কৌশলগত মালাক্কা প্রণালীতে রণতরী মোতায়েন ভারত-রাশিয়ার

রিশিকেশ কুমার | Sep 02, 2020 09:27 am
কৌশলগত মালাক্কা প্রণালীতে রণতরী মোতায়েন ভারত-রাশিয়ার

কৌশলগত মালাক্কা প্রণালীতে রণতরী মোতায়েন ভারত-রাশিয়ার - প্রতীকী ছবি

 

চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ মালাক্কা প্রণালীর কাছে নৌমহড়া পরিচালনার জন্য ডেস্ট্রোয়ার, ফ্রিগেট ও করভেট মোতায়েন করেছে ভারত। নয়া দিল্লির এক সরকারি কর্মকর্তা স্পুটনিককে বলেন, ইন্দ্র নেভি-২০২০ মহড়া হবে ৪-৫ সেপ্টেম্বর। এ সময় শ্রীলঙ্কার হাম্বানতোতা থেকে রুশ নৌবাহিনীর জাহাজগুলো বঙ্গোপসাগরের মালাক্কা প্রণালীর দিকে যাবে।

ভারতীয় ওই কর্মকর্তা বলেন, ভারতীয় নৌবাহিনী রণবিজয় (ডেস্ট্রোয়ার), সাহিদ্রি (ফ্রিগেট), কিলতান (কোরভেট), শক্তি (ট্যাঙ্কার) মোতায়েন করবে। তাছাড়া সমন্বিত হেলিকপ্টারও থাকবে। ওই কর্মকর্তা বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির সময়ে মহড়াটি হবে ‘নন কন্টাক্ট’।

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে ইন্দ্র মহড়া ২০০৫ সাল থেকে হয়ে আসছে।
চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং রাশিয়া সফর করবেন দুই দেশের সামরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার জন্য।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ভারতীয় বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনী এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দ্রুত সরবরাহ করার জন্য চাপ দিয়ে আসছে। এই সফরে এসব বিষয়েও কথা হবে।
আর ১০ সেপ্টেম্বর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সাক্ষাত করবেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে। মস্কোকে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক হবে।

স্পুটনিক

চীন থেকে ভারতের তেল কেনা বন্ধ
রয়টার্স ও গার্ডিয়ান
চীনের কাছ থেকে জ্বালানি তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। দেশটির তেল শোধনাগারগুলো এখন আর চীনের বিক্রেতাদের কাছ থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কিনছে না। চীনের সাথে সীমান্তে সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পর নয়াদিল্লি সীমান্তবর্তী দেশগুলো থেকে তেল আমদানি না করার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ভিত্তিতে চীনের কোনো কোম্পানির কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল নিচ্ছে না দেশটি।
ভারতের জ্বালানি তেল সংক্রান্ত কোনো টেন্ডারেও চীনের কোম্পানিগুলোকে অংশ নিতে দেয়া হচ্ছে না। তেল আমদানির জন্য চীনের কোনো তেল ট্যাংকারও ব্যবহার করছে না নয়াদিল্লি। ভারত ও চীনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে টানাপড়েনের প্রভাব বাণিজ্যের ওপর পড়ছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেন কমে যাচ্ছে। ভারত সরকার চীন থেকে বিদ্যুৎ সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রেও নতুন কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। চীন থেকে আসা সব বিদ্যুৎ সরঞ্জাম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে নয়াদিল্লি জানিয়েছে।

এ দিকে সস্তা জ্বালানির জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেও ভারতকে দ্রুত এবং স্থায়ীভাবে কয়লার ব্যবহার ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। গতকাল শুক্রবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান। গুতেরেস বলেন, জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলার লক্ষ্যে ভারতকে অবশ্যই ধারাবাহিকভাবে কয়লার ব্যবহার ছাড়তে হবে আর এই বছরের পর নতুন কোনো কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র অনুমোদন বন্ধ করতে হবে এবং জ্বালানি তেলের ওপর থেকে ভর্তুকি তুলে নিতে হবে।
বিশ্বজুড়ে নবায়নযোগ্য শক্তির দাম কমে আসতে শুরু করলেও ভারত সরকার এখনো কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। উন্নত বিশ্ব জ্বালানি তেলের উন্নয়ন চালিয়ে যাচ্ছে দাবি করে নরেন্দ্র মোদির সরকার বলতে চাইছে কার্বন নিঃসরণের দায় মূলত উন্নত দেশগুলোর। ফলে জলবায়ু সঙ্কটের জন্য দায়ী গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনার নতুন প্রতিশ্রুতি দিতে অনিচ্ছুক ভারত সরকার।

ভারতের ওই অবস্থানই মানতে নারাজ জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, (কয়লা) সম্পদ আটকে ফেলে আর বাণিজ্যিকভাবে কোনো অর্থই তৈরি করে না- কয়লা বাণিজ্য ধোঁয়ায় গিয়ে শেষ হয়। তিনি আরো বলেন, জলবায়ু মোকাবেলার লড়াইয়ে ভারত সত্যিকার অর্থে সুপার পাওয়ার হয়ে উঠতে পারে যদি তারা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য শক্তিতে পরিণত হওয়ার কাজে গতি আনে।
কয়লার ওপর নির্ভরতা চালিয়ে যেতে থাকলে ভারতের বায়ু দূষণ অন্য শহরগুলোতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব। অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানিতে আরো বেশি বিনিয়োগের অর্থ আরো বেশি মৃত্যু ও অসুস্থতা এবং স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় বাড়তে থাকা। খুব সাধারণভাবে এটিতে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয় আর খারাপ অর্থনৈতিক উদাহরণও তৈরি হয়।

বায়ু ও সৌরচালিত বিদ্যুতের দাম পড়ে যাওয়ায় জাতিসঙ্ঘের হিসেবে বর্তমানে নতুন নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের ব্যয় দুনিয়ায় বিদ্যমান কয়লাচালিত কেন্দ্রগুলো পরিচালনার ব্যয় থেকে ৩৯ শতাংশ কমে গেছে। আগামী দুই বছরে এটি বেড়ে ৬০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে। ২০২২ সাল নাগাদ ভারতের নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের ব্যয় বিদ্যমান কয়লাচালিত কেন্দ্র পরিচালনার খরচ অর্ধেক হয়ে যাবে। আর সে কারণেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় বিনিয়োগকারীদের কয়লা ছেড়ে দেয়ার পরিমাণ বাড়ছেÑ তারা দেয়ালের লেখা দেখতে পাচ্ছে, মন্তব্য করেন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us