শেষ নবীর (সা.) কয়েকটি ভবিষ্যদ্বাণী
মদিনা শরিফ - ছবি : সংগৃহীত
বৈজ্ঞানিক ভবিষ্যদ্বাণী ছাড়া অন্য ভবিষ্যদ্বাণীর যৌক্তিক বা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। এ ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী ফলপ্রসূ হওয়ার কার্যকারণ একটি : মহান স্রষ্টা তার সৃষ্টির মধ্যে এমন কোনো সুযোগ রেখেছেন কেবল যার ফলে এটি সম্ভব হচ্ছে। মানুষ যেমন নতুন করে কিছু বানাতে বা ধ্বংস করতে সক্ষম নয় তেমনি প্রকৃতির কোনো নিয়ম পাল্টাতে একেবারেই অক্ষম। বর্ণিত আছে, স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় মানুষ শুধু প্রকৃতির ইচ্ছার কাছে (ইসলামের অর্থ আল্লাহর ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ) মাথানত করতে বাধ্য। মহাবিশ্বের সব কিছুই আত্মসমর্পিত হয়ে একটি নির্ধারিত নিয়মরীতি অনুসরণ করছে এবং সেভাবেই চলছে। নির্ধারিত নিয়মে মহাবিশ্বের সবই আবর্তিত হচ্ছে- এর অর্থ দাঁড়ায়, এ সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বাণী যুক্তিসম্মত। তবে এ কথা বা বিষয়টি স্পষ্ট, কোনো ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী হলে সেটি ফলপ্রসূ হওয়ার পরই এটি আমাদের বিশেষ নজরে পড়ে। শেষ জামানা সম্পর্কে শেষ নবী সা:-এর অনেক ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে। সময় যতই এগিয়ে যাচ্ছে এসবের আলামতও ধারাবাহিকভাবে ঘটতে দেখা যাচ্ছে।
১. সময় খুব দ্রুত বয়ে যাবে (বুখারি, মুসলিম ও আহমাদ)।
এ কথাটির অর্থ ও তাৎপর্য হচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন ও সামাজিক জীবনে কর্মব্যস্ততার পরিধি এত বেড়ে যাবে যে, মনে হবে, সময় যেন দ্রুত চলে যাচ্ছে। আগের মানুষের গড় আয়ু অনেক কম হলেও জীবনের সময়কে তারা উপভোগ করে ধীরে ধীরে ব্যবহার করেছে। আধুনিক জীবনযাত্রায় গড় আয়ু অনেক বৃদ্ধি পেলেও সময়ের সাথে প্রতিযোগিতায় মানুষ দিশেহারা। প্রতিদিনের রুটিন কাজের মধ্যে রয়েছে হরেক রকমের বাড়তি কাজ। প্রতিদিনের কাজ যেন বেড়েই চলছে। ফলে প্রত্যেকেরই মনে হয়, যেন সময় হু হু করে চলে যাচ্ছে যেটি অতীতকালে অনুভূত হয়নি। সম্প্রতি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত একটি বক্তব্য দেখলে মনে হবে যেন, তা আমাদের সবারই অনুভূতির প্রতিধ্বনি।
জনৈক চিন্তাবিদ লিখেছেন : ‘দিনগুলো যেন খুব তাড়াতাড়ি ফুরাচ্ছে আজকাল। বছরগুলোও চোখের পলকে চলে যাচ্ছে। এই সে দিন গেল জন্মদিন, এখনো চুপসানো বেলুন দেয়ালে ঝুলে আছে; আর এখনই কি না আরেক জন্মদিন চলে এলো। আগে দিন ফুরাতো না। ক্লাস সিক্স থেকে সেভেনে উঠব; তখন কবে উঠব কবে উঠব করি, দিন যায়, মাস যায় কিন্তু বছর তবু যায় না।’ সময় যে পাল্লা দিয়ে দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে এই অনুভূতিটি সবার ভেতরেই প্রবলভাবে কাজ করছে। ভাবতে অবাক লাগে, এ ভবিষ্যদ্বাণীটি কত আগে দেয়া হয়েছিল।
২. দাসী প্রভুর জন্ম দেবে : অর্থাৎ সন্তানরা মায়ের সাথে ক্রীতদাসীর মতো আচরণ করবে।
পৃথিবীর সব দেশে এমনকি উন্নত বিশ্বেও, সন্তানদের এই প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি জাতীয় টিভির অনুষ্ঠানে সে সমাজেও এমনটি ঘটছে- সে বিষয়টির ওপর পরোক্ষভাবে আলোকপাত করতে দেখেছি।
৩. মসজিদগুলো ভীষণভাবে সুসজ্জিত হবে।
আজকাল মসজিদের নিছক সাজসজ্জার প্রতি নজর মাত্রাতিরিক্ত।
৪. সম্পদের প্রাচুর্য এতটাই বৃদ্ধি পাবে যে, জাকাত নেয়ার মতো লোক খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হবে।
যখন লোকেরা বড় বড় দালান তৈরি করতে একে-অপরের সাথে প্রতিযোগিতায় লেগে যাবে। ‘যখন দেখবে, মরুভূমির রাখালরা বড় বড় অট্টালিকা তৈরির প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে গেছে।’ বিশ্বের সব দেশেই এখন সম্পদের প্রাচুর্য চোখ ধাঁধিয়ে দেয়।
৫. আল্লাহর রাসূল সা: বলেছেন, ‘কেয়ামতের আগে যখন যেনা ও নগ্নতা বেড়ে যাবে, তখন উদ্ভট রোগ আসবে তাদের ওপর, যে রোগের নাম তাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি।’
বর্তমানে করোনা ছাড়াও অনেক ধরনের রোগের বিস্তার কিন্তু ধারাবাহিকভাবে বেড়েই চলছে।
লেখক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক