কী হতে যাচ্ছে আফগানিস্তানে?

আহমদ মোহিবি | Aug 11, 2020 08:50 am
কী হতে যাচ্ছে আফগানিস্তানে?

কী হতে যাচ্ছে আফগানিস্তানে? - ছবি : সংগৃহীত

 

আফগান লয়া জিরগা (মহা সম্মেলন) রোববার ৪০০ তালেবান বন্দীকে মুক্তির বিষয়টি অনুমোদন করেছে এবং প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি সিদ্ধান্তটি মেনে নিয়েছেন। এতে ১৯ বছর ধরে চলা যুদ্ধ সমাপ্তির লক্ষ্যে আফগান প্রতিনিধি ও তালেবান বিদ্রোহীদের মধ্যে আন্তঃআফগান আলোচনার পথ খুলে গেল বলে আশা করা হচ্ছে।
আফগান আলোচক দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য খালিদ নূর বলেন, আমি আন্তঃআফগান সংলাপের অপেক্ষায় আছি। আমি বিশ্বাস করি, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তা হতে যাচ্ছে।
সোমবার তালেবান ও আফগান সরকার আন্তঃআফগান সংলাপ শুরুর তারিখ হিসেবে ১৬ আগস্ট মেনে নেয়। আফগান আলোচক দলের ২১ সদস্যের নেতৃত্বে থাকছেন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা দফতরের প্রধান মাসুম স্ট্যানিকজাই। তালেবান বন্দীদের মুক্তি দেয়ার পর মঙ্গলবারই তারা দোহায় রওনা হয়ে যেতে পারে।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান শান্তিচুক্তির আলোকে ৫০০০ বন্দীকে মুক্তি দেয়ার কথা ছিল। এই ৪০০ হলেন তাদের শেষ ব্যাচ। নানা কারণে আফগান সরকার তাদের মুক্তি দিতে দ্বিধায় ছিল।

বন্দীদের মধ্যে খুন, অপহরণের অভিযোগে আটক ব্যক্তিও আছেন। আবার ইতোমধ্যেই মুক্তি পাওয়া বন্দীদের অনেকে সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অংশ নিতে শুরু করেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ এই বন্দী মুক্তিকে বলেছেন, জীবন-মৃত্যুর সমস্যা হিসেবে।

ফলে ৩৪টি প্রদেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে লয়া জিরগা আহ্বান করা হয় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে।
এর পর কী ঘটবে, তা নিশ্চিত নয়। তালেবান কি সহিংসতা হ্রাস করার প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে? তারা কি আফগান আলোচকদের সাথে যোগ দেবে? নাকি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এসব কমান্ডারের মুক্তির ফলে তারা তাদের অভিযান বাড়িয়ে দেবে?

তবে এখন আফগানিস্তানের রাজনৈতিক সমাজ, নাগরিক সমাজ, সংবাদমাধ্যম, সাধারণ নাগরিক সবাই আন্তঃআফগান আলোচনার পক্ষে থাকায় পরিবেশ বেশ অনুকূলে। তালেবানের সাথে দুই দশকের যুদ্ধে ক্ষত, কষ্ট, ধ্বংস আর বিপর্যয় ছাড়া আর কিছুই বাকি নেই। বিশ্ব এখন শান্তি আলোচনা, রাজনৈতিক নিষ্পত্তির প্রতি জোরাল অবস্থান গ্রহণ করেছে।
সবকিছু ঠিকমতো চললে আফগান আলোচকদের একটি ছোট দল দোহায় তালেবান রাজনৈতিক অফিসে সভায় বসবে পূর্ণাঙ্গ দল প্রস্তুত করতে। আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর দিনক্ষণও নির্ধারণ করা হবে এতে।
আলোচনায় মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার, সরকার পরিবর্তন (এটি আমিরাত, প্রজাতন্ত্র না দুটির মিশেলে কিছু হবে) ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে। তাছাড়া আফগান সংবিধান, আইন প্রয়োগে সংশোধনী ও আইনগত বিষয়াদিও স্থান পাবে।

এছাড়া তালেবানকে নিরস্ত্রীকরণ, তাদের ভেঙে দেয়া, তাদের ৪০-৬০ হাজার যোদ্ধার ভাগ্য নিয়েও আলোচনা হবে। তালেবান যোদ্ধারা কি আফগান বাহিনী বা অন্যান্য সংস্থায় যোগ দেবে, না তারা অন্য কোনোভাবে থাকবে, তাও আলোচিত হবে।
শান্তি আলোচনা সফল হলে যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তি অনুযায়ী নতুন সরকার গঠিত হবে। আর তাতে সহিংসতামুক্ত আফগানিস্তানের সূচনা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হচ্ছে। সম্ভবত তালেবান, আফগান সরকারের টেকনোক্র্যাট, বিরোধী দল, প্রখ্যাত মুজাহিদ নেতাদের নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হবে।সবকিছু ঠিক থাকলে আধা প্রেসিডেন্ট ও আধা পার্লামেন্টারি পদ্ধতির সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। অনেকে ফরাসি ধরনের সরকার পদ্ধতির কথাও বলছেন। এতে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী- উভয়ের নির্ধারিত দায়িত্ব রয়েছে।

দি ডিপ্লোমেট

 

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us