চীন-কানাডার বিরোধে ট্রাম্পের হাত!

গৌতম দাস | Aug 29, 2020 06:10 pm
চীন-কানাডার বিরোধে ট্রাম্পের হাত!

চীন-কানাডার বিরোধে ট্রাম্পের হাত! - ছবি : সংগ্রহ

 

কানাডা আর চীনের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী তৃতীয় দেশ ইতালির রোমে গত ২৫ আগস্ট এক বৈঠকে বসেছিলেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তারা বলেছিলেন, ‘চীন যেকোনো বলপ্রয়োগের কূটনীতি করে কোনো কাম্য ফল পাবে না। আর যাকে তাকে ধরে ডিটেনশন দেয়াটাও রাষ্ট্র দু’টির সাথে সম্পর্কের জন্য ভালো নয়।’ আর সব শেষে বলেছেন, ‘এটি নেহায়ত-ই দুইজন কানাডিয়ানের চীনে ডিটেনশনে আটকে থাকা নয়। ও দুইজন লিবারেল ডেমোক্র্যাসির নাগরিক এবং প্রতিটি লিবারেল ডেমোক্র্যাসির দেশ চীনের বলপ্রয়োগের কূটনীতির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন।’ এই হলো মূল ডায়ালগ। কিন্তু ঘটনা কী, চার্জ তো সাঙ্ঘাতিক! চীন নিজের মতো সংজ্ঞায় ‘কমিউনিস্ট’- আমরা জানি, সেটা এখানে সম্পর্কিত নয়। কিন্তু তাই বলে চীন কি এতই অভিযোগে অভিযুক্ত? ব্যাপারটা কী?

শেষের থেকে শুরু করা যাক। হ্যাঁ কথা সঠিক, দুইজন কানাডীয় নাগরিক যারা চীনের বেইজিং হয়ে কোনো তৃতীয় দেশে সফর করছিলেন, তাদেরকে চীনা সরকার বেইজিং এয়ারপোর্টে পেয়ে গ্রেফতার করে চীনের কোনো জেলে ডিটেনশন দিয়ে ফেলে রেখেছে সেই ২০১৮ সাল থেকে, আমরা জানি। এ দুইজনের একজন এক সাবেক কানাডীয় কূটনীতিক মাইকেল কোভরিগ। তিনি বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ- এই নামের এক থিঙ্কট্যাঙ্কের কর্তাব্যক্তি। যেকোনো দেশের কোনো রাজনৈতিক সঙ্কটে যদি জাতিসঙ্ঘ পর্যন্ত গড়ায় আর তাতে যদি ইস্যুটা নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক পর্যন্ত চলে যায় তবে ওই বৈঠকে পশ্চিমা শক্তিগুলো সবাই মিলে কী সমন্বিত অবস্থান নিতে পারে এরই আগাম খসড়া গ্রাউন্ডওয়ার্ক তৈরি করা- এটাই ক্রাইসিস গ্রুপ করে থাকে। এই প্রতিষ্ঠান পশ্চিমা সংশ্লিষ্টদের সাথে আগাম কথা বলে লবি করে এক সমন্বিত অবস্থান রেডি করে রাখে, যাতে পশ্চিমা অবস্থান একটাই হয়। চীন সরকার এরই এক কর্তাব্যক্তিকেই গ্রেফতার করে গত ডিসেম্বর ২০১৮ সালে এবং অবশ্যই তা যাকে তাকে টার্গেট করে নয়। এ ছাড়া এক শাঁসালো কানাডীয় ব্যবসায়ীকেও কয়েক দিন পরে গ্রেফতার করেছিল চীন সরকার। চীনের অভিযোগ- এ দুইজন চীনে ‘গোয়েন্দাগিরিতে লিপ্ত’ ছিলেন। এখনো তারা দুইজন চীনের জেলে আটক। তা হলে অভিযোগ সত্য। কিন্তু চীন কেন এমন বেমক্কা গ্রেফতার করল?

কারণ চীন সরকারের এ দুই কানাডিয়ানকে ‘ইচ্ছামতো’ গ্রেফতার ছিল এক পাল্টা ব্যবস্থা। কিন্তু কিসের পাল্টা ব্যবস্থা?

এবার আমরা মূল ঘটনায় প্রবেশ করব। চীনা মোবাইল কোম্পানি হুয়াওয়ে। মোবাইল কোম্পানির ব্যবসা বলতে তা তিন ধরনের হতে পারে। আমাদের পরিচিত যেমন- গ্রামীণফোন বা বাংলালিংকের মতো ফোন কোম্পানি। এরা আসলে অ্যান্ড-ইউজার বা প্রান্তিক ফোন ব্যবহারকারী ব্যক্তিদের কাছে সার্ভিস বিক্রি করতে আসা কোম্পানি। আর এসব কোম্পানিকে মূল টেকনিক্যাল যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা আরেক ধরনের মোবাইল কোম্পানি হয় যারা গ্রামীণফোন ধরনের কোম্পানিকে টেকনিক্যাল দিক থেকে সাজিয়ে দেয়, টিকিয়ে রাখে বা খাড়া করে দেয়। যেমন- হুয়াওয়ে, নোকিয়া, এরিকসন, এলকাটেল প্রভৃতি। অর্থাৎ এরা মূল যন্ত্রপাতি ও টেকনোলজি উৎপাদন, প্রস্তুত ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। আবার তৃতীয় আরেক ধরনের মোবাইল কোম্পানি হতে পারে যারা অ্যান্ড-ইউজার যে ফোনসেট ব্যবহার করে, কেবল সেই ফোনসেটের উৎপাদন ও সরবরাহকারী। যেমন- অ্যাপল, স্যামসাং, অপ্পো, হুয়াওয়ে, নোকিয়া প্রভৃতি।

তার মানে মোবাইল ব্যবসা বলতে ব্যাকটেক (ব্যাকগ্রাউন্ড টেক যন্ত্রপাতি), ফোনসেট আর সার্ভিস- এই তিন ধরনের কোম্পানি হতে পারে। আর হুয়াওয়ে হলো ব্যাকটেক আর ফোনসেটের উৎপাদন ও সরবরাহের কোম্পানি। বলাবাহুল্য, এরা শ’ শ’ বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। এমনকি ব্যাকগ্রাউন্ড টেক যন্ত্রপাতির কোম্পানি হিসেবে হুয়াওয়ে তার সমতুল্য নোকিয়া এরিকসন ইত্যাদি সব কোম্পানির চেয়ে বড়। বিনিয়োগ, বড় মার্কেট শেয়ার ও টেকনিক্যাল দিক থেকেও উঁচু প্রভাবশালী কোম্পানি। তবে হুয়াওয়ের সমতুল্য আরেক চীনা কোম্পানি আছে জেডটিই (ZTE), যেটা আবার চীনা সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি।

হুয়াওয়ে ও ফাইভ-জি : বাংলাদেশে ফোন সার্ভিসে ব্যবহারকারীদের কাছে টু-জি, থ্রি-জি ও ফোর-জি সার্ভিস দেয়া হচ্ছে। তাতে কিছুই ফারাক বোঝা যায় না। কারণ সার্ভিস কোম্পানির সব টাওয়ার থেকেই ফোর-জি উচ্চমানের গতির সার্ভিস দেয়া হচ্ছে এমন কোনো কোম্পানি বাংলাদেশে নেই। এমনকি সব টাওয়ার থ্রি-জি পর্যায়ের কি না সেই নিশ্চয়তাও নেই। কিন্তু যেসব দেশে এসব ধাপ্পাবাজি নেই, যা সার্ভিস দেবে বলে দাবি করে তাই দিতে হয়; এর জন্য তদারকি মনিটরিং ও শাস্তিবিধান আছে সেখানে টু-জি, থ্রি-জি না ফোর-জি কত স্পিডের সার্ভিস তা গুরুত্বপূর্ণ। এই জগতেরই লেটেস্ট টেকনোলজি হলো ফাইভ-জি টেকনোলজি। ফাইভ-জি একেবারেই ব্যতিক্রমী ও আলাদা, ফাইভ-জি ফোন সেটও আলাদা হবে, যা এখনো বাজারে আসেনি। কেন আলাদা? কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের কথা শুনেছেন অনেকে। তারা বুঝবেন আগামী দিনে কারখানা ম্যানুফাকচারিং বা এমনকি রেস্টুরেন্টে খাবার বিতরণ করবে রোবট। দূর থেকে বা নির্দিষ্ট রেঞ্জের মধ্যে বসে দূর থেকে রোবটকে নির্দেশ দিয়ে চালাতে যে হাইস্পিডের মোবাইল টেকনোলজি লাগবে সেটাই ফাইভ-জি পর্যায়ের হতে হবে। আর হুয়াওয়ে হলো ফাইভ-জি টেকনোলজিতে সবার চেয়ে আগে বা পাইওনিয়ার কোম্পানি। এ ক্ষেত্রে টেকনোলজিতে বিনিয়োগ অর্থে আমেরিকা কয়েক বছর পেছনে পড়ে গেছে, কিছু টেক সিদ্ধান্ত সময়মতো নিতে না পারায়। তাই এই খাতে ইউরোপীয় অরিজিনের নোকিয়া, এরিকসন, এলকাটেল কমবেশি থাকলেও আমেরিকান অরিজিন কোনো কোম্পানি এখন প্রতিযোগিতাতেই নেই। এর কারণ হিসেবে আমেরিকাতেই বলা হয়, সেখানকার কোম্পানিগুলোর সবাইকে একই টেকনোলজিকে স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলতে হবে এমন সরকারি বাধ্যবাধকতা বা স্ট্যান্ডার্ড বলে কিছু না রাখা হয়।

এর সুযোগে জিএসএম, সিডিএমএ প্রভৃতির অন্তত পাঁচ ধরনের টেক একই সাথে আমেরিকায় ব্যবহৃত হতো। আমাদের গ্রামীণসহ সবাই এখন এই জিএসএম স্ট্যান্ডার্ড, আমাদের বন্ধ হওয়া সিটিসেল ছিল সিডিএমএ। এতে অসুবিধা হলো, মোবাইল টেকে ক্রমাগত গবেষণা ও উন্নয়নে প্রচুর বিনিয়োগ লাগে। একটা দেশে টেক স্ট্যান্ডার্ডের বালাই না থাকলে পাঁচ ধরনের টেক প্রচলিত থাকা মানে হবে, নতুন গবেষণা ও উন্নয়নে পাঁচগুণ বিনিয়োগ লাগবে। অথচ দেশে একটাই স্ট্যান্ডার্ড থাকলে গবেষণা ও উন্নয়নে ওই একই বিনিয়োগ পাঁচ কোম্পানি শেয়ার করতে পারত। আমেরিকায় পুরো নব্বইয়ের দশক এই স্ট্যান্ডার্ডহীন থাকার সুযোগে বা দুর্যোগে কোম্পানিগুলো কমতে বা ডুবতে থাকে। একপর্যায়ে ইউরোপের নকিয়া বা এরিকসন ধরনের কোম্পানির মধ্যে বিক্রি হয়ে এরা সবাই বিলীন হয়ে যায়। এককথায়, স্ট্যান্ডার্ডের বালাই না থাকাটাই আমেরিকার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আর ঠিক এর উল্টোটা করে উঠে আসে হুয়াওয়ে, যে আমেরিকার ওই পিছিয়ে পড়াটাকেই টার্গেট করেছিল। আজ অবস্থা এমন যে, নোকিয়া বা এরিকসনও কিছু কিছু যন্ত্রাংশে হুয়াওয়ের ওপর নির্ভরশীল। অনেক সময় যার কারণ হুয়াওয়ের যন্ত্রাংশ দামে অনেক সস্তা।

মনে করা হয়, আমেরিকার এই পিছিয়ে পড়া ব্যবসায়ীরা নিজেদের প্রবল দুর্দশায় পড়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘাড়ে এক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব নিয়ে সওয়ার হয়েছিলেন। তত্ত্বটা হলো, হুয়াওয়ে চীনা সরকারের পক্ষে গোয়েন্দাগিরি করে, বিশেষত গোপনে হুয়াওয়ের যন্ত্রপাতি দিয়ে। তাই আমেরিকার সরকারি কোনো ক্রয়ে হুয়াওয়ে বা জেডটিই কোম্পানির কোনো কিছু নিষিদ্ধ করে ট্রাম্প আইন করেছেন। আর এ নিয়ে এরপর ইউরোপের সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয় ট্রাম্প প্রশাসনের। এ ক্ষেত্রে মূলত সবচেয়ে ভোকাল জার্মান চ্যান্সেলার মার্কেল। তিনি দাবি করেন আমেরিকা চীনা গোয়েন্দাগিরির কোনো প্রমাণ দেখাতে না পারলে ইউরোপ এটি মানবে না। ইউরোপ-আমেরিকার এই বিবাদে ইউরোপও আর এক থাকতে পারেনি। মূলত সস্তা হুয়াওয়ের টেকনোলজি কেনার হাতছানি এক দিকে। অন্য দিকে নাকি নিজেদের বিনিয়োগে যেতে হবে এর অনিশ্চয়তা, আর যতই দিন চলে যাচ্ছে ততই তারা ব্যবসায় পিছিয়ে পড়ছেন- এভাবে সব মিলিয়ে এই খাত এক ব্যাপক এলোমেলো বিশৃঙ্খলায় এখনো ডুবে আছে, আরো যাচ্ছে ক্রমেই।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন শুধু এখানেই নয়, আরো এক অস্ত্র ব্যবহার করেছে হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে। বলা উচিত- অপব্যবহার করেছে। হুয়াওয়ে তার টেকনোলজি আর সবার কাছে যেমন তেমন ইরানের কাছেও বিক্রি করেছে। আর স্বভাবতই এতে আমেরিকার মাতব্বরি হিসেবে ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বা অবরোধ ভঙ্গ করেছে। কিন্তু আমেরিকা অবরোধ আরোপ করার কে? জবাব হলো- সে কেউ নয়, এর কোনো বৈধ অথরিটি তার নেই। যেকোনো দুই দেশের পণ্য কেনাবেচায় আমেরিকার বাধা দেয়ার অথরিটি কোথায়? জাতিসঙ্ঘের দিক থেকে ইরানের ওপর যে অস্ত্র ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা ছিল তার মেয়াদ সম্প্রতি শেষ হলে একা আমেরিকা ছাড়া আর কেউ নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার পক্ষে ভোট দেয়নি। ফলে এখন জাতিসঙ্ঘের কোনো অবরোধও ইরানের ওপর নেই।

কিন্তু হুয়াওয়ে আর ইরানের কেনাবেচা ডলারে করা হয়েছে আর হুয়াওয়ের নামে না বেনামে করা হয়েছে এই অজুহাতে হুয়াওয়ের কর্মীর বিরুদ্ধে আমেরিকা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে রেখেছিল।
হুয়াওয়ে কোম্পানির মূল উদ্যোক্তা চেয়ারম্যানের মেয়ে মেং ওয়ানজু। তিনি হুয়াওয়ের প্রধান ফাইন্যান্স অফিসার। তিনি কানাডার ভ্যাঙ্কুভার হয়ে অন্য কোথাও যাচ্ছিলেন, ভ্যাঙ্কুভার ছিল তার উড়োজাহাজ বদলানোর জায়গা। আর এ সুযোগে কানাডা সরকার ট্রাম্প প্রশাসনের হয়ে তাকে গ্রেফতার করে গত ডিসেম্বর ২০১৮ সালে। সেই থেকে সব ঘটনার সূত্রপাত। কানাডার সাথে আমেরিকার এক্সট্রাডিশন চুক্তি আছে, যার বলে সে কানাডার আদালতের অনুমতিসাপেক্ষে, আমেরিকার হয়ে গ্রেফতার করে আমেরিকার কাছে কাউকে হস্তান্তর করতে পারে। হুয়াওয়ের প্রধান ফাইন্যান্স অফিসার মেং ওয়ানজু এখন কানাডাতেই জামিনে আছেন। আর কানাডার আদালত এখনো সিদ্ধান্ত দেয়ার অপেক্ষায় যে, আমেরিকায় তাকে হস্তান্তর করা হবে কি না।

এটা পরিষ্কার, ওই দুইজন কানাডীয়কে ইচ্ছামতো উঠিয়ে আনা আর ডিটেনশন দিয়ে ফেলে রাখা- এটি চীন সরকার করেছিল পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে, মেং ওয়ানজুকে কানাডায় আটকের ৯ দিন পরই।
তবে এই প্রথম এ নিয়ে রোমে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক। এই ইস্যুতে কথাবার্তা, ডায়ালগ করা ঠিক আছে। কারণ এটাই বের হওয়ার একমাত্র পথ। কিন্তু কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘লিবারেল ডেমোক্র্যাসি’ নিয়ে এসব তথাকথিত জ্ঞানের কথা, দর্শনের সাফাই- এগুলো আসলে ছেঁদো কথা। ফুটা হয়ে যাওয়া কথা। এগুলো খুবই বিরক্তিকর, এসব তাদের বাদ দেয়া উচিত। আর এটাই বুঝি তাদের লিবারেল ডেমোক্র্যাসি?

আচ্ছা, ইরানের সাথে ব্যবসা করা যাবে না, পণ্য লেনদেন কেনাবেচা করা যাবে না, এটা কি লিবারেল ডেমোক্র্যাসি? ইরানের ওপর অবরোধ আরোপে আপনারা কারা? না এটা লিবারেল, না এটা কোনো ডেমোক্র্যাসির কিছু। এর মধ্যে তো কোনো আইনেরই কিছু নেই। কোন আইনে এই অবরোধ আরোপ করা হয়েছে? এর এখতিয়ার কে দিয়েছে? এটা তো সবাই মানে, কিংবা মানতে বাধ্য এমন কোনো আন্তর্জাতিক আইন-ই নয়? আর কানাডীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছেন এটাকে ‘লিবারেল ডেমোক্র্যাসি’ বলে দাবি করতে?

ডলারকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা হিসেবে ১৯৪৪ সালে গ্রহণ করা হয়েছিল। কাজেই আইএমএফের সব সদস্যই ডলারে কেনাবেচা করার এখতিয়ার রাখে। কিন্তু ডলার আমেরিকার নিজের কারেন্সি বলে এটাকে সেই সুযোগ হিসেবে নেয়া, ডলারে কেনাবেচার ওপর অবরোধ দেয়া- এটি তো পুরোপুরি অপব্যবহার! আর এই অপব্যবহার করে, এর পক্ষে সাফাই দিয়ে এটি কোন লিবারেল ডেমোক্র্যাসি কায়েম করতে এসেছেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী?

আমেরিকা মোবাইল ব্যবসায় প্রতিযোগিতায় হেরে গেছে যেকোনো কারণে, এটিই বাস্তব সত্য। এখন সেটি কাভার দিতে ‘ডলার অবরোধ’ দেবে, এটি কোন লিবারেল ডেমোক্র্যাসি? এটি কোন সুস্থ বা লিবারেল প্রতিযোগিতা? এরা তো মুক্ত ব্যবসার প্রতিযোগিতাই মানে না, দেখা যাচ্ছে।
সোজা কথাটা হলো- পশ্চিমারা রাজনৈতিক চিন্তায় দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। কাজেই লিবারেল ডেমোক্র্যাসির কথা বলে এই দেউলিয়াত্ব ঘুচবে না। এভাবে আমেরিকার পতন ঠেকানো যাবে না। নতুন করে সবাইকে নিয়ে নতুন ভিত্তি তৈরি করতে হবে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নতুন ন্যায়ের ভিত্তি লাগবে।

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক

goutamdas1958@hotmail.com


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us