বিয়ে করাও ইবাদত, যদি...
বিয়ে করাও ইবাদত, যদি... - ছবি : সংগৃহীত
আনাস ইবনু মালিক রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, তিনজনের একটি দল নবী সা:-এর ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য নবী সা:-এর স্ত্রীদের বাড়িতে এলো। যখন তাদের এ সম্পর্কে জানানো হলো, তখন তারা ইবাদতের পরিমাণ কম মনে করলেন এবং বললেন, নবী সা:-এর সাথে আমাদের তুলনা হতে পারে না। কারণ, তাঁর আগের ও পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। এমন সময় তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি সারা জীবন রাতভর সালাত আদায় করতে থাকব। অপর একজন বলল, আমি সবসময় সাওম পালন করব এবং কখনো বাদ দেবো না। অপরজন বলল, আমি নারী সংসর্গ ত্যাগ করব, কখনো বিয়ে করব না।
এরপর রাসূলুল্লাহ সা: তাদের কাছে এলেন এবং বললেন, ‘তোমরা কি ওইসব লোক যারা এমন এমন কথাবার্তা বলেছ? আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি এবং তোমাদের চেয়ে তাঁর প্রতি বেশি অনুগত; অথচ আমি সাওম পালন করি, আবার তা থেকে বিরতও থাকি। সালাত আদায় করি এবং নিদ্রা যাই ও মেয়েদেরকে বিয়েও করি (ইসলামে সালাত, সাওমের পাশাপাশি ঘুমানো, বিয়ে করা, বাণিজ্য করা ইত্যাদিও ‘ইবাদতের মধ্যে গণ্য যদি তা সাওয়াবের আশায় এবং সঠিক নিয়মানুসারে পালন করা হয়)। সুতরাং যারা আমার সুন্নতের প্রতি বিরাগ পোষণ করবে, তারা আমার দলভুক্ত নয়’ (সহিহ বুখারি : ৫০৬৩)।
হালাল ও হারাম সুস্পষ্ট
নু’মান ইবনু বাশীর রা: থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, নবী সা: বলেছেন, হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট, উভয়ের মাঝে বহু অস্পষ্ট বিষয় রয়েছে। যে ব্যক্তি গুনাহের সন্দেহযুক্ত কাজ পরিত্যাগ করে, সে ব্যক্তি যে বিষয়ে গুনাহ হওয়া সুস্পষ্ট, সে বিষয়ে অধিকতর পরিত্যাগকারী হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি গুনাহের সন্দেহযুক্ত কাজ করতে দুঃসাহস করে, সে ব্যক্তির সুস্পষ্ট গুনাহের কাজে পতিত হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। গুনাহসমূহ আল্লাহর সংরক্ষিত এলাকা, যে জানোয়ার সংরক্ষিত এলাকার চার পাশে চরতে থাকে, তার ওই সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
(সহিহ বুখারি : ২০৫১)
ঋণ পরিশোধ করার গুরুত্ব
সালামা ইবনু আকওয়া রা: থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, একদিন আমরা নবী সা:-এর কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় একটি নামাজে জানাজা উপস্থিত করা হলো। সাহাবিরা বললেন, আপনি তার জানাজার সালাত আদায় করে দিন। নবী সা: বললেন, তার কি কোনো ঋণ আছে? তারা বলল, না।
তিনি বললেন, সে কি কিছু রেখে গেছে? তারা বলল, না। তখন তিনি জানাজার সালাত আদায় করলেন। তারপর আরেকটি জানাজা উপস্থিত করা হলো। সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি জানাজার সালাত আদায় করে দিন। তিনি বললেন, তার কি কোনো ঋণ আছে? বলা হলো, হ্যাঁ, আছে। তিনি বললেন, সে কি কিছু রেখে গেছে? তারা বললেন, তিনটি দিনার। তখন তিনি তার জানাজার সালাত আদায় করলেন। তারপর তৃতীয় আরেকটি জানাজা উপস্থিত করা হলো। সাহাবিরা বললেন, আপনি তার জানাজা আদায় করুন। তিনি বলেন, সে কি কিছু রেখে গেছে। তারা বললেন, না। তিনি বললেন, তার কি কোনো ঋণ আছে। তারা বললেন, তিন দিনার। তিনি বললেন, তোমাদের এ লোকটির সালাত তোমরাই আদায় করে নাও। আবু কাতাদা রা: বললেন, হে আল্লাহর রাসূল সা:! তার জানাজার সালাত আদায় করুন, তার ঋণের জন্য আমি দায়ী। তখন তিনি তার জানাজার সালাত আদায় করলেন।
(বুখারি : ২২৮৯)