত্যিই দরকার পড়বে তখন আর ওষুধ শরীরে কাজ করবে না।
সূত্র : বর্তমান