ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ
ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ - ছবি : সংগৃহীত
সাগরের রুপালি ইলিশে সয়লাব খুলনার হাটবাজার। বাজারে তো বটেই ভ্যানে করে বিভিন্ন অলিতে গলিতেও ফেরি করে বিক্রি হচ্ছে জাতীয় মাছ ইলিশ। আর দামে সস্তা হওয়ায় সাধারণ মানুষও ইলিশের স্বাদ নিতে পারছেন। তবে সাগরের ইলিশের স্বাদ কম হওয়ায় সন্তুষ্ট নন অনেকে।
এখন অগভীর সমুদ্র, আন্ধারমানিক মোহনা, রামনাবাত মোহনা ও বুড়ো গৌরাঙ্গ মোহনায় ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। এছাড়া বরিশালের বিভিন্ন নদ-নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে। এসব মাছ জেলেরা সাগর থেকে ট্রলারে করে খুলনার বিভিন্ন মৎস্য ঘাটে আনছেন। আবার কেউ কেউ ট্রাকে করে খুলনার পাইকারি মৎস্য আড়তেও এ মাছ নিয়ে আসছেন।
সবচেয়ে বেশি মাছ আসছে খুলনার সবচেয়ে বড় ইলিশের পাইকারি বাজার কেসিসি (খুলনা সিটি করপোরেশন) রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তে। এ আড়ৎ এখন শ্রমিকদের ব্যস্ততা, ক্রেতাদের ভিড় ও আড়তদারদের হাসিমুখে মুখরিত। রূপসার ঘাটে নোঙর করা ট্রলারগুলোর খোল ভরে আছে রুপালি ইলিশে।
আড়তদাররা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরে বঙ্গোপসাগরে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। ইলিশ সাগরের লোনা পানির মাছ। ডিম ছাড়ার সময় হলে তারা দল বেঁধে নদীতে আসে। ডিম ছেড়ে আবার সাগরে ফিরে যায়। বর্ষা মৌসুমে নদীতে ডিম ছাড়তে এসে জেলেদের জালে ধারা পড়ে এসব ইলিশ। কিন্তু এ বছর অসংখ্য ডুবো চরের বাধা পেয়ে নদীতে আসতে পারেনি ইলিশ। সাগর মোহনায় ঘোরাফেরা করে সাগরেই ফিরে গেছে এসব ইলিশ। তাই নদীতে কম ইলিশ পাওয়া গেলেও সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে সাগরে ধরা পড়া এসব ইলিশের আকার একটু ছোট।
রূপসার নতুন বাজারের খুচরা বিক্রেতা মেহেদী বলেন, ‘বাজারে প্রচুর ইলিশ আসছে। এ কারণে দামও কমে গেছে। আগে যে ইলিশের কেজি ১২০০-১৩০০ টাকা ছিল, তা এখন ৯০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ক্রেতারা চান আরও কমে।’
কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তের মেসার্স মদিনা ফিস ট্রেডার্সের পরিচালক মো. আবু মুসা বলেন, আড়তে আগের তুলনায় অনেক ইলিশ আসছে, দামও কম। তবে নদীর ইলিশের পরিবর্তে সাগরের মাছ বেশি আসছে।
তিনি জানান, সাগরের ৩০০-৪০০ গ্রামের ইলিশের এক কেজির দাম ৩০০-৩৫০ টাকা। ৫০০ গ্রামের এক কেজির দাম ৪০০-৪৫০ টাকা। এক কেজির একেকটি ইলিশের দাম ৭০০-৮০০ টাকা।
অপরদিকে, নদীর ইলিশের ৩০০-৪০০ গ্রাম সাইজের এক কেজির দাম ৩৫০-৪৫০ টাকা। ৫০০ গ্রাম সাইজের এক কেজির দাম ৪৫০-৫৫০ টাকা। এক কেজি সাইজের ৮০০-৯০০ টাকা। সাগরের তুলনায় নদীর ইলিশের স্বাদ বেশি হওয়ায় দামও কিছুটা বেশি থাকে, যোগ করেন তিনি।
মহানগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আশেক বলেন, ‘কোরবানির ঈদের পর থেকে বেশি মাছ আসছে। এখনকার মাছগুলো সাগরের। আকারে কিছুটা ছোট। তবে নদীর মাছও আসছে।’
ফিশিং বোটে করে প্রতিদিন অনেক মাছ আসছে খুলনার বাজারে। দাম কিছুটা কম থাকায় খুশি ক্রেতারাও। সামনে মাছের দাম আরও কমে যাবে।
বাজারে প্রচুর ইলিশ আসায় দাম কিছুটা কমে যাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করে রফিক নামের এক ক্রেতা বলেন, ইলিশে সয়লাব বাজার। যে কারণে দামও এখন নিম্নমুখী। এতে সাধারণ মানুষ ইলিশ খেতে পারছেন।
সূত্র : ইউএনবি