চীন-পাকিস্তান মোকাবেলায় এডিসিতে নজর ভারতের
চীন-পাকিস্তান মোকাবেলায় এডিসিতে নজর ভারতের - ছবি : সংগৃহীত
ভারত নতুন এয়ার ডিফেন্স কমান্ড (এডিসি) প্রতিষ্ঠার দিকে এগুচ্ছে। এটি চূড়ান্ত পর্যায়ে সমন্বিত পদ্ধতিতে বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, হেলিকপ্টার ও ড্রোন হামলা থেকে দেশের আকাশসীমাকে রক্ষা করতে সক্ষম হবে। আগামী অক্টোবরের মধ্যেই নতুন ব্যবস্থা সম্পন্ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, এডিসির সদরদফতর হতে পারে এলাহাবাদে (প্রয়োগরাজ)। এখানেই সেন্ট্রাল এয়ার কমান্ড অবস্থিত। এডিসির আওতায় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সব বিমান প্রতিরক্ষা (এডি) ব্যবস্থাকে আনা হবে। এই নতুন বিভাগের প্রধান হবেন ভারতীয় বিমান বাহিনলি তিন তারকার কোনো জেনারেল (এয়ার মার্শাল)।
জানুয়ারিতে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত ঘোষণা করেছিলেন যে তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় সাধন করার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রথম নতুন জয়েন্ট কমান্ড হিসেবে এডিসি প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিন বাহিনীর ভিন্ন ভিন্ন দিকে চলা রুখতে এটা দরকার বলে মনে করা হয়ে থাকে।
ভারতের এখন পর্যন্ত মাত্র দুটি ইউনিফায়েড কমান্ড রয়েছে। আর দেশটিতে সিঙ্গেল-সার্ভিস কমান্ড রয়েছে ১৭টি (সেনাবাহিনীতে ৭টি, বিমানবাহিনীতে ৭ট, নৌবাহিনীতে ৩টি)। প্রথম ও একমাত্র থিয়েটার বা ভৌগোলিক কমান্ড প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ২০০১ সালের অক্টোবরে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। আর দেশটির পরমাণু অস্ত্রভান্ডার ব্যবস্থাপনার জন্য ফাংশনাল স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ড প্রতিষ্ঠা করা হয় ২০০৩ সালের জানুয়ারিতে।
ভৌগোলিক থিয়েটার কমান্ড প্রতিষ্ঠার আলোচনাও এখন চলছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি বা দুটি সামুদ্রিক কমান্ড, চীনকে সামাল দিতে (নেপালের পশ্চিম দিকে একটি এ পূর্ব দিকে একটি) একটি বা দুটি কমান্ড। পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তানকে মোকাবেলা করতে একটি বা দুটি কমান্ড প্রতিষ্ঠা। এই দুটি কমান্ডের একটি হতে পারে জম্মু ও কাশ্মিরে। অপরটিতে থাকতে পারে পাঞ্জাবচ, গুজরাট ও রাজস্থান।
ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রধানত বিমান বাহিনীর হাতে ন্যস্ত থাকলেও সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর হাতেও বিমান প্রতিরক্ষা অস্ত্র রয়েছে। তাদের হাতেও অবকাঠামো ও লজিস্টিকস চেইন রয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনীর হাতে থাকা বিমান প্রতিরক্ষা অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ইসরাইলি স্বল্প মাত্রার স্পাইডার কুইক-রিঅ্যাকশন ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র (পাল্লা ১৫ কিলোমিটার), স্থানীয়ভাবে তৈরী করা আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ও ইসরাইলের সাথে সহযোগিতায় নির্মিত বারাক ৮ স্যাম ক্ষেপণাস্ত্র (৭০ থেকে ১০০ কিলোমিটার)।
ভারতীয় বিমান বাহিনী এখন রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র পেতে যাচ্ছে। রাশিয়ার কাছ থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ২০২১ সালের শেষ নাগাদ এসে যাবে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার সাথে ৫.৪৩ বিলিয়ন ডলারে ৫টি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি হয়।
এস-৪০০ সিস্টেম ৩৮০ কিলোমিটার পাল্লার মধ্যে শত্রুর যেকোনো বোমারু বিমান, জেট, গোয়েন্দা বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন শনাক্ত ও ধ্বংস করতে পারে। এসবের মাধ্যমে চীন ও পাকিস্তান সীমান্ত রক্ষা ছাড়াও দেশের প্রধান প্রধান নগরী সুরক্ষিত করার পরিকল্পনা করছে ভারত।
সূত্র : টিএনএন