রাজাপাকসের বিজয়ে ভারতের দুশ্চিন্তা

মো: বজলুর রশীদ | Aug 20, 2020 06:32 pm
রাজাপাকসে ও মোদি

রাজাপাকসে ও মোদি - ছবি : সংগৃহীত

 

শ্রীলঙ্কার নবম সাধারণ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। মহামারীর চাপ কম থাকায় নির্বাচন কমিশন চেয়ারম্যান মাহিন্দ্র দেশপ্রিয়া সমস্যায় পড়েননি। গ্রামীণ এলাকায়ও ভোটারদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর আসনে চতুর্থবার অধিষ্ঠিত হলেন মাহিন্দ্র রাজাপাকসে। প্রধানমন্ত্রীর পুত্র, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা, তস্যপুত্র এবং আরো এক ভ্রাতুষ্পুত্র সংসদে নির্বাচিত। রাজাপাকসের নতুন দল ‘পুদু জানা পেরামুনা’ বা ‘পিপলস ফ্রন্ট’ নির্বাচনে ‘ল্যান্ডস্লাইড’ বিজয় লাভ করেছে। দেখা গেছে, মাহিন্দ্র রাজাপাকসের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে দেশের দক্ষিণে, গ্রামাঞ্চলের সিংহলিদের মাঝে। অর্থনীতির স্থবিরতা ও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি জনগণকে বিদায়ী কোয়ালিশন সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার করেছে। তা ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সেন্ট্রাল ব্যাংক বন্ড কুখ্যাতিও কম নয়। প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা ২০১৫ সালে নির্বাচনে আসার সময় থেকে ভারত ও কিছু পশ্চিমা দেশের জোর সমর্থন পেয়েছেন। রাজাপাকসের বিপরীতে দাঁড়ানোয় এই সমর্থন বেশি কাজ করেছে বলে সবার ধারণা। ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাহিন্দ্র রাজাপাকসে পরাজিত হলে তিনি ঘোষণা দেন, কলম্বোতে ভারতের ‘র’ (জঅড) এজেন্ট পরিকল্পিতভাবে এই কাজ করেছে। নয়াদিল্লি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে এটা সত্য, বিদায়ী সরকারকে নয়াদিল্লি সর্বোচ্চ সহায়তা দিয়ে আসছে যাতে চীন দ্বীপদেশে প্রভাববলয় বাড়াতে না পারে। রাজাপাকসের উত্থানে দ্বীপের পররাষ্ট্র ও বৈশ্বিক রাজনীতি আবারো পরিবর্তিত হবে মনে করা হচ্ছে, ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোণঠাসা হয়ে পড়বে এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মৌলিক পরিবর্তন আসবে। আগের সরকার হিন্দু, তামিল, মুসলিম ও খ্রিষ্টান সংখ্যালঘুদের দূরে রেখে সিংহলি সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদের কাছে টেনে নেয়ার অভিযোগ ছিল।

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে শ্রীলঙ্কার অতি আগ্রহকে ভারতের ‘স্বার্থবিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দেখা যায়, এলটিটিইর বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনীর বিজয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দারা বড় ভূমিকা পালন করেছিল। আর ভারতের ‘র’ জাফনায় নেটওয়ার্ক পরিচালনায় সহায়তা করেছিল। তখন গোতাবায়া রাজাপাকসে প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন করছিলেন। মনে করা হয়, তার কারণে ভারতীয় বাহিনী এলটিটিই-পুশআপে সুবিধা করতে পারেনি। তামিলনাডু রাজাপাকসে পরিবারকে অপছন্দ করে থাকে। শ্রীলঙ্কার থিংক ট্যাঙ্করা বলছেন, ভারত চেয়েছে লঙ্কা তাদের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল থাকুক। একজন থিংক ট্যাঙ্ক, আদিলা নাউরিন এমন কথাও বলেছেন, উপমহাদেশে আইএস নেই; আফগানিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়ায়ও আইএস নেই। উপমহাদেশে আইএসের নামে যা করা হচ্ছে তা হলো ভারতের ‘র’ আর আফগানিস্তানের এনডিএসের যৌথ প্রকল্প। বলা হয়, ভারতের লক্ষ্য হলো, তালেবান ক্ষমতাকে ব্যালেন্সের ভেতর রাখা যাতে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের পর আফগান কর্তৃত্ব ভারতের হাতে পড়ে। শান্তিপ্রিয় শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ কেন আইএসের লড়াইয়ের ক্ষেত্র হবে, এতে কার কী লাভ, তা এখনই সুরাহা না হলে নানা অঘটন ঘটতে থাকবে। একটা বিষয় হিসেবে রাখা দরকার যে, গ্রাউন্ড উত্তপ্ত হলে বেল্ট ও রোডে চীনা পুঁজি বিনিয়োগ-খরচ বেড়ে যাবে এবং ‘ইনিশিয়েটিভ’ উৎসাহ হারাবে।

গোতাবায়া রাজাপাকসে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর শ্রীলঙ্কার ওপর ভারতের রাজনৈতিক প্রাধান্য কমে যায়। মিডিয়ায় বিষাদের বাঁশি বাজতে থাকে। এনডিটিভি, চ্যানেল ১৮ ইত্যাদি গোতাবায়ার একটি না একটি দোষ খুঁজে মিডিয়া সরগরম করতে থাকে। কিন্তু সেটি কোনো কাজ করেনি। এর একটি কারণ এই যে, রাজাপাকসের পরিবার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক পরিবার। গোতাবায়ার বড় ভাই মাহিন্দ্র রাজাপাকসে চার টার্ম ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির নেতা ছিলেন ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। তাদের তৃতীয় ভ্রাতা বাসিল রাজাপাকসে অর্থনৈতিক উন্নয়নের মন্ত্রী ছিলেন, চতুর্থ ভ্রাতা চামাল সংসদ সদস্য ও স্পিকার। রাজাপাকসে পরিবারের সদস্যরা ভারতঘেঁষা নয় আর এই পরিবার থেকেই প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় ভারত অখুশি। লঙ্কার সর্বজনকথিত আইএসের ইস্টার বোমা বর্ষণের ঘটনার পর দেশ শক্তিশালী একটি সরকার চেয়েছে, যে সরকার সন্ত্রাসের মূলোৎপাটন করতে পারবে। জনগণ দেখেছে, বোমাবর্ষণ ঘটার পরপর প্রেসিডেন্ট মাইত্রিপালা সিরিসেনা ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের মধ্যকার বাকযুদ্ধ কত দুর্বল ও সন্দেহজনক ছিল। এ বিষয়ে আমার লেখা ও নয়া দিগন্তে প্রকাশিত ‘শ্রীলঙ্কায় উগ্রবাদী বৌদ্ধদের উত্থান’ কলামটি দেখে নিতে পারেন।

ভারত চীনকে কাছে আসতে বাধা দিতে হাম্বানটোটা বন্দর চেয়েছে, শ্রীলঙ্কা সেটি প্রত্যাখ্যান করেছে। এলাকাটি বর্ধনশীল ও উন্নয়নমুখী। এখানে উর্বর ভূমি এবং বিস্ময়কর সেচ নেটওয়ার্ক রয়েছে। তা ছাড়া মাহিন্দ্র রাজাপাকসের সাথে হাম্বানটোটার নাড়ির সম্পর্ক। নির্বাচনের আগে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে দ্বিপক্ষীয় বিষয়াদি আলোচিত হয়। নির্বাচনী এক জনসভায় মাহিন্দ্র জানান, ‘ভারতের কাছে লঙ্কার মাত্তালা বিমানবন্দর লিজ দেয়া হবে না’। তিনি আরো বলেন, ‘মাত্তালা বিমানবন্দর আমার নিজ বাড়ির ধারে। এটা লিজ দিতে পারি না। সাক্ষাতের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রীকেও এটা বলেছি’। ২০১০-১৫ সালে রাজাপাকসে সরকারের আমলে ২১০ মিলিয়ন চীনের ঋণে তৈরি করা হয়েছিল। এর আগের সরকার ভারতের সাথে যৌথভাবে বিমানবন্দরটি উন্নয়নের পরিকল্পনা করেছিল। পাকিস্তানের গোয়াদর ও লঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর ‘সিস্টার পোর্ট হিসেবে উভয় দেশের বাণিজ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ রক্ষা করতে পারে। এই সংযোগ ভারতের নিরাপত্তা ও বাণিজ্যের প্রতিকূলে বিধায় দিল্লি বিরোধিতা করছে। এ দিকে গোতাবায়া পাকিস্তানকে পরীক্ষিত বন্ধু মনে করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের সাথে যেসব দেশের বিরোধ রয়েছে তাদের থেকে দূরে সরে থাকতে চাইছে শ্রীলঙ্কা। এ দিকে ভারতের সাথে চুক্তি বাতিলের আভাস দিয়েছেন রাজাপাকসে। বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সচিব সুমনারতœা বলেন, ‘ভারতের কাছ থেকে চাপ আসছে। কিন্তু আমরা ভারতের কোনো প্রদেশ নই। আমরা স্বাধীন দেশ, তাদের কথা মানতেই হবে এমন কিছু নেই।’

ইস্ট কনটেইনার টার্মিনাল (ইসিটি) উন্নয়নে শ্রীলঙ্কার অংশ ৫১ শতাংশ এবং ভারত ও জাপানের ৪৯ শতাংশ। শ্রীলঙ্কার বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের আশঙ্কা, ইসিটির মালিকানা ভারতের হাতে চলে যেতে পারে। তাই তারা টার্মিনালটি শ্রীলঙ্কার বন্দর কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করবে- এমন গ্যারান্টি চায়। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ্র রাজাপাকসে ভারতের সাথে ‘চূড়ান্ত কোনো চুক্তি হবে না’ বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

ভারত মহাসাগরে চীন ও ভারত প্রতিযোগিতা করছে নিরাপত্তাবলয় ও শ্রীলঙ্কার সাথে সামরিক সম্পর্ক বাড়াতে। ১৯৫০ থেকে চীন শ্রীলঙ্কায় বড় অস্ত্র সরবরাহকারী। চালানে ছোট অস্ত্র থেকে ল্যান্ড মাইন, নেভি ভেসেল ও এয়ারক্রাফট পর্যন্ত রয়েছে। গৃহযুদ্ধের সময় চীনাদের সহায়তা বিভিন্ন ফর্মে এসেছে। ২০০৭ সালে মাহিন্দ্র রাজাপাকসের চীন সফরে ৩৭.৬ মিলিয়ন অস্ত্র কেনার চুক্তি হয়েছিল যেখানে চীনা জিয়ান-৭ ফাইটার জেট, বিমানবিধ্বংসী কামান, এয়ার সার্ভিল্যান্স রাডার, কেরিয়ার ইত্যাদি ছিল। ২০১২ সালে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর লঙ্কা সফরের সময় ‘গ্রান্ট’ হিসেবে ১০০ মিলিয়ন সেনা ক্যাম্প তৈরির জন্য দেয়া হয়, শ্রীলঙ্কার সেনা অফিসারদের প্রশিক্ষণের জন্য চীনা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উত্তরোত্তর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত চীন-শ্রীলঙ্কা সামরিক ও আর্থিক সহযোগিতা ভারতের জন্য খুবই উদ্বেগের বিষয়। বন্দরনগরী ত্রিঙ্কোমালিতে চীনারা এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ফ্যাসিলিটিও তৈরি করছে। সেটিও ভারতের সমরবিদরা ভালো চোখে দেখছেন না।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ও শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট জয়াবর্ধনে ১৯৮৭ সালের ২৯ জুলাই কলম্বোতে ইন্দো-লঙ্কা চুক্তি করেছিলেন। মুসলমানরা শুরু থেকে এর বিরোধিতা করে আসছিল। শ্রীলঙ্কা মুসলিম কংগ্রেস (এসএলএমসি) নেতা রউফ হাকিম বলেছেন, ইন্দো-লঙ্কা চুক্তি শ্রীলঙ্কার মুসলমানদের জন্য একটি প্রতারণা। এই কারণে পূর্বাঞ্চলের মুসলমানরা রাজনৈতিক শক্তি হারিয়েছে। চুক্তির ফলে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলকে একীভূত করা হয়। মনে করা হয়েছিল, চুক্তির ফলে দেশে গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটবে, কিন্তু তা হয়নি।
সিটিজেনশিপ সংশোধন অ্যাক্ট-২০১৯ এ অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। আইনের সমতার পরিবর্তে সংঘর্ষ অনেক জায়গায়। এটি ভারতের সেকুলার চরিত্র হরণ করেছে বলে ধরা হয়। ১৪ নম্বর আর্টিকেল অনুসারে ধর্মকে বৈষম্যের ভিত্তি ধরা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর অভিবাসীদের নাগরিকত্ব প্রদানকে অনুৎসাহিত করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কাও এমন একটি দেশ। সে দেশের হিন্দু ও খ্রিষ্টানরা ভারতে নাগরিকত্ব পাবেন- এমন কোনো আকর্ষণীয় বিষয় নেই। দক্ষিণের অভিবাসীরা ভারতে সুযোগ-সুবিধা পাবেন না, অপর দিকে উত্তরের অভিবাসীদের তা দেয়া হবে। ফলে সিএএ এলাকাভিত্তিক ও ধর্মভিত্তিক বিভাজনের বিষয়কে উসকে দিয়েছে এবং শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার ও নেপালের অভিবাসীদের বাদ দিয়েছে। দক্ষিণ ভারতে এক লাখের বেশি শ্রীলঙ্কার উদ্বাস্তু বসবাস করছে। ২০০৯ সালে যুদ্ধ শেষ হলেও সেখানে ফিরে যাওয়া খুব ধীর গতির। রাজাপাকসে বিষয়টিকে ত্বরান্বিত করতে চান না।

ভারতের সিএএর কারণে লঙ্কার উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব প্রদান না করায় শ্রীলঙ্কার এক লাখ মানুষকে ফেরত আনার প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিয়েছে। সিএএর একটি উদ্দেশ্য হলো নির্যাতিত হিন্দু, পার্সি, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন ও খ্রিষ্টান যারা ভারতে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে মুসলিম প্রধান দেশ আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে এসেছে তাদের নাগরিকত্ব দেয়া। দক্ষিণের তামিলনাডুতে ৬০ হাজার হিন্দু ও খ্রিষ্টান উদ্বাস্তু শিবিরে রয়েছে, তাদের পূর্বপুরুষরাও ভারতে জন্ম নিয়েছে। ২৫ হাজার ছেলেমেয়ে শিবিরে জন্ম নিয়েছে। তারা ভারত ছাড়া অন্য দেশের কথা জানে না। আরব ব্যবসায়ীরা দ্বীপদেশে বসবাস শুরু করেন, আজ তারা তৃতীয় বৃহৎ নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী। তাদের শ্রীলঙ্কার ‘মুর’ও বলা হয়।

নাগরিকত্বের বিষয়টি শ্রীলঙ্কায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সাউথ ইন্ডিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্রিটিশ আমলে তামিলদের শ্রীলঙ্কায় আনা হয় চা বাগানে কাজ করার জন্য। তারা স্থানীয় তামিলদের চেয়ে পৃথক। বিভিন্ন চাকরি ও ব্যবসা উপলক্ষে বহু তামিল শ্রীলঙ্কায় বহু বছর ধরে বসবাস করছে তাদেরও পৃথক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তামিলদের শ্রীলঙ্কায় বিশেষ রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। তামিলদের নাগরিকত্বের বিষয় নিয়ে শ্রীলঙ্কা বেশি
নাড়াচাড়া করেনি। এলিটরা চাননি তামিলদের পাইকারি হারে নাগরিকত্ব দিতে। এটাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, নাগরিকত্বের বিষয়টি নিয়ে বেশি চাপাচাপি করলে ভারতের বিরোধী শিবির থেকে আওয়াজ আসবে এবং ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতা পাওয়া অহেতুক দেরি হয়ে যাবে। এটি নিয়ে এখন ভারত-শ্রীলঙ্কা বিরোধ চলছে। তামিল কমিউনিটিতে রাষ্ট্রবিহীনতা মারাত্মক সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। আইন পরিবর্তন করে বিষয়টি সুরাহা করার পক্ষে অনেকে মত প্রকাশ করেন। কিন্তু বিষয়টি সেভাবে মীমাংসিত হয়নি। ভারত থেকে এক লাখ উদ্বাস্তু গ্রহণেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভারতও সে দেশে নাগরিকত্ব দেয়া দুরাশায় পরিণত হয়েছে।

১৩ আগস্টের আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে, ‘ভারতের পক্ষে এই নির্বাচনী ফলাফল উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। রাজাপাকসে চীনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত, তার আমলে শ্রীলঙ্কায় চীনের অর্থনৈতিক বিনিয়োগ বিপুলভাবে বেড়েছে। চীন-ভারত সাম্প্রতিক বিরোধের নতুন পরিবেশে, রাজাপাকসের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দিল্লির নীতিনির্ধারকদের চিন্তিত করেছে। নরেন্দ্র মোদি রাজাপাকসেকে কতটুকু মোকাবেলা করতে পারেন, তা হিসাবের বিষয়। সেই সাথে আছে তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক জটিলতা। মোদির প্রয়োজন সূক্ষ্ম ও কুশলী কূটনীতির। আনন্দবাজার পত্রিকায় বলা হয়েছে. ‘প্রতিবেশীদের সহিত কূটনৈতিক আদান-প্রদানে মোদি সরকারের রেকর্ড আশাব্যঞ্জক নয়।’

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us